—প্রতীকী ছবি।
সরকারি হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছিল কলকাতা পুলিশের এক হোমগার্ডের। আদতে মুর্শিদাবাদের জলঙ্গির বাসিন্দা ওই কর্মীর দেহ সেখানে নিয়ে যাওয়ার সামর্থ্য পরিবারের সদস্যদের নেই দেখে এগিয়ে আসেন অন্য পুলিশকর্মীরা। সমবেত চেষ্টায় শেষকৃত্যের জন্য দেহ নিয়ে যাওয়া হয় জলঙ্গিতে।
নিচুতলার পুলিশকর্মীদের দাবি, কলকাতা পুলিশের কোনও কর্মীর মৃত্যুর পরে তাঁর দেহ জেলায় নিয়ে যাওয়ার কোনও ব্যবস্থাই নেই। এমনকি, গাড়ি ভাড়া করে দেহ হাসপাতাল থেকে নিয়ে যেতেও খরচ হয় অনেকটাই। তখন উচ্চপদস্থ কর্তাদের ভরসায় থাকতে হয়।
এ বার পরিবর্তন আসছে সেই অবস্থার। নিচুতলার কর্মীদের মৃত্যুর পরে তাঁদের শেষকৃত্য সম্পন্ন করতে পরিজনেরা যাতে অসুবিধায় না পড়েন, তার জন্য এককালীন অনুদান দেওয়া হবে তাদের। হাসপাতাল থেকে বাড়িতে দেহ পৌঁছে দেওয়ার জন্য একটি শববাহী গাড়ির ব্যবস্থাও করা হচ্ছে।
সূত্রের খবর, সিভিক ভলান্টিয়ার, হোমগার্ড, কনস্টেবল-সহ পুলিশকর্মীদের মৃত্যুর পরে সৎকারের জন্য পুলিশ কল্যাণ পর্ষদের (পুলিশ ওয়েলফেয়ার বোর্ড) তরফে ‘ডেথ বেনিফিট ফান্ড’-এর একটি প্রকল্প চালু করছে কলকাতা পুলিশ। এই প্রকল্পে কলকাতা পুলিশের সমবায় ব্যাঙ্ক থেকে অনুদান হিসেবে ২০,০০০ টাকা পাবে মৃতের পরিবার।
আগামী বৃহস্পতিবার বডিগার্ড লাইন্সে কলকাতা পুলিশ সেন্ট্রাল ওয়েলফেয়ার বোর্ডের অনুষ্ঠানে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। কলকাতা পুলিশ সমবায় ব্যাঙ্কের তরফে পুলিশ কল্যাণ পর্ষদকে একটি শববাহী গাড়ি বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। ওই দিন সেটির উদ্বোধন হওয়ার কথা। লালবাজার সূত্রের খবর, চলতি বছর অগস্টে পর্ষদ গঠনের পরে মন্ত্রী ও পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্তাদের উপস্থিতিতে প্রথম অনুষ্ঠান হবে এটি।
রাজ্য ও কলকাতা পুলিশের নিচু ও মাঝারিতলার কর্মীদের অভাব-অভিযোগ শোনা ও তার সমাধান করার জন্যই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে ওই পর্ষদ গঠন করা হয়েছে। প্রতিটি জেলা, ব্যাটালিয়ন, ইউনিট-সহ সব জায়গায় পর্ষদের শাখা খোলা হয়েছে। কর্মীদের উপরেই তা দেখভালের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
পুলিশ কল্যাণ পর্ষদ সূত্রের খবর, বাম আমলে কর্মীদের বেতন থেকে নির্দিষ্ট অঙ্ক কেটে নিয়ে মৃত্যুকালীন অনুদান হিসেবে দশ হাজার টাকা দেওয়া হত। যা দেখভাল করত তৎকালীন পুলিশকর্মীদের সংগঠন। রাজ্যে পালাবদলের পরে ওই সংগঠন ভেঙে দিলে অনুদান বন্ধ হয়ে যায়। এ বার টাকার পরিমাণ বৃদ্ধি করে তা চালু করা হল। তবে নতুন এই প্রকল্পে কর্মীদের বেতন থেকে টাকা কাটা হবে না। পুরোটাই সমবায় ব্যাঙ্ক বহন করবে।