নির্যাতিতারা (বাঁ দিকে)। অভিযুক্ত পুলিশকর্মী। —নিজস্ব চিত্র
পুলিশে ছুঁলে ছত্রিশ ঘা! কিন্তু সচরাচর পুলিশের বিরুদ্ধে তা আদৌ খাটে? এ বার প্রকাশ্য রাজপথে দু’জন মহিলাকে অভব্য অঙ্গভঙ্গি, তাঁদের সঙ্গীদের গায়ে হাত দেওয়া এবং চালককে নিগ্রহের ঘটনায় অভিযুক্ত এক পুলিশ অফিসারের জামিনে তেমনই প্রশ্ন তুললেন আইনজীবী ও সমাজকর্মীদের একাংশ।
অভিযোগের তির কলকাতা পুলিশের সাউথ-ওয়েস্ট ট্র্যাফিক গার্ডের অতিরিক্ত ওসি অভিষেক ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে। নির্ভয়া-কাণ্ডের পর থেকেই বর্মা কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী, কোনও মহিলার সম্ভ্রমহানির ঘটনা জামিন-অযোগ্য অপরাধ বলে চিহ্নিত। অথচ অভিযুক্ত পুলিশ অফিসার মঙ্গলবার ব্যাঙ্কশাল কোর্টে জামিন পেয়েছেন। পুলিশের দাবি, অভিষেকবাবুর বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু হয়েছে। তাঁকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
সোমবার রাত ৮টা নাগাদ চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউয়ের মোড়ে অভিষেকবাবু একটি গাড়িকে থামিয়ে অভব্য আচরণ করেন বলে অভিযোগ। ওই সময়ে তিনি সাদা পোশাকে মত্ত অবস্থায় ছিলেন বলে তদন্তে উঠে এসেছে। হাইকোর্টের আইনজীবী জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এমন অভিযোগে জামিন পাওয়ার কথা নয়। নির্ভয়া-কাণ্ডের পর থেকে এ সব আরও গুরুতর মাত্রা পাচ্ছে।” তাঁর মতে, কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে তদন্ত-ভার আলাদা দল, সিআইডি বা রাজ্য পুলিশের উপরে ন্যস্ত হওয়া উচিত।
আরও পড়ুন: ফের ৬২ জন মৃত, দৈনিক মৃত্যুতে কলকাতাকে ছাপাল উত্তর ২৪ পরগনা
আরও পড়ুন: দক্ষিণে রেহাই, উত্তরে আরও ৪ দিন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির সতর্কতা
দিন কয়েক আগেই সাংসদ মিমি চক্রবর্তীকে অশালীন অঙ্গভঙ্গি করে পুলিশি হেফাজতে গিয়েছেন এক ট্যাক্সিচালক। এ বার পুলিশের অভব্যতার শিকার সমাজকর্মী রূপান্তরকামী নারী রঞ্জিতা সিংহ বলেন, “রূপান্তরকামীদের ক্ষেত্রে এখনও আইন তত কড়া নয়, কিন্তু দু’জন মহিলার সঙ্গে এমন আচরণের পরেও কী করে তিনি পার পেলেন!”
ঠিক কী ঘটেছিল? অভিযোগ, হঠাৎই গাড়ি থামিয়ে আরোহী মহিলাদের স্পর্শ করতে থাকেন অভিযুক্ত অফিসার। চালক আশিস দাসকে মারধর করেন। তাঁর হাত ভেঙেছে বলে তদন্তে প্রকাশ। অভিযোগকারীদের দাবি, ১০০ ডায়ালে ফোন করলেও সাড়া মেলেনি। তাঁদের এক জন বৌবাজার থানার ওসিকে চিনতেন। অভিযুক্ত যে পুলিশ, তা বোঝা যায় ওসি-র ফোন পেয়ে পুলিশ আসার পরে। রাতে দীর্ঘ টানাপড়েনের পরে অভিযোগ নেওয়া হয়।