গণপিটুনি ঠেকাতে পাড়ায় পাড়ায় বৈঠক পুলিশের

প্রথমে কালীঘাট। তার পরে প্রগতি ময়দান। শেষে মানিকতলা। খাস কলকাতা শহরের তিনটি জায়গায় চোর সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে তিন যুবককে।

Advertisement

শিবাজী দে সরকার

শেষ আপডেট: ০৯ জুন ২০১৯ ০২:০০
Share:

প্রতীকী ছবি।

প্রথমে কালীঘাট। তার পরে প্রগতি ময়দান। শেষে মানিকতলা। খাস কলকাতা শহরের তিনটি জায়গায় চোর সন্দেহে পিটিয়ে খুন করা হয়েছে তিন যুবককে। কালীঘাট ছাড়া বাকি দু’জায়গায় দিনের আলোয় পিটিয়ে খুন করা হলেও সময়মতো তা জানতে পারেনি স্থানীয় থানা। আর তাতেই লালবাজারের কর্তারা থানার জনসংযোগ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। শীর্ষ কর্তাদের তিরস্কারের মুখে পড়েছিলেন স্থানীয় থানার পুলিশকর্মীরা।
শহরের বুকে এই ধরনের ঘটনা ঠেকাতে লালবাজারের তরফে সব থানাকে এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়াতে বলা হয়েছিল। লালবাজারের শীর্ষ কর্তাদের ওই নির্দেশের পরেই নড়েচড়ে বসেছে প্রতিটি থানা। শুক্রবার থেকেই কলকাতা পুলিশের প্রতিটি থানা গণপিটুনির
মতো ঘটনা ঠেকাতে নিজেদের
এলাকার ক্লাবগুলির সঙ্গে বৈঠক শুরু করেছে। একই সঙ্গে, আইন নিজের হাতে না নেওয়ার জন্যও সর্তক করা হচ্ছে নাগরিকদের।
লালবাজার জানিয়েছে, পুলিশ কমিশনার প্রতিটি থানাকে জনসংযোগ বাড়াতে বলেছিলেন। তিনি এলাকায় নিবিড় জনসংযোগ তৈরি করার জন্য ওসিদের ফের সক্রিয় হতেও বলেছেন। সেই মতো সিঁথি থেকে সরশুনা এবং দক্ষিণ ২৪ পরগনা লাগোয়া প্রতিটি থানার তরফেই জনসংযোগ বৃদ্ধির উপরে নজর দেওয়া শুরু হয়েছে গণপিটুনির মতো অপ্রীতিকর ঘটনা ঠেকানোর জন্য।
পুলিশ সূত্রের খবর, জনসংযোগের অঙ্গ হিসেবেই ক্লাবের সঙ্গে বৈঠক করা হচ্ছে। এলাকার ক্লাবের তালিকা তৈরি করে তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করে সাহায্য চাইছে স্থানীয় থানা। প্রশাসনের তরফে ক্লাবগুলিকে অনুদান দেওয়া হয়। পুজোর সময়েও ক্লাবগুলিকে অনুদান দেয় পুলিশ। গণপিটুনি ঠেকাতে তাই ফের তাদের দ্বারস্থ হয়েছে পুলিশ। চলতি বছরের গোড়ায় ছেলেধরার গুজবকে কেন্দ্র করে পরপর গণপিটুনির ঘটনা ঘটায়
নবান্ন পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছিল ক্লাবগুলির সাহায্য নিতে। তাতে গণপিটুনির মতো ঘটনা হ্রাস পেয়েছিল গোটা রাজ্য জুড়েই।
পুলিশ জানিয়েছে, কলকাতা পুলিশের থানাগুলির তরফে ওই বৈঠকে বলা হয়েছে, সন্দেহের বশে কোনও অপরিচিত ব্যক্তি এলাকায় আক্রান্ত হলে তা যেন প্রতিহত করা হয়। একই সঙ্গে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, আক্রান্তকে উদ্ধার করে নিরাপদ জায়গায় নিয়ে গিয়ে যেন পুলিশে খবর দেওয়া হয়। এ ছাড়া, সাধারণ মানুষকে আশ্বস্ত করার কাজ শুরু হয়েছে ওই বৈঠকে। এক পুলিশকর্তা জানান, প্রতিটি থানার তরফে ক্লাবগুলির সঙ্গে বৈঠক ছাড়াও পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি বৈঠক করে স্থানীয় থানার নম্বর তুলে দেওয়া হচ্ছে। যাতে মানুষের সঙ্গে পুলিশের যোগাযোগ আরও বাড়ে।
কী কী বলা হচ্ছে ওই বৈঠকে?
পুলিশের কর্তারা বলছেন, আইন নিজের হাতে না নেওয়া ছাড়াও কোনও ধরনের গুজবে কান না দিতে বলা হচ্ছে স্থানীয় বাসিন্দাদের। মোবাইলে বা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত খবর যাচাই করে তবেই তা ফরওয়ার্ড করতে বলা হচ্ছে। পুলিশের দাবি, গুজব ও ভুল খবরের জেরে অনেক সময়ে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির মতো ঘটনা ঘটছে। এমন ঘটনা বন্ধ করাই বৈঠকের উদ্দেশ্য।

Advertisement

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement