Fire Accident

ঘণ্টায় ১০ কিমি বেগে হাওয়াই কি ‘অনুঘটক’?

ওই সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, গত সোমবার নিউ কয়লাঘাট ভবনে আগুন লাগার সময়ে

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২১ ০৬:১৮
Share:

ফাইল চিত্র।

তুলনামূলক ভাবে বছরের যে সময়ে শহরে বাতাসের গতিবেগ কম থাকে, সেই সময়েই স্ট্র্যান্ড রোডের নিউ কয়লাঘাট ভবনে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। তাতেই আগুনের এই তীব্রতা। তাই গঙ্গার দিক থেকে আসা হাওয়া সে দিন ওই আগুন ছড়িয়ে পড়ার ক্ষেত্রে ‘অনুঘটক’-এর কাজ করেছে বলে মনে করছেন অনেকে।

Advertisement

সারা বিশ্বে প্রায় দেড় লক্ষ এলাকার স্থানীয় আবহাওয়ার তথ্য সংগ্রহ করে থাকে এমন একটি আন্তর্জাতিক বেসরকারি সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, ২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ মার্চ— এই ছ’-সাত মাস কলকাতায় হাওয়ার গতিবেগ কম থাকে। তখন হাওয়ার গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় মাত্র ৯-১০ কিলোমিটার।

ওই সংস্থার রিপোর্ট অনুযায়ী, গত সোমবার নিউ কয়লাঘাট ভবনে আগুন লাগার সময়ে, অর্থাৎ সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ শহরে ঘণ্টায় প্রায় ১০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইছিল। যদিও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাটমস্ফেরিক সায়েন্সেস বিভাগের অধ্যাপক সুব্রতকুমার মিদ্যা বলছেন, ‘‘সংশ্লিষ্ট ভবনের যে উচ্চতায় আগুন লেগেছে, সেখানে বাতাসের গতি তুলনামূলক ভাবে বেশি থাকার কথা।’’

Advertisement

ওই বেসরকারি সংস্থার রিপোর্ট বলছে, শহরে হাওয়ার বেগ অপেক্ষাকৃত বেশি থাকে ২৬ মার্চ থেকে ১ সেপ্টেম্বর, যখন গতিবেগ থাকে ঘণ্টায় প্রায় ১২ কিলোমিটার। এখন শহরে অতীতের বড় বড় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাবলীর দিকে লক্ষ করলে দেখা যাবে যে, তার সিংহভাগই ঘটেছে ২ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ মার্চের মধ্যে। তা সে ২০০৮ সালের ১২ই জানুয়ারি নন্দরাম মার্কেট, ২০১০ সালের ২৩ মার্চ স্টিফেন কোর্ট, ২০১১ সালের ৯ ডিসেম্বর আমরি হাসপাতাল, ২০১৩ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি সূর্য সেন মার্কেট এবং ২০১৮ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর বাগড়ি মার্কেটের অগ্নিকাণ্ড— যেটাই হোক না কেন! এক বিশেষজ্ঞের কথায়, ‘‘তবে সব ক্ষেত্রে হাওয়ার গতি আগুন ছড়ানোর ক্ষেত্রে অনুঘটকের কাজ করেছে, তা একেবারেই বলা যাবে না। কারণ শহরের মধ্যে বদ্ধ জায়গায় হাওয়ার গতি তুলনামূলক ভাবে কম থাকে।’’

আলিপুর আবহাওয়া দফতরের কর্তাদের একাংশের অবশ্য বক্তব্য, আগুনের তীব্রতার সঙ্গে যে ভাবে গঙ্গার দিক থেকে আসা হাওয়ার তত্ত্বকে যুক্ত করা হচ্ছে, তা অতি সরলীকরণ করা হয়ে যাচ্ছে। কারণ শুধু গঙ্গা কেন, যে কোনও খোলা জায়গাতেই এমন অগ্নিকাণ্ড হলে একই তীব্রতায় আগুন ছড়িয়ে পড়ত। দফতরের ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল (পূর্বাঞ্চল) সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় জানাচ্ছেন, খোলা জায়গায় হাওয়ার গতি স্বাভাবিক ভাবেই বেশি থাকে। যেখানে পাশাপাশি একাধিক বহুতল রয়েছে, সেখানে বাতাসের গতিবেগ কম হবে। তাঁর কথায়, ‘‘তা ছাড়া আমাদের হাওয়ার গতি মাপার যন্ত্র রয়েছে আলিপুর, দমদম ও সল্টলেকে। ফলে সে দিন ওই এলাকায় হাওয়ার গতিবেগ কত ছিল, সে সংক্রান্ত কোনও তথ্য আমাদের কাছে নেই।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement