গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
পুজোর বাকি ৩৪ দিন। ইতিমধ্যে কলকাতার পুজো কমিটিগুলির অধিকাংশের মণ্ডপ তৈরির কাজ ৫০ শতাংশ সম্পন্ন। কিছু দিনের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে ‘কুখ্যাত’ যানজট। পুজোর সময় যা পৌঁছবে চরমে। এমতাবস্থায় শহর সচল রাখা কলকাতা পুলিশের কাছে চ্যালেঞ্জ। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে কাজ।
বছরভর যান চলাচল ও বর্ষার জেরে শহরের একাধিক রাস্তার বেহাল দশা। তা জরিপ করেছে কলকাতা পুলিশ। শহর জুড়ে একাধিক রাস্তার ২৬৪টি স্থানকে চিহ্নিত করা হয়েছে। মেরামতির প্রয়োজনীয়তার কথা জানিয়ে ইতিমধ্যে সেই তালিকা পুরসভার হাতে তুলে দিয়েছে কলকাতা পুলিশ।
এমনিতেই প্রতি বছর পুজোর আগে শহরের পথঘাট মেরামতি হয়। চলতি বছরেও ইতিমধ্যে সেই কাজ পুরোদমে শুরু হয়ে গিয়েছে। তবে এ বারের পরিস্থিতি অন্য বছরের মতো নয়। আরজি কর হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় উত্তাল রাজ্য। রোজই প্রতিবাদ, আন্দোলন, বিক্ষোভের ঢেউ আছড়ে পড়ছে কলকাতায়। তা মোকাবিলায় কালঘাম ছুটছে পুলিশের। ইতিমধ্যে কয়েকটি ক্লাবের তরফে রাজ্য সরকারের পুজোর অনুদান গ্রহণ না করার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়েছে। তার মধ্যেই কলকাতা পুলিশের পুজোর প্রস্তুতিও চলছে। পুজোর সময় ঘটনাপ্রবাহ কোন দিকে মোড় নেবে তা আগাম বোঝা দুঃসাধ্য। ওয়াকিবহাল মহলের একাংশের মতে, আরজি কর-কাণ্ডের প্রভাব দুর্গাপুজোর উপর কতটা পড়বে, তা-ও এখনই বোঝা যাচ্ছে না।
এ বার দুর্গাপুজো অক্টোবরের দ্বিতীয় সপ্তাহে। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ শেষ করতে তাই তোড়জোড় চলছে। প্রশাসন মনে করছে, এই মুহূর্তে শহরের রাস্তাঘাট মেরামতি সবচেয়ে জরুরি। না হলে পুজোর মুখে যানজটের অবস্থা আরও খারাপ হবে। তাই লালবাজার দ্রুত তালিকা পাঠিয়ে কলকাতা পুরসভাকে রাস্তা সংস্কারের কাজ শুরু করতে বলেছে।
ইতিমধ্যে পুজোর আগে শহরের রাস্তাঘাট ও আলোকসজ্জা নিয়ে কলকাতা পুরসভায় বৈঠক করেছেন পুর কমিশনার ধবল জৈন। লালবাজারের সঙ্গেও এখন ১৫ দিন অন্তর শহরের রাস্তার পরিষেবার পরিস্থিতি নিয়ে বৈঠক করছেন পুর কর্তৃপক্ষ। সেই সূত্রেই বিভিন্ন রাস্তার ২৬৪টি স্পটের তলিকা পুরসভাকে তুলে দিয়েছে পুলিশ।
পুরসভা সূত্রে খবর, তালিকার ২৬৪টির মধ্যে ১৩১টি স্থান ইতিমধ্যে মেরামত করে ফেলা হয়েছে। তবে টানা বৃষ্টির জেরে প্যাচওয়ার্ক বা তাপ্পি দেওয়া রাস্তায় ফের খানাখন্দ তৈরি হতে পারে। সে দিকেও সজাগ দৃষ্টি রয়েছে তাদের। রাস্তা সরাইয়ের পর ঘন ঘন বৃষ্টি হওয়ায় সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভার সংশ্লিষ্ট বিভাগের আধিকারিকেরা। তাঁদের কথায়, ‘‘লাগাতার বৃষ্টি চলছে। তার মধ্যেও গুরুত্বপূর্ণ যে সব রাস্তায় খানাখন্দ আছে, সেগুলি মেরামত করে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তা শুকানোর সময় পাওয়া যাচ্ছে না। সেই কারণে অনেক জায়গাতেই প্যাচওয়ার্ক উঠে যাওয়ার আশঙ্কা থাকছে।’’ পুজোর আগে আবহাওয়া ভাল হলে সবটা আরও এক বার মেরামত করা হবে বলেও পুরসভা সূত্রে খবর।