—প্রতীকী চিত্র।
সবুজ বাজি নিয়ে যত প্রচারই হোক, বাজারে এখনও নিষিদ্ধ শব্দবাজি পাওয়া যাচ্ছে। এ কথা মেনে নিয়েছে কলকাতা পুলিশই। যাদবপুর, আনন্দপুর ও সংলগ্ন এলাকায় এখনও পর্যন্ত সব থেকে বেশি পরিমাণ নিষিদ্ধ বাজির খোঁজ পাওয়া গিয়েছে। বৃহস্পতিবার এ কথা জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা। তাঁর কথায়, ‘‘নিষিদ্ধ বাজির বিরুদ্ধে যথাযথ পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
প্রসঙ্গত, কালীপুজো ও দীপাবলিতে শব্দবাজি ফাটানোর বিরুদ্ধে সচেতনতার প্রচারে এ দিন সল্টলেকের পরিবেশ ভবনে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সঙ্গে বহুতল আবাসনগুলির বৈঠক ছিল। সেই বৈঠকে কলকাতা, বিধাননগর, চন্দননগর, হাওড়া-সহ একাধিক পুলিশ কমিশনারেট, পর্ষদ, আবাসনের বাসিন্দা-সহ একাধিক পক্ষের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সেখানেই বাজারে নিষিদ্ধ শব্দবাজির প্রসঙ্গ ওঠে। যার পরিপ্রেক্ষিতে কলকাতা পুলিশের ডিসি (রিজ়ার্ভ ফোর্স) অভিষেক গুপ্ত জানান, নিষিদ্ধ শব্দবাজির বিরুদ্ধে নাকা তল্লাশি হচ্ছে। কোথায় নিষিদ্ধ শব্দবাজি পাওয়া যাচ্ছে, কোথা থেকে সরবরাহ হচ্ছে, তার সূত্র ধরে বাজেয়াপ্ত করা হচ্ছে। তাঁর আশ্বাস, ‘‘কোথাও নিষিদ্ধ শব্দবাজি পেলে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে। পর্ষদের সঙ্গে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষায় নোডাল অফিসারও নিয়োগ করা হয়েছে।’’
পর্ষদের সদস্য-সচিব রাজেশ কুমারও বলছেন, ‘‘যেখানে যেখানে নিষিদ্ধ শব্দবাজি মিলছে বা আগে পাওয়া গিয়েছে, সব ক্ষেত্রেই মামলা করা হয়েছে। একাধিক বহুতল আবাসনের ক্ষেত্রেও মামলা করা হয়েছে।’’
বহুতল আবাসনের বিরুদ্ধে প্রায়ই অভিযোগ ওঠে যে, সেখানকার ছাদ থেকে বাজি রাস্তায় ফেলা হয়। অতীতে প্রাণহানিও ঘটেছে বলে জানাচ্ছেন পর্ষদের কর্তারা। সেই কারণে এ দিন পর্ষদের চেয়ারম্যান কল্যাণ রুদ্র বহুতল আবাসনের প্রতিনিধিদের কাছে ছাদে অবাধ চলাচল নিয়ন্ত্রণের আর্জি রাখেন।
এ দিনের বৈঠকে পর্ষদের চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কিসের ভিত্তিতে সবুজ শব্দবাজির সর্বোচ্চ মাত্রা পশ্চিমবঙ্গে ৯০ থেকে বাড়িয়ে ১২৫ ডেসিবেল করা হল? তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছে। এ নিয়ে যখন একটি পরিবেশকর্মী সংগঠন কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়, তখন আদালতও পর্ষদের নির্দেশিকা বহাল রাখে। তবে কল্যাণ রুদ্র জানাচ্ছেন, সর্বোচ্চ মাত্রা ১২৫ ডেসিবেল মানে সব বাজিই যে সেই শব্দসীমা ছোঁবে, এমনটা নয়। তিনি আরও বলেন, ‘‘নিরি (ন্যাশনাল এনভায়রনমেন্টাল ইঞ্জিনিয়ারিং রিসার্চ ইনস্টিটিউট) বাজি তৈরির বিষয়ে বলছে, সবুজ শব্দবাজি ১১০ ডেসিবেলের বেশি হবে না।’’
বাজির ধোঁয়ায় বায়ুদূষণ প্রসঙ্গও বৈঠকে ওঠে। বাতাসে ভাসমান ধূলিকণা মাটির কাছে আসার কারণে এবং হাওয়া-বৃষ্টি না থাকায় অক্টোবর থেকে মার্চ পর্যন্ত দূষণের মাত্রা বেশি থাকে। পর্ষদের চেয়ারম্যানের আবেদন, ‘‘সবাই এগিয়ে না এলে এই দূষণ রোধ করা যাবে না। কারণ, আবহাওয়ার পরিবর্তনে কারও হাতে নেই।’’ পরিবেশকর্মীদের একাংশের প্রশ্ন, নিষিদ্ধ শব্দবাজির উৎপাদন, সরবরাহ, মজুত পুলিশের হাতে রয়েছে, সেই দায়িত্ব ঠিক মতো পালন হচ্ছে কি?