ফাইল চিত্র।
করোনার কারণে প্রায় দু’বছর বন্ধ থাকার পরে রঙের উৎসবে মেতে উঠবে রাজ্য। দোল এবং হোলিকে কেন্দ্র করে শুক্র ও শনিবার শহরে যে কোনও রকম অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তৎপরতা শুরু হল কলকাতা পুলিশে। লালবাজারের তরফে মঙ্গলবারই প্রতিটি ডিভিশনকে, থানার দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের ও ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়। বুধবার লালবাজারে ডিসিদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন পুলিশের কর্তারা।
অভিযোগ, প্রতি বছরই দোল এবং হোলিকে কেন্দ্র করে একাধিক নিয়ম ভাঙার ঘটনা ঘটে। বেপরোয়া গাড়ি এবং বাইকের দৌরাত্ম্য বেড়ে যায়। মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো এবং বিনা হেলমেটে বাইক ছোটাতেও দেখা যায় বলে অভিযোগ। জানা গিয়েছে, এমন দৌরাত্ম্য রুখতে লালবাজারের তরফে এ বছর প্রতিটি ডিভিশনকে বাড়তি নজরদারি চালাতে বলা হয়েছে। একই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে কলকাতা পুলিশের ট্র্যাফিক গার্ডগুলিকেও। হেলমেট ছাড়া অথবা মত্ত অবস্থায় বাইক বা গাড়ি নিয়ে বেরোলে কড়া হবে পুলিশ। ক্যামেরার মাধ্যমেও এই নজরদারি চলবে।
লালবাজারের নির্দেশ অনুযায়ী, শুক্র ও শনিবার সকাল থেকেই রাস্তায় অতিরিক্ত পুলিশকর্মীরা মোতায়েন থাকবেন। ওই দু’দিন সকাল সাড়ে ছ’টা থেকে বিভিন্ন এলাকায় পর্যাপ্ত সংখ্যক পিসিআর ভ্যান, কুইক রেসপন্স টিম থাকবে। থানায় অতিরিক্ত পুলিশকর্মী রাখার নির্দেশও এসেছে। নিরাপত্তায় থাকবে তিন হাজার পুলিশকর্মী। মোটরবাইকে চেপেও চলবে পুলিশি নজরদারি। ন’টি ডিভিশনে মূল পিকেট থাকবে ৮৯টি। এ ছাড়াও পিকেটিং করা হবে আরও ২৯৩টি জায়গায়। পথে নামবে হেভি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড।
বহু জায়গায় দেদার শব্দবাজি ফাটানোর অভিযোগ দোলের আগের সন্ধ্যা থেকেই আসে। সেই জায়গাগুলিকে চিহ্নিত করে আজ, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রাখতে বলেছে লালবাজার। ধর্মীয় স্থান ও গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন জায়গাতেও পুলিশ থাকবে। সূত্রের খবর, স্পর্শকাতর জায়গায় ডেপুটি কমিশনার অথবা অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার অফিসারেরা নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবেন।
রং খেলার পরে মত্ত অবস্থায় স্নান করতে নেমে ডুবে মৃত্যুর ঘটনাও ঘটে। এ জন্য শহরের একাধিক পুকুর ও গঙ্গার ঘাটে নজর থাকবে। শহরের ৬৬টি ঘাট বিশেষ নজরদারির আওতায় থাকছে। শুক্রবার সকাল দশটা থেকেই পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর কর্মীদের ঘাটে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার। ডুবুরি এবং স্পিড বোটের মাধ্যমেও ঘাটে নজরদারি চলবে। থাকবে অ্যাম্বুল্যান্স। লালবাজারের তরফে বলা হয়েছে, শহরের সরোবরগুলিতে পুলিশি বন্দোবস্ত রাখতে হবে। সূত্রের খবর, বিভিন্ন জায়গায় দায়িত্বে থাকবেন ডেপুটি কমিশনারের পাশাপাশি অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার পদমর্যাদার পুলিশকর্তারা।
কলকাতা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার (সদর) শুভঙ্কর সিংহ সরকার বললেন, ‘‘দোল ও হোলি উপলক্ষে অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে পুলিশ তৎপর। মত্ত অবস্থায় গাড়ি চালানো রুখতেও নজরদারি চলবে। দু’দিনই শহর জুড়ে পর্যাপ্ত পুলিশি বন্দোবস্ত থাকবে।’’