elder persons

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ, বয়স্ক নাগরিকদের নিরাপত্তা খতিয়ে দেখতে বাড়িতে গিয়ে খোঁজ নিচ্ছেন ডিসিরা

নেতাজিনগর এবং নরেন্দ্রপুরের খুনের ঘটনার পর বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নবান্নে নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ অগস্ট ২০১৯ ১৬:১৮
Share:

প্রবীণ নাগরিকদের সঙ্গে কথা বলছেন ডিসি (পূর্ব) রূপেশ কুমার। —নিজস্ব চিত্র।

একা থাকা বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিরাপত্তার জন্য একগুচ্ছ পদক্ষেপ করা হচ্ছে— বুধবার লালবাজারের তরফে এ কথা জানানো হয়। সেটা যে শুধু কথার কথা নয়, বৃহস্পতিবার পুলিশি তৎপরতায় তা আরও স্পষ্ট হল। এ দিন সকাল থেকেই কলকাতা পুলিশের ৯টি ডিভিশনের বিভাগীয় ডিসি-রা এলাকার নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের সঙ্গে দেখা করেছেন। তাঁদের কী কী সমস্যা রয়েছে, পুলিশ কর্তারা সে বিষয়ে জানতে চান। ওই বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের কী কী করণীয় তা-ও তাঁদের বুঝিয়ে বলেন পদস্থ পুলিশ কর্তারা।

Advertisement

কলকাতা পুলিশের তত্ত্বাবধানে ‘প্রণাম’ নামে একটি সংগঠনের সূচনা হয় বয়স্ক নাগরিকদের পাশে থাকার বার্তা দিয়ে। বছরের বিভিন্ন সময়ে এই সংগঠনের নানা অনুষ্ঠান হয়। বয়স্করা ওই অনুষ্ঠানে গান, গল্প এবং কবিতা পাঠে অংশ নেন। ওই সংগঠনের সদস্য হতে পারেন বয়স্ক নাগরিকেরা। যাঁরা ‘প্রণাম’-এর সদস্য নন, তাঁদের কাছে এ দিন কলকাতা পুলিশের তরফে সদস্য হওয়ার আবেদন করা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন নতুন করে বেশ কয়েক জন সদস্যও হয়েছেন ওই সংগঠনের।

নেতাজিনগর এবং নরেন্দ্রপুরের খুনের ঘটনার পর বুধবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় নবান্নে নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। এ বিষয়ে কলকাতা পুলিশকে তিনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার নির্দেশও দেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ার মতো।

Advertisement

আরও পড়ুন: কোথাও দরজা বন্ধ, কোথাও দীর্ঘ অপেক্ষা

প্রবীণদের নিরাপত্তা বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে কথা বলছেন নিউ আলিপুর থানার ওসি অমিতশঙ্কর মুখোপাধ্যায়।

কলকাতা পুলিশের অতিরিক্ত সিপি (১) জাভেদ শামিম এ দিন জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত কলকাতা পুলিশ এলাকায় ‘প্রণাম’-এর সদস্য সংখ্যা ১৪ হাজারেরও বেশি। তাঁর কথায়: “বয়স্কদের নিরাপত্তা এবং তাঁরা কোনও সমস্যায় পড়লে পুলিশকে সব সময় পাশে পাওয়া যাবে। এ জন্য একটি তালিকাও তৈরি করা হচ্ছে।”

ইতিমধ্যেই বিভাগীয় ডিসি এবং বিভিন্ন থানায় এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ পৌঁছে গিয়েছে। এ দিন সকালে যেমন ডিসি (পূর্ব) রূপেশ কুমার সার্ভে পার্ক এলাকায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বাড়িতে যান। তাঁরা কেমন আছেন, জানতে চান। পুলিশের এই ভূমিকায় খুশি নিঃসঙ্গ বয়স্ক নাগরিকেরাও। পরে রূপেশ বলেন, “আমরা বয়স্ক নাগরিকদের সঙ্গে সংযোগের উপরে জোর দিচ্ছি। তাঁদের কোনও অসুবিধা হচ্ছে কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।”

আরও পড়ুন: দুই নেতার রসায়নেই কি শহরে দু’রকম কর্মবিরতি

লালবাজারের তরফে জানানো হয়েছে, বয়স্কদের দেখভাল এবং নিরাপত্তার জন্য প্রত্যেক থানা এলাকায় ‘জোন’ ভাগ করে এক জন করে কনস্টেবল নিয়োগ করা হবে। তাঁরা প্রতি সপ্তাহে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের ফোন করে হালহকিকত জানবেন। ১৫ দিন অন্তর বাড়িতেও যাবেন। কোনও সমস্যা হলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপও করা হবে। নিউ আলিপুর থানার ওসি অমিতশঙ্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, পুলিশের তরফে এলাকার নিঃসঙ্গ বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের বাড়িতে সিসি ক্যামেরাও বসানো হবে।

কলকাতা পুলিশের ডিসি (এসএসডি) সুদীপ সরকার বলেন, “নাগরিকদের নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত করা আমাদের কর্তব্য। বয়স্ক নাগরিকরা অনেক সময় নিরাপত্তার অভাব বোধ করেন। এ বিষয়ে আমরা গুরুত্ব সহকারে ব্যবস্থা নিচ্ছি।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement