পরিচিত কেউ এই খুনের সঙ্গে যুক্ত কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ নিজস্ব চিত্র।
বেহালার পর্ণশ্রীর আবাসনে মা ও ছেলের খুনের ঘটনায় ক্রমেই রহস্য ঘনাচ্ছে। মহিলার স্বামীর বয়ানে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। যে সময় খুন হয়েছিল বলে পুলিশের অনুমান, সেই সময়ের আশপাশেই ঘণ্টা দুয়েক বন্ধ ছিল পেশায় ব্যাঙ্ককর্মী তপন মণ্ডলের মোবাইল। কেন ফোন বন্ধ ছিল সেই প্রশ্ন উঠছে। পরিচিত কেউ এই খুনের সঙ্গে যুক্ত কি না সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
সোমবার ফ্ল্যাটের মধ্যে থেকে সুস্মিতা মণ্ডল ও তাঁর ছেলে তমোজিতের গলা কাটা দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার তদন্তে গিয়ে পুলিশ দেখে মেঝের মধ্যেই পড়ে রয়েছে রক্তমাখা ছুরি। সেই ছুরি দিয়েই খুন হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান। গোটা ঘরে রক্তের ছাপ পেয়েছে পুলিশ। প্রথমে জেরায় তপন জানান, তিনি অফিস থেকে ফিরে দেখেন ফ্ল্যাটের দরজা খোলা। ভিতরে ঢুকে তিনি স্ত্রী ও ছেলের মৃতদেহ দেখতে পান। তার পরেই খবর দেন পুলিশে।
কিন্তু ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে বেশ কয়েকটি বিষয় সামনে আসছে। পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক অনুমান দুপুর ৩টে থেকে ৫টার মধ্যে খুন হয়েছেন দু’জন। আর দুপুর ২টো থেকে ৪টে পর্যন্ত তপনের মোবাইল বন্ধ ছিল। সেই সময় তিনি কোথায় ছিলেন তা তদন্ত করে দেখছে পুলিশ। তপনের বয়ানেও অনেক অসঙ্গতি রয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, ফ্ল্যাটের দরজা খোলা ছিল। অথচ তমোজিতের গৃহশিক্ষক জানিয়েছেন, তিনি পড়াতে গিয়ে দেখেন দরজা ভিতর থেকে বন্ধ। অনেক ডেকেও সাড়া না পেয়ে ফিরে যান তিনি। কে সত্যি কথা বলছেন তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। প্রতিবেশী ও তপনের অফিসের সহকর্মীদের সঙ্গে কথা বলছে তারা। ঘটনার পরেই তপনকে আটক করেছে পুলিশ।
তদন্তকারী আধিকারিকরা জানিয়েছেন, খুনের সময় তমোজিতের পরনে ছিল স্কুল ড্রেস। দেখে মনে হচ্ছে অনলাইন ক্লাস করছিল সে। কিন্তু যে মোবাইল থেকে সে ক্লাস করছিল সেই মোবাইলটি উধাও বলে জানিয়েছে পুলিশ। তমোজিতের স্কুলে খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, অনলাইন ক্লাস শেষ হওয়ার বেশ কিছুক্ষণ আগেই অফলাইন হয়ে যায় সে। সেই সময় বাড়ির ভিতরে কেউ ছিল কি না সেটাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
পুলিশ জানিয়েছে, পরিচিত, না কি বাইরের কেউ খুন করেছে সেটাই প্রধান প্রশ্ন। খুনের সময় ক’জন ছিল সেটাও গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। বেশ কয়েক জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। বেশ কিছু টুকরো টুকরো ঘটনা জুড়ে খুনের কিনারা করার চেষ্টা করছে পুলিশ।