—ফাইল চিত্র।
শেষবেলায় পুজোর কেনাকাটা আর আগেভাগে ঠাকুর দেখা— এই দুইয়ের চক্করে দ্বিতীয়ার সন্ধের পর কলকাতার একাংশে গাড়ি চলাচল কার্যত থমকে গিয়েছিল। যে দিকে চোখ যায় শুধুই জনজোয়ার। উমার বোধনের আগেই ভিড়ের এ হেন অবতারে হিমশিম খেতে হচ্ছে পুলিশ-প্রশাসনকেও। নাকাল হতে হয়েছে ঘরমুখী আমজনতাকে। এমন নাজেহাল পরিস্থিতি এড়াতে তৃতীয়ায় দুপুরের পর থেকেই পদক্ষেপ করছে কলকাতা পুলিশ। ভিড় নিয়ন্ত্রণ করে রাজপথে যাতে গাড়ির চাকা গড়ায়, সে দিকে বাড়তি নজর দিচ্ছে লালবাজার। পুলিশ সূত্রে খবর, ভিড়প্রবণ এলাকায় মোতায়েন করা হচ্ছে অতিরিক্ত পুলিশকর্মী।
মহালয়ার সন্ধ্যা থেকেই কলকাতার একাংশে ভিড়ের ছবি প্রকাশ্যে এসেছে। কয়েকটি মণ্ডপে দর্শনার্থীদের ভিড় মনে করিয়েছে অষ্টমীর রাতের কথা। এর মধ্যে অন্যতম শ্রীভূমি স্পোর্টিং ক্লাবের পুজো। শুধু শ্রীভূমি নয়, দক্ষিণ কলকাতার কয়েকটি মণ্ডপেও প্রতিপদ, দ্বিতীয়াতে দর্শনার্থীদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। সন্ধে গড়িয়ে যত রাত বেড়েছে, ততই ভিড়ের বহর ফুলেফেঁপে উঠেছে। এর জেরে ওই মণ্ডপ লাগোয়া রাস্তায় তীব্র যানজট তৈরি হয়। এ বার মহালয়ার আগেই কয়েকটি পুজোর উদ্বোধন হয়েছে। ফলে পুজোর দিনগুলোয় ভিড় এড়াতে অনেকেই আগেভাগে ঠাকুর দেখতে বেরিয়েছেন। কিন্তু ফাঁকায় ফাঁকায় ঠাকুর দেখা সম্ভব হয়নি। শহরের কয়েকটি নামকরা পুজোর এখনও উদ্বোধন হয়নি। তা সত্ত্বেও সেখানে ভিড় জমিয়েছেন বহু দর্শনার্থী। এর জেরেই ভিড় বাড়ছে রাজপথে।
তবে শুধু ঠাকুর দেখার জন্যই যে ভিড় বাড়ছে, তা কিন্তু নয়। শেষ মুহূর্তের কেনাকাটা করতেও ভিড় জমাচ্ছেন বহু মানুষ। পুজোর শেষ রবিবারে ধর্মতলা, গড়িয়াহাট, হাতিবাগান চত্বরে জনস্রোত নেমেছিল। সন্ধ্যার পর ওই এলাকাগুলিতে গাড়ির চাকা গড়ানোই মুশকিল হয়েছিল। ফলে তীব্র যানজট তৈরি হয়। দ্বিতীয়ার সন্ধ্যার পরও সেই একই হাল ছিল শহরের। যানজট হয় হাওড়া ব্রিজ, গিরিশ পার্ক মুখী সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউ, পার্ক সার্কাস সেভেন পয়েন্টগামী মা উড়ালপুল, গড়িয়াহাট রোডে।
তৃতীয়ার সকালে শহরে যানজট পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। তবে দুপুর গড়ালে আবার ভোগান্তি হতে পারে বলে আশঙ্কায় অনেকেই। পঞ্জিকা মতে উমার বোধন ষষ্ঠীতে। কিন্তু তার আগেই যে ভাবে ভিড়ে বোধন শুরু হয়েছে, তা সামলাতে নাভিশ্বাস হতে হচ্ছে আমজনতাকে। এখনও পুজোর ছুটি শুরু হয়নি। ফলে বিকেলের পর অফিসফেরতদের ভিড় থাকে। সেই সঙ্গে পুজোর কেনাকাটা এবং ঠাকুর দেখার ভিড়। এই তিন ভিড় সামলে শহরের রাজপথকে ছন্দে ফেরানোই এখন চ্যালেঞ্জ প্রশাসনের।