—ফাইল চিত্র
দিল্লির তুলনায় কলকাতার বায়ুদূষণ সূচক (এয়ার কোয়ালিটি ইন্ডেক্স) অনেক বেশি বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় পরিবেশমন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর। শুক্রবার বণিকসভা ‘মার্চেন্টস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি’র এক ভার্চুয়াল আলোচনাসভায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জানান, শুধু দিল্লিই নয়, বেঙ্গালুরু এবং চেন্নাইয়ের মতো মেট্রো শহরগুলির চেয়েও কলকাতার বায়ুদূষণের মাত্রা অনেক বেশি।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেছেন, এ দিন কলকাতার বায়ুদূষণ সূচক ছিল ৩০৯। যেখানে দিল্লিতে এই মাত্রা ছিল ২৫০, বেঙ্গালুরুতে ৬১ এবং চেন্নাইয়ে ৪৭। মন্ত্রী জানান, জনসংখ্যা, যানবাহনের সংখ্যা এবং শিল্পের সংখ্যার দিক থেকে এই চার মেট্রো শহর কাছাকাছি জায়গায় রয়েছে। কোনও কোনও শহরে শিল্প সংক্রান্ত কার্যকলাপ তুলনায় কিছুটা বেশি হলেও সেখানকার বাতাসে দূষণের মাত্রা কম। বস্তুত, গাঙ্গেয় সমতল এলাকায় পলিমাটি থাকার কারণে সেখানে ধূলিকণার মাত্রা বেশি। অন্য দিকে, দক্ষিণ ভারতের বিভিন্ন এলাকার মাটি এবং হাওয়ার চরিত্র আলাদা হওয়ায় সেখানকার বাতাসে ধূলিকণার মাত্রা তুলনায় কম থাকে।
প্রাকৃতিক ভাবে বাতাসের চরিত্র এমন হলেও প্রশাসনিক স্তর থেকে দূষণের মাত্রা কমানোর ব্যাপারে ভাবনাচিন্তার বিস্তর অবকাশ রয়েছে বলেও দাবি করেছেন জাভড়েকর। দিল্লির বায়ুদূষণ নিয়ে যেখানে পরিবেশবিদেরা এতটা উদ্বিগ্ন, সেখানে মন্ত্রীর দেওয়া এ দিনের তথ্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকেরা।
এই তথ্য দেওয়ার পাশাপাশি বৈদ্যুতিক গাড়ি ব্যবহারের পক্ষেও এ দিন ফের সওয়াল করেন মন্ত্রী। তাঁর দাবি, এই ধরনের গাড়ির ব্যবহার বাড়িয়ে দূষণের মাত্রা কমানো সম্ভব। কিন্তু বৈদ্যুতিক গাড়ির দাম এখনও বেশি বলে তা কেনার ব্যাপারে মানুষের ততটা আগ্রহ দেখা যায় না। তবে চাহিদা বাড়লে এই ধরনের গাড়ির দামও ক্রমশ কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
বৈদ্যুতিক গাড়ির জন্য চার্জিং স্টেশন তৈরির পাশাপাশি ব্যাটারি বদলের ব্যবস্থাও চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী। তাঁর ব্যাখ্যা, তাড়াহুড়োয় কারও কাছে যদি গাড়ির ব্যাটারিতে চার্জ দেওয়ার সময় না থাকে, তা হলে তিনি আগে থেকে চার্জ দিয়ে রাখা ব্যাটারি ব্যবহারের সুযোগ পাবেন।
বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ভারতের যে বিশেষ কোনও ভূমিকা নেই, এ দিন সেই বার্তা দিয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দাবি করেছেন, গত ২০০ বছর ধরে উন্নত দেশগুলির শিল্পায়নের ফলেই জলবায়ুর এই বদল ঘটছে। জাভড়েকর জানান, বিশ্বের মোট কার্বন নিঃসরণে এ দেশের অবদান মাত্র তিন শতাংশ। এই সমস্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে সৌর শক্তির ব্যবহার বাড়ানোর দিকে এগোনোর সিদ্ধান্তও হয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যে এক লক্ষ মেগাওয়াট সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে সরকার।