গ্রাফিক: আনন্দবাজার অনলাইন।
চিকিৎসকদের ধর্না অবস্থানের জায়গা ঘিরে শুক্রবার আবার তৈরি হল জটিলতা। আপাতত ওই চিকিৎসকদের ধর্নার জন্য জিনিসপত্র আনার অনুমতি দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। ৩০ মিনিট পরে এই মামলার পরবর্তী শুনানি। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানান, তখনই কর্মসূচির স্থান চূড়ান্ত করা হবে।
বিচারপতি ঘোষ বৃহস্পতিবার মৌখিক ভাবে জানিয়েছিলেন, ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলে ধর্নায় বসতে পারবেন ডাক্তারেরা। আরজি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে জয়েন্ট প্ল্যাটফর্ম অফ ডক্টর্স ফোরামকে ধর্নার বিষয়ে চূড়ান্ত নির্দেশে দেওয়ার কথা ছিল শুক্রবার। বিচারপতি জানিয়েছিলেন, ধর্নার জন্য আরও কিছু শর্ত মানতে হবে ডাক্তারদের। তবে বৃহস্পতিবার সব শর্ত জানানো হয়নি। বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ জানিয়েছেন, ডাক্তারদের দাবিগুলি রাজ্যকে জানাতে হবে। কোন দাবিতে কী আপত্তি, তা আদালতে জানাবে রাজ্য। সেই অনুযায়ী বিবেচনা করে শুক্রবার আদালত ধর্নার বাকি শর্ত জানাবে।
শুক্রবার বিচারপতি ঘোষ শুনানিপর্বে বলেন, ‘‘ধর্না করার অনুমতির ব্যবস্থা করতে বলেছি। তার পরেও কেন চিকিৎসকদের কর্মসূচির কাজ শুরু করতে দিচ্ছে না পুলিশ? রাজ্যের আইনজীবী বলেন, ‘‘২৪ এবং ২৫ ডিসেম্বর বাদ রেখে কর্মসূচি করা হোক। এটা রাজনৈতিক কর্মসূচি নয়। এই কর্মসূচি নিয়ে জনগণের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া রয়েছে। ২০০ লোক নিয়ে কর্মসূচি বলা হলেও বেশি লোক হলে কেউ আটকাতে পারবে না। এই কর্মসূচিতে ভিড় কেউ নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। না হলে ওয়াই চ্যানেলে কর্মসূচি করা হোক। সেখানে এক হাজার লোকের জমায়েত হতে পারে।’’
বিচারপতি ঘোষ তখন বলেন, ‘‘এই ধরনের কর্মসূচিতে অস্থায়ী ভাবে মঞ্চ তৈরি করা হয়। পুলিশ ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে দিক।’’ মামলাকারীদের আইনজীবী রাজ্যকে নিশানা করে বলেন, ‘‘রাজ্যের ইগো প্রবলেম (অহংবোধের সমস্যা) হচ্ছে। ওই জায়গায় বিজেপি কর্মসূচি করেছে। জুনিয়র ডাক্তাররা সেখানে ধর্না দিয়েছেন। এখন কিসের সমস্যা?’’ যদিও রাজ্য যুক্তি দেয়, ওয়াই চ্যানেলে কর্মসূচি হলে যান নিয়ন্ত্রণও অনেক সহজ হবে।
বিচারপতি এর পর কার্যত ভর্ৎসনার সূরে বলেন, ‘‘গতকাল আমি কর্মসূচির অনুমতি দিয়েছিলাম। কর্মসূচির জন্য চিকিৎসকরা মানসিক প্রস্তুতি নিয়েছেন। এই অবস্থায় রাজ্যের আপত্তি ঠিক নয়। সাত ফুট উঁচু গার্ডরেল করে দিন। তার মধ্যে সকলে থাকবে। বাইরে কাউকে থাকার অনুমতি দেওয়া হবে না।’’ রাজ্যের আইনজীবী তবুও যুক্তি দেন, ‘‘এটা অন্য কর্মসূচি নয় যে শর্ত না মানলে পুলিশ লাঠিচার্জ করতে পারবে। চিকিৎসকরা কর্মসূচি করছেন। এখানে শর্ত ভঙ্গ করলে পুলিশের কিছু করার থাকবে না।’’ মামলাকারীদের আইনজীবীর উদ্দেশে বিচারপতি বলেন, ‘‘আপনারা কর্মসূচি করুন। কিন্তু ২৪ এবং ২৫ ডিসেম্বর সেখানে বাইরের কাউকে যেতে বারণ করুন।’’