জয়ী: ভোটের ফল ঘোষণা হওয়ার পরে অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামে। ছবি: রণজিৎ নন্দী।
তিনি জিতেছেন। শুধু তা-ই নয়, নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বীর সঙ্গে প্রাপ্ত ভোটের ব্যবধানে রীতিমতো তাক লাগিয়ে দিয়েছেন সবাইকে। সংখ্যার নিরিখে পিছনে ফেলে দিয়েছেন দলের তাবড় তাবড় তারকা প্রার্থীদেরও। কার্যত এক লাফেই এগিয়ে গিয়েছেন অনেকটা। ভোটের দিন থেকে বিরোধীরা নানা অভিযোগ তুললেও তিনি সে সবে কান দিতে নারাজ। তাঁর মতে, এতটা ব্যবধানে জয়ের পিছনে কারণ একটাই— ‘‘বিপুল জনসমর্থন।’’ তিনি অনন্যা বন্দ্যোপাধ্যায়। ১০৯ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূলের জয়ী প্রার্থী।
পুরসভার ১২ নম্বর বরোর ওই ওয়ার্ডে ৩৭ হাজারেরও বেশি ভোটে বিরোধী প্রার্থীকে পিছনে ফেলেছেন অনন্যা। ১০৯ নম্বর ওয়ার্ড নিয়ে অবশ্য ভোটের আগে থেকেই নানা অভিযোগ উঠছিল। ভোটের দিনেও ওয়ার্ডের বিভিন্ন বুথে বিরোধী এজেন্টদের বসতে না দেওয়া থেকে ভয় দেখানো, একাধিক অভিযোগ তুলেছিলেন বিরোধীরা। অভিযোগ উঠেছিল ছাপ্পা ভোটেরও। ভোটারদের উপরে চাপ সৃষ্টিরও অভিযোগ উঠেছিল বিভিন্ন এলাকায়। শুধু তা-ই নয়, ‘বলে দেওয়া’ বোতাম না টেপায় ভোট শেষ হওয়ার পরে ওই ওয়ার্ডের শহিদ স্মৃতি কলোনিতে এক ব্যক্তির বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁকে মারধরেরও অভিযোগ করেছিলেন স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ। বিরোধীদের অবশ্য অভিযোগ, জয়ের এই ব্যবধান আসলে সেই চাপ সৃষ্টিরই পরিণাম।
ওই ওয়ার্ডের বাম প্রার্থী শিখা পূজারি বলছেন, ‘‘অবাধ ছাপ্পার প্রমাণ তো উনি নিজেই দিলেন। ভোটের ব্যবধানেই তো সব বোঝা যাচ্ছে। মানুষ তো বোকা নন। তাঁরা সব বোঝেন। না হলে কি এই ব্যবধানে জেতা যায়?’’ যদিও সব অভিযোগ উড়িয়ে দিচ্ছেন অনন্যা। ভোটে জেতার পরে শংসাপত্র হাতে পেয়েই গণনা কেন্দ্র থেকে বেরিয়ে যান তিনি। এ দিন দুপুরে কপালে সবুজ আবির মেখে আলিপুরের একটি ক্লাবে হাসিমুখে বসে ছিলেন। মাঝেমধ্যেই মেটাচ্ছিলেন সমর্থকদের নিজস্বীর আবদার। কথা বলছিলেন সদস্য-সমর্থকদের সঙ্গে। মুখে যেন ‘যুদ্ধ’ জয়ের হাসি। তারই ফাঁকে ছাপ্পা নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে বললেন, ‘‘শুধু ছাপ্পা দিয়ে ৩৭ হাজারের বেশি ভোটে জেতা যায় না। সব ভোটই কি আর ছাপ্পা দেওয়া যায়? জনসমর্থন আছে বলেই আমি বিপুল ভোটে জিতেছি।’’
বিরোধী এজেন্টদের বসতে না দেওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর জবাব, ‘‘কোন বুথে বিরোধীরা এজেন্ট দিতে পারলেন, কোথায় পারলেন না, সেটা দেখা তো আমার কাজ নয়। বিরোধীদের হয়ে আমি কি এজেন্ট খুঁজে বসিয়ে দেব?’’ এখানেই শেষ না করে তিনি বলেন, ‘‘ভোট শেষ। আমি জয়ী হয়েছি। মানুষ আমাদের বিপুল ভাবে সমর্থন করেছেন। এখন আমি সবার কাউন্সিলর।’’