গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনার এক সপ্তাহ কেটে গেলেও অস্বস্তি কাটছে না কলকাতা পুরসভার। —ফাইল চিত্র।
গার্ডেনরিচে বহুতল ভেঙে পড়ার ঘটনার এক সপ্তাহ কেটে গেলেও অস্বস্তি কাটছে না কলকাতা পুরসভার। কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা জানতে শনিবারই সাত সদস্যের কমিটি গড়েছেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। আর নিজেদের মতো করে বহুতল ভেঙে পড়ার কারণ জানতে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করল কলকাতা পুলিশ।
গত রবিবার গভীর রাতে গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে পড়ে। যার ফলে এখন পর্যন্ত ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সেই ঘটনার পর অভিযোগের মুখে পড়ে কলকাতা পুরসভা। জানা যায়, সম্পূর্ণ বেআইনি ভাবে তৈরি হয়েছিল ওই বহুতলটি। প্রোমোটার তো বটেই, স্থানীয় কাউন্সিলর শামস ইকবালের ভুমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল। কিন্তু এ ক্ষেত্রে দলীয় কাউন্সিলরের পাশে দাঁড়িয়ে পুর আধিকারিকদের দায়িত্ববোধ নিয়েও পাল্টা প্রশ্ন তুলেছিলেন মেয়র। ঘটনার জেরে তিন ইঞ্জিনিয়ারকে শোকজ়-সহ কলকাতা পুরসভার প্রশাসনে রদবদল ঘটান ফিরহাদ। শুধু তাই নয়, অভিযুক্ত ইঞ্জিনিয়ারদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত শুরু করান তিনি। পুরসভার এমন পদক্ষেপের পাশাপাশি ঘটনার তদন্তে নামে কলকাতা পুলিশ। ওই বহুতল নির্মাণের ক্ষেত্রে কী কী ত্রুটি ছিল, তা জানতে সম্প্রতি তারা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের নিয়োগ করেছে। বিশেষজ্ঞরা ইতিমধ্যে গার্ডেনরিচে গিয়ে কাজও শুরু করে দিয়েছেন।
কলকাতা পুরসভা চেয়েছিল, ভেঙে পড়া বহুতলের আবর্জনা দ্রুত সরিয়ে ফেলতে। কিন্তু কলকাতা পুলিশের তরফে কলকাতা পুরসভাকে আপাতত এই কাজ বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। কারণ, ভেঙে পড়া বহুতলের মাটি পরীক্ষার পাশাপাশি, নির্মাণ সামগ্রীতে কোনও সমস্যা ছিল কি না, তা-ও আতশকাচের তলায় আনবে তারা। এ প্রসঙ্গে কলকাতা পুলিশ বা যাদবপুরের বিশেষজ্ঞ দল প্রকাশ্যে কিছু বলতে নারাজ।
অন্য দিকে, শনিবার গার্ডেনরিচে নির্মীয়মাণ বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে কলকাতা পুরসভা। সাত সদস্যের সেই কমিটিকে খুঁজে বার করতে হবে আটটি প্রশ্নের জবাব। সেই জবাবের ভিত্তিতে সাত দিনের মধ্যে পুরসভাকে রিপোর্ট দেবেন কমিটির সদস্যেরা। শনিবার সকালে পুরসভার ডিজি (বিল্ডিং) উত্তম কুমার সরকার গার্ডেনরিচে যান। ঘটনাস্থল পরিদর্শনের পাশাপাশি সেখানে কর্মরত পুরসভার আধিকারিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। আপাতত দোল ও হোলি উৎসব উপলক্ষে কলকাতা পুরসভার বিল্ডিং বিভাগের শীর্ষ আধিকারিকদের ছুটি বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ওই দিনও তাঁরা গার্ডেনরিচে গিয়ে তাঁদের দায়িত্ব সামলাবেন বলে জানা গিয়েছে কলকাতা পুরসভা সূত্রে।