Kolkata Police

‘ক্রাইম ব্রাঞ্চে’র তলব পেয়ে হোটেল রুমে হাজিরা! ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করে আনল কলকাতা পুলিশ

বৃহস্পতিবার এই ঘটনা যখন ঘটে তখন সবে বিকেল ৪টে। বালিগঞ্জের বাসিন্দা মিহির মেহতা বাড়িতে শুধু বলে যেতে পেরেছিলেন, ক্রাইম ব্রাঞ্চ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মার্চ ২০২৪ ২১:৩২
Share:

গ্রাফিক— সনৎ সিংহ

কলকাতার এক ব্যবসায়ীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হোটেলের ঘরে আসতে বলেছিল ‘মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ’। তলব পেয়ে হুড়মুড়িয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গিয়েছিলেন ব্যবসায়ীও। তার কিছু ক্ষণ পর থেকেই সুইচড অফ হয়ে যায় তাঁর ফোন!

Advertisement

বৃহস্পতিবার এই ঘটনা যখন ঘটে তখন বিকেল ৪টে। বালিগঞ্জের বাসিন্দা মিহির মেহতা বাড়িতে শুধু বলে যেতে পেরেছিলেন, ক্রাইম ব্রাঞ্চ তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে পাঠিয়েছে। তাদের তলব পেয়েই বেরোচ্ছেন। তাঁর সঙ্গে ছিল ব্যাঙ্কের সমস্ত নথিপত্রও। কিন্তু তার পর রাত ১২টা বেজে গেলেও বাড়ি ফেরেননি মিহির। তাঁকে ফোনে যোগাযোগ করতে না পেরে পুলিশে ফোন করেন ব্যবসায়ীর স্ত্রী।

দিন কয়েক আগে দক্ষিণ কলকাতার এই বালিগঞ্জ এলাকা থেকেই ব্যবসায়ী ভব্য লাখানি একটি অজানা ফোন পেয়ে নিমতায় গিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। পরে নিমতা থেকেই তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার হয়। মিহিরের বিষয়ে অভিযোগ পেয়ে তাই দ্বিগুণ তৎপরতায় কাজে নামে পুলিশ। প্রথমে তাঁর কল রেকর্ড দেখা হয়। তার পরে তাঁর মোবাইলের শেষ লোকেশনের সূত্র ধরে মিহিরকে খুঁজে বার করে বালিগঞ্জেরই একটি হোটেলের ৪০১ নম্বর রুম থেকে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মিহিরকে যখন ওই হোটেলের ঘর থেকে উদ্ধার করা হয়, তখন তিনি অনলাইনে ভিডিয়ো কনফারেন্সে যুক্ত ছিলেন ‘মুম্বই পুলিশ’-এর কোনও এক ব্যক্তির সঙ্গে। তদন্ত করে পুলিশ জানতে পারে পুরোটাই একটা প্রতারণা চক্র।

ফেডেক্স থেকে ভুয়ো কল করে ডেকে পাঠানো হয় মিহিরকে। প্রতারণাকারীরা নিজেদের পরিচয় দেয় মুম্বই পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ বলে। এর পর সিবিআইয়ের একটি চিঠিও দেখানো হয় মিহিরকে। তাঁকে বলা হয় তাঁর নামে আসা পার্সেল হাতে এসেছে সিবিআইয়ের। সেই মর্মেই তাঁকে অনলাইনে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চায় ক্রাইমব্রাঞ্চ।

এই অনলাইনে জেরার কথা বলেই মিহিরকে বাড়ি থেকে বেরিয়ে কোনও হোটেলরুমে আশ্রয় নিতে বলেন প্রতারণাকারী। সন্ত্রস্ত মিহির সেই আদেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেন। পরে হোটেলের ঘরে ঢোকার পর সুইচড অফ করে দিতে বলা হয় তাঁর ফোন। যার ফলে সম্পূর্ণ ভাবে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যান মিহির।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মিহিরকে যখন উদ্ধার করা হয় তখন তাঁর প্যান কার্ড, আধার কার্ড এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের বিশদ তথ্য চলে গিয়েছে প্রতারণাকারীদের হাতে। তার সাহায্যে প্রতারকেরা মিহিরের অ্যাকাউন্ট থেকে বড় অঙ্কের অর্থ সরিয়ে ফেলতেও পারতেন। কিন্তু পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ করায় বড় রকমের ক্ষতি আটকানো যায়। অভিযোগ পাওয়ার তিন ঘণ্টার মধ্যে মিহিরকে উদ্ধার করে পুলিশ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement