ফাইল ছবি
পার্ক সার্কাস বাজারে চাঙড় ভেঙে এক ক্রেতা জখম হয়েছিলেন চলতি সপ্তাহের সোমবার। তার পরেই নড়ে বসে কলকাতা পুরসভার বাজার দফতর। স্থির হয়েছে, সংস্কারের জন্য কলকাতা পুরসভা পরিচালিত ৪১টি বাজারের সমীক্ষা শুরু হবে। তার ভিত্তিতে বাজারগুলির মেরামতি শুরু করবে বাজার দফতরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ। যদিও এই মেরামতির আশ্বাসে খুব বেশি আশা দেখছেন না পুর বাজারের ব্যবসায়ীরা। তবে পার্ক সার্কাস বাজারে ভাঙা অংশের মেরামতি ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বলে দাবি করেছেন পুরসভার বাজার দফতরের ইঞ্জিনিয়ারেরা।
পুর কর্তৃপক্ষ মানছেন, ৪১টি পুর বাজারের মধ্যে বেশ কিছু বাজারের হাল যথেষ্ট খারাপ। প্রায় সব ক’টিরই মেরামতি জরুরি বলে মনে করছেন ইঞ্জিনিয়ারেরা। তার মধ্যে বেশি খারাপ অবস্থায় রয়েছে পার্ক সার্কাস, গড়িয়াহাট, শখেরবাজার, নিউ মার্কেট-সহ আরও কয়েকটি বাজার। শখেরবাজার মার্কেট কিংবা গড়িয়াহাট বাজারের ছাদ দিয়ে জল পড়ার অভিযোগ তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। অতীতেও একাধিক বার চাঙড় ভেঙে পড়েছে পার্ক সার্কাস বাজারে। পুরসভার বাজার দফতরের এক শীর্ষ আধিকারিকের কথায়, ‘‘পার্ক সার্কাস বাজার সংস্কারের জন্য বছর তিনেক আগেই ব্যবসায়ীদের সরতে নোটিস দেওয়া হয়েছিল। তার পরেই করোনা এসে যাওয়ায় কাজ এগোয়নি।’’
শহরের বেশ কয়েকটি পুর বাজারের সংস্কার জরুরি হলেও আর্থিক সঙ্কটের জন্য তা সম্ভব হয়নি বলে মানছেন পুর কর্তৃপক্ষ। অর্থ সঙ্কটের জন্যই বাজারগুলির রক্ষণাবেক্ষণে নতুন নিয়ম ভাবা হয়েছিল। পুরসভার তরফে বলা হয়েছিল, সেই খরচ দোকানদারদের বহন করতে হবে। এই প্রসঙ্গে সংখ্যাগরিষ্ঠ ব্যবসায়ী আপত্তি তুলেছিলেন। ফলে এ নিয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
স্থানীয় সূত্রের খবর, গত সোমবার পার্ক সার্কাস বাজারে একটি বড় চাঙড় দোকানের ছাদ থেকে গড়িয়ে এসে পড়ে মহম্মদ বিলাল নামে এক ক্রেতার মাথায়। ওই ঘটনায় চাঙড়টি সরাসরি বিলালের মাথায় পড়লে তাঁর মৃত্যু হতে পারত বলে মনে করছেন অন্য ব্যবসায়ীরা। এই ঘটনা সামনে আসতেই পুরসভার মেয়র পারিষদ (বাজার) আমিরুদ্দিন ববি বৃহস্পতিবার আশ্বাস দেন, ‘‘সিদ্ধান্ত হয়েছে, সব পুর বাজারের সমীক্ষা করা হবে। যে যে বাজারের হাল বেশি খারাপ, সেগুলির সংস্কার শীঘ্রই শুরু হবে।’’
পার্ক সার্কাসে বাজার করতে আসা ক্রেতাদের অভিযোগ, ‘‘ছাদের অবস্থা খুব খারাপ। রোজ আতঙ্ক নিয়ে বাজার করতে হয়। এই বাজারের আমূল সংস্কার প্রয়োজন।’’ প্রসঙ্গত, বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য মেয়র থাকাকালীন বাম বোর্ডের আমলে এই বাজার সংস্কারের দায়িত্ব একটি বেসরকারি সংস্থাকে দেওয়া হয়েছিল। সেই সময়ে ওখানকার ব্যবসায়ীরা বেসরকারি সংস্থার হাতে বাজার তুলে দেওয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামেন। পিছু হটে পুরসভা। সেই থেকে পার্ক সার্কাস বাজার বেহাল অবস্থাতেই পড়ে আছে। ফলে মেয়র পারিষদ (বাজার) যতই আশ্বাস দিন, আর্থিক সঙ্কটে চলা পুরসভা কোন পথে তা করবে, তা নিয়ে সন্দিহান বেহাল পুর বাজারগুলির ব্যবসায়ীরা।