—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
বর্ষবরণে নারী সুরক্ষার পাশাপাশি পার্ক স্ট্রিট এবং সংলগ্ন এলাকাকে সচল রাখাই কলকাতা পুলিশের সামনে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হতে চলেছে। সেই সঙ্গে বর্ষবরণের নামে শব্দবাজি এবং মত্ত চালকদের দৌরাত্ম্যের আশঙ্কাও বাড়ছে। দিন দুয়েক আগে লালবাজারে এক সাংবাদিক বৈঠকে কার্যত যে সুর শোনা গিয়েছিল কলকাতার নগরপাল মনোজ বর্মার গলায়। বর্ষবরণের রাতে শহরের রাজপথে অতিরিক্ত সাড়ে চার হাজার পুলিশকর্মী নামানো হবে বলে লালবাজার আশ্বাস দিলেও আদৌ পরিস্থিতি কতটা নিয়ন্ত্রণে রাখা যাবে, তা নিয়ে আশঙ্কা থাকছেই।
প্রতি বছর বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে বিপুল জনসমাগম হয় পার্ক স্ট্রিটে। মধ্যরাত পর্যন্ত কমবয়সিদের ভিড়ে জমজমাট থাকে পার্ক স্ট্রিট এবং সংলগ্ন রাস্তাগুলি। পরিস্থিতি এমন হয় যে, ওই অংশ দিয়ে গাড়ি চলাচল করাই দুষ্কর হয়ে ওঠে। সেই সঙ্গে মত্ত চালকদের দৌরাত্ম্য এবং জায়গায় জায়গায় নানা বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয় বলেও অভিযোগ। তাই এ বার পার্ক স্ট্রিটে গাড়ি চলাচল মসৃণ রাখতে কার্যত গোটা এলাকাকে ‘নো পার্কিং জ়োন’ করতে চলেছে লালবাজার। পার্ক স্ট্রিট, ক্যামাক স্ট্রিট, মিডলটন স্ট্রিট, ফ্রি স্কুল স্ট্রিট, লিটল রাসেল স্ট্রিটের একাংশে পার্কিং পুরোপুরি নিষিদ্ধ থাকবে বলে জানা গিয়েছে।
বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে নারী সুরক্ষায় বাড়তি গুরুত্ব দিচ্ছে লালবাজার। তার জন্য আজ, মঙ্গলবার সকাল থেকে অতিরিক্ত পুলিশ নামানো হচ্ছে রাস্তায়। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, শহর জুড়ে প্রায় সাড়ে চার হাজার পুলিশকর্মী থাকবেন রাজপথে। এর মধ্যে শুধু পার্ক স্ট্রিটেই থাকবে আড়াই হাজার পুলিশ। লালবাজার সূত্রের খবর, গোটা পার্ক স্ট্রিটকে একাধিক জ়োনে ভাগ করা হয়েছে। প্রতিটি জ়োনের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছেন উপ নগরপাল পদমর্যাদার আধিকারিকেরা। এ ছাড়া থাকছেন সহকারী নগরপাল এবং ইনস্পেক্টর পদমর্যাদার পুলিশ। নারী সুরক্ষায় কলকাতা পুলিশের বিশেষ দল ‘উইনার্স’ বাহিনীকেও পথে নামানো হচ্ছে বর্ষবরণের রাতে। জানা গিয়েছে, পার্ক স্ট্রিটের সার্বিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন এক জন অতিরিক্ত নগরপাল পদমর্যাদার পুলিশকর্তা। এ ছাড়াও থাকবেন দু’জন যুগ্ম নগরপাল এবং ১২ জন উপ-নগরপাল। নজরদারি চালাতে পার্ক স্ট্রিট এলাকায় ১১টি নজর-মিনার করা হয়েছে কলকাতা পুলিশের তরফে। পাশাপাশি করা হয়েছে ১৫টি বুথ। এই সব বুথ থেকেও নজরদারি চলবে।
গত বছর বর্ষবরণের রাতে শব্দবাজির দৌরাত্ম্য দেখা গিয়েছিল শহরে। পুলিশের সামনেই পার্ক স্ট্রিট, পাটুলি-সহ একাধিক জায়গায় দেদার শব্দবাজি ফাটানো হয়েছিল বলে অভিযোগ। এ বছরেও সেই একই রকম পরিস্থিতি ঘটার আশঙ্কা থাকছে। লালবাজার সূত্রে জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই বর্ষবরণকে কেন্দ্র করে শব্দ-দৌরাত্ম্য রুখতে বিশেষ নজরদারির ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পার্ক স্ট্রিট সংলগ্ন বহুতলগুলিতে মূলত নজরদারি চালানো হবে বলে খবর। লালবাজারের এক কর্তা বলেন, ‘‘অন্য বছরের তুলনায় এ বছরের পুরো পরিস্থিতি একাধিক কারণে একটু হলেও আলাদা। তাই সব দিক দেখেই সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সমস্ত ইউনিটকে সতর্ক করা হয়েছে। কোনও ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা যাতে না ঘটে, সে দিকে নজর থাকবে।’’