ফিরহাদ হাকিম। ফাইল চিত্র।
পুরবোর্ড গঠনের বৈঠকে তাঁর নাম প্রস্তাব করেছিলেন সুব্রত বক্সী। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুধু জানতে চেয়েছিলেন এই প্রস্তাবে কারও আপত্তি আছে কি না। মেয়র হয়ে ফিরহাদ হাকিম বললেন, নেত্রীই আরও একবার তাঁর উপর আস্থা রেখেছেন তাঁর উপর, আর সেই বিশ্বাসের মর্যাদা দিতে তিনি জীবন দিতেও পিছপা হবেন না।
বৃহস্পতিবার কলকাতা মেয়র হিসেবে ফিরহাদের নাম ঘোষণার পর এটিই ছিল ফিরহাদের প্রথম প্রতিক্রিয়া। হাত জোড় করে ফিরহাদ জানালেন, তিনি খাতায় কলমে একজন মেয়র হতে পারেন, তবে আসলে তিনি কর্মী। তাঁর কাজ নির্দেশকের কথা মতো কাজ করা। আর তাঁর নির্দেশক একজনই। তিনি তৃণমূলনেত্রী মমতা।
মেয়র হওয়ার পর স্বাভাবিকভাবেই ফিরহাদের সামনে প্রশ্ন ছিল, এরপর তাঁর লক্ষ্য কী? জবাবে ফিরহাদ জানান, তাঁর সামনে এখন লক্ষ্য একটাই। কলকাতাকে নিয়ে নেত্রী যে স্বপ্ন দেখেছেন, তা বাস্তবায়িত করা। আরও সবিস্তারে কলকাতার দ্বিতীয়বারের মেয়র বলেন, ‘‘উনি নির্দেশক। উনি যে নির্দেশ দিয়েছেন, যে পথ দেখিয়ে দিয়েছেন, সেই পথই অনুসরণ করব। এটাই আমার জীবনের ব্রত।’’
তৃণমূলের নতুন ‘এক ব্যক্তি এক পদ’ নীতিতে রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদের পুরভোটের টিকিট পাওয়াই অনিশ্চিত হয়ে গিয়েছিল একটা সময়ে। যদিও পরে সেই নিয়ম বদলায়। প্রার্থী তালিকায় ফিরহাদের নাম ঘোষণা করেন মমতা। বৃহস্পতিবার দ্বিতীয়বারের জন্য কলকাতার মেয়রও হলেন ফিরহাদ। তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, ‘‘দিদি কী বললেন?’’ জবাব এল, ‘‘দিদিকে প্রণাম করলাম, উনি বললেন, ‘ভাল ভাবে কাজ করো’।’’ বস্তুত মেয়র হওয়ার পর প্রতিক্রিয়া দিতে এসে আগাগোড়াই হাত জোড় করে রেখেছিলেন ফিরহাদ। সে ভাবেই বললেন, ‘‘দরকার হলে জীবন দিয়েও ওঁর বিশ্বাসের মর্যাদা রাখব।’’
তবে মেয়র প্রথম কোন কাজ করবেন জানতে চাওয়া হলে নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি ফিরহাদ। জানিয়েছেন, যাবতীয় পরিকল্পনা শপথ নেওয়ার পর পুরসভায় বসেই ঠিক করবেন। তবে প্রাথমিক ভাবে ইস্তাহারে যা যা প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে সেগুলি অক্ষরে অক্ষরে পালন করবেন বলেও জানান ফিরহাদ। নতুন পুরবোর্ড প্রসঙ্গে ফিরহাদ বেশ স্পষ্ট করেই জানিয়ে দেন, ‘‘সবাই আমার দলের সহকর্মী, যাঁরা মেয়র পারিষদ হতে পারলেন না, তাঁরাও আমার সহকর্মী। এঁদের সবাইকে নিয়েই একসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরিবার হিসেবে কর্পোরেশনের কাজ করব।’’
মমতা এ বার ১৬টি বরোর মধ্যে ১০টিরই চেয়ারম্যান করেছেন মহিলাকে। সে প্রসঙ্গে ফিরহাদের বক্তব্য জানতে চাওয়া হয়েছিল। তিনি বলেন, ‘‘ওঁরা তো মাতৃ জাতি। ওঁরা আরও ভাল ভাব কাজ করবেন।’’