কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয়। —ফাইল চিত্র।
মোদী জমানায় গত দশ বছরে ১৭ কোটি ৯০ লক্ষ নতুন কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছে বলে দাবি করল কেন্দ্রীয় শ্রম মন্ত্রক। রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যানকে হাতিয়ার করে মোদী সরকারের দাবি, ইউপিএ সরকারের দশ বছরে মাত্র ২.৯ কোটি কর্মসংস্থান তৈরি হয়েছিল। আবার রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের পরিসংখ্যানকে হাতিয়ার করেই কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন, সাধারণ মানুষের আয় এতই কমে গিয়েছে যে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বরে সোনা বন্ধক রেখে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ ৫৬ শতাংশ বেড়েছে। সেই ঋণ শোধ করতে না পারার পরিমাণও ৩০ শতাংশ বেড়ে গিয়েছে।
বেকারত্ব ও অর্থনীতির বেহাল দশা নিয়ে বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে আজ কেন্দ্রীয় শ্রমমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডবীয় দাবি করেছেন, শুধু গত এক বছরে, ২০২৩-২৪ সালে ৪.৬ কোটি চাকরি তৈরি হয়েছে। ২০১৪-১৫ সালে মোট কর্মসংস্থানের সংখ্যা ছিল ৪৭.১৫ কোটি। ২০২৩-২৪-এ মোট কর্মসংস্থান ৩৬ শতাংশ বেড়ে ৬৪.৩৩ কোটি হয়েছে। সেই তুলনায় ইউপিএ সরকারের দশ বছরে কর্মসংস্থান বৃদ্ধির হার ছিল ৭ শতাংশ। শ্রমমন্ত্রীর দাবি, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্যই বলছে, কৃষি ক্ষেত্রে মোদী জমানায় ১৯ শতাংশ বৃদ্ধি দেখা গিয়েছে। কারখানা উৎপাদনে ১৫ শতাংশ, পরিষেবা ক্ষেত্রে ৩৬ শতাংশ বৃদ্ধি হয়েছে। এই প্রতিটি ক্ষেত্রেই ইউপিএ সরকারের আমলে সঙ্কোচন দেখা গিয়েছিল।
কংগ্রেস সাংসদ প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরা পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন, রিজ়ার্ভ ব্যাঙ্কের তথ্য অনুযায়ীই দেশের গৃহস্থ পরিবারে আমদানি লাগাতার কমেছে। ঋণগ্রস্ত পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে। বিজেপি জমানায় আর্থিক অসাম্য ব্রিটিশ রাজের থেকেও বেশি। জওহরলাল নেহরু বলতেন, কিছু ব্যক্তির উন্নতিতে দেশের উন্নতি হয় না। দেশের কোটি কোটি লোকের মঙ্গল হলে উন্নতি হয়। এখন দেশের অর্ধেকের বেশি সম্পত্তি মাত্র এক শতাংশ ধনীর করায়ত্ত। গত আট মাসে সাধারণ মানুষের কেনাকাটার পরিমাণ কমছে। গৃহস্থের সঞ্চয় পঞ্চাশ বছরে এত তলানিতে ঠেকেনি।
কংগ্রেস মুখপাত্র জয়রাম রমেশ বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মহিলাদের মঙ্গলসূত্র কেড়ে নেওয়া হবে বলে ভয় দেখিয়েছিলেন। চলতি বছরের মার্চ থেকে জুন মাসে গৃহস্থ পরিবারে সোনা বন্ধক রেখে ঋণ শোধ করতে না পারার পরিমাণ ৫,১৪৯ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৬,৬৯৬ কোটি টাকা হয়েছে। এর বাইরে মহাজন বা সোনার দোকানে কত জন সোনা বন্ধক রাখছেন, তার কোনও হিসেব নেই। এর অর্থই হল মহিলারা নিজেদের মঙ্গলসূত্র-সহ গয়না বন্ধক রাখতেবাধ্য হচ্ছেন।