ভাগাড়-কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া বিশ্বনাথ ঘড়ুই ওরফে বিশুর দু’টি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় এক কোটি টাকা রয়েছে বলে তদন্তে জেনেছে পুলিশ। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ কলকাতার ভবানীপুরে দু’টি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের দুই শাখায় বিশুর অ্যাকাউন্ট রয়েছে। সেই দুই অ্যাকাউন্টেই রয়েছে ওই টাকা। ভাগাড়ের মাংসের ব্যবসায় বিশুর সঙ্গে তার দুই ছেলে, সঞ্জীব ও গোবিন্দও যুক্ত ছিল বলে দাবি পুলিশের। দুই ছেলের পাশাপাশি, বিশুর জামাই প্রদীপ বণিকও পচা মাংসের কারবার দেখাশোনা করত বলে জানা গিয়েছে। দুই ছেলে ও জামাইয়ের সঙ্গে বিশুর দুই স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
তদন্তকারীদের কথায়, বিশুর প্রথম পক্ষের স্ত্রী গড়িয়ার বাড়িতে থাকেন। দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী থাকেন উত্তর ২৪ পরগনার মধ্যমগ্রামে। বিশুর দ্বিতীয় স্ত্রী মাছ ব্যবসায়ী। বিশুর পরিবারের প্রায় সকলেই পচা মাংসের কারবারে জড়িত বলে সন্দেহ পুলিশের। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, পচা মাংসের কারবার শুধু বিশু ও সানি মালিকই চালাত না। শহর ও শহরতলিতে এমন আরও অনেক চক্র দীর্ঘদিন ধরে সক্রিয় বলে অনুমান করছে তারা। তদন্তে নেমে বন্দর এলাকার আরও একটি মাংস-চক্রের হদিস পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ভাগাড়-কাণ্ডে ধৃত বিশুকে জেরা করে পচা মাংসের কারবারের আরও কয়েক জন চাঁইকে খোঁজা হচ্ছে। তদন্তকারীদের সন্দেহ, কলকাতার নিউ মার্কেট এলাকায় একাধিক মাংস ব্যবসায়ী মৃত পশুর মাংস পাচারে জড়িত রয়েছেন।
কারণ তদন্তে জানা গিয়েছে, নিউ মার্কেট এলাকাতেও মৃত পশুর মাংস মজুত করা হয়। তবে ভাগাড়-কাণ্ডের পরে নিউ মার্কেট এলাকার চাঁইদের খোঁজ পাচ্ছে না পুলিশ। কিন্তু তাদের গুদামঘরগুলি শনাক্ত করা হয়েছে। মূলত বন্দর এলাকার বিভিন্ন ভাগাড় থেকেই নিউ মার্কেটে পচা মাংস সরবরাহ করা হত।
পুলিশের দাবি, নিউ মার্কেটে প্রায় কুড়ি বছর ধরে বন্দর এলাকা থেকে মৃত পশুর মাংস পাচার করা হচ্ছে। ডায়মন্ড হারবার জেলা পুলিশের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘নিউ মার্কেট এলাকা থেকে বিভিন্ন কেটারার মাংস কিনে নিয়ে যান। তা অনুষ্ঠান বাড়িতে রান্না করা হয়। কী মাংস কোথায় যাচ্ছে, কে জানে।’’
নিউ মার্কেট এলাকার বেশ কিছু দোকান থেকে ওই পচা মাংস বিক্রি করা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন তদন্তকারীরা। এক কর্তার কথায়, ‘‘ওই এলাকায় কয়েকটি মাংসের দোকানে তল্লাশি চালানোর প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।’’