প্রতীকী ছবি।
পড়ুয়াদের নিরাপত্তা আরও জোরদার করতে এ বার স্কুলের প্রবেশপথের বাইরে এবং সামনের অংশে সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নিল কলকাতা পুলিশ। এত দিন ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা ভেবে বেশ কিছু স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁদের স্কুলে সিসি ক্যামেরা বসিয়েছেন। এ বার পুলিশের পক্ষ থেকে স্কুল ক্যাম্পাসের সামনের রাস্তায় এই সিসি ক্যামেরা বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হল।
লালবাজার সূত্রের খবর, প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছে যে, প্রথম দফায় শহরের বিভিন্ন প্রান্তের মেয়েদের স্কুল এবং কো-এড স্কুলগুলির সামনের রাস্তা এবং রাস্তার মোড়ে ওই সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। এর জন্য কিছু দিন আগে দরপত্রও ডাকা হয়েছিল। কিন্তু কোনও যান্ত্রিক কারণে সেই দরপত্র বাতিল করা হয়। নতুন বছরের প্রথমে ফের ওই দরপত্র ডাকার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, প্রথম দফায় স্কুলের সামনে সিসি ক্যােমেরা বসানোর জন্য কলকাতা পুলিশের ৭১টি থানা এলাকার মোট ২৫৯টি স্কুলকে বেছে নেওয়া হয়েছে। ওই স্কুলগুলির সামনে নজরদারি বাড়াতে মোট ২৫৬টি জায়গায় সিসি ক্যামেরা বসানো হবে। এক পুলিশকর্তা জানিয়েছেন, ‘নির্ভয়া প্রকল্পের’ অধীনে এই সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ হওয়ার কথা। যার জন্য বাজেট ধরা হয়েছে প্রায় ৩২ কোটি টাকা। মোট ১০২০টি সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা রয়েছে কলকাতা পুলিশের।
আসন্ন বিধানসভা ভোটের আগেই স্কুলের সামনে সিসি ক্যামেরা বসানোর কাজ শেষ করতে চাইছেন পুলিশকর্তারা। কারণ, ভোটের সময়ে স্কুলগুলি নির্বাচনী কেন্দ্রে পরিণত হয়। সে ক্ষেত্রে এলাকায় নজরদারির জন্য অতিরিক্ত অস্থায়ী সিসি ক্যামেরা বসানোর আর প্রয়োজন পড়বে না বলে মনে করছেন লালবাজারের কর্তাদের একাংশ।
লালবাজার সূত্রের খবর, পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে বেশ কিছু বেসরকারি স্কুল ক্যাম্পাসে সিসি ক্যামেরা বসিয়ে নজরদারি চালান স্কুল কর্তৃপক্ষ। কিন্তু ক্যাম্পাসের বাইরের অংশ সে ভাবে সিসিটিভির নজরদারির অধীনে নেই বললেই চলে। ফলে ক্যাম্পাসের বাইরের অংশ অরক্ষিতই থাকে। বিশেষত মেয়েদের স্কুলের বাইরে ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করার অভিযোগ কিছু নতুন নয়। সেখানে পুলিশি টহলদারি থাকলে তখনকার মতো এমন ঘটনা কম ঘটে। অথচ পুলিশ না থাকলে স্কুলের সামনে বাইক-বাহিনীর তাণ্ডব বা ছাত্রীদের উদ্দেশ্যে কটূক্তি করার মতো অভিযোগ ওঠে। তাই স্কুলের সামনের রাস্তায় সিসি ক্যামেরা বসানো হলে এই ধরনের ঘটনা অনেকটাই এড়ানো যাবে বলে মনে করছে লালবাজার।
পুলিশকর্তাদের মতে, সরকারি স্কুলগুলি বেশির ভাগই প্রধান রাস্তার থেকে বেশ কিছুটা ভিতরে, গলির মধ্যে অবস্থিত। ফলে প্রধান রাস্তা সিসি ক্যামেরার আওতাধীন থাকলেও স্কুলের গলির মুখে কোনও নজরদারি সে ভাবে থাকে না। তাই স্কুলছাত্রীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখেই সেখানে সিসি ক্যামেরা বসানোর পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে দাবি লালবাজারের।