ব্রাত্য বসু এবং বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ছবি: সংগৃহীত।
গার্ডেনরিচে বেআইনি নির্মীয়মাণ বহুতল ভেঙে মারা গিয়েছেন ১১ জন। এই ঘটনায় মুখ পুড়েছে কলকাতা পুরসভার। সেই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে এ বার গার্ডেনরিচ এলাকার একটি স্কুলের জরাজীর্ণ স্কুল ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হল। মুদিয়ালি হাই স্কুলের ওই ভবনটির অবস্থা গত কয়েক বছর ধরেই খারাপ ছিল। সম্প্রতি সেটির অবস্থা আরও শোচনীয় হয়েছে। ১৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের ওই স্কুলের কাছেই থাকেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। ঘটনাচক্রে তিনি আবার ওই স্কুলের পরিচালন সমিতির সভাপতি। বিষয়টি নিয়ে তাঁর সঙ্গে স্কুল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়। বুধবার স্পিকার এই বিষয়ে কথা বলতে বিধানসভায় ডেকে পাঠিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ও কলকাতার মেয়র তথা স্থানীয় বিধায়ক ফিরহাদ হাকিমকে। তাঁদের সঙ্গে এক দীর্ঘ বৈঠক করেন তিনি, সেই বৈঠকে ছিলেন স্কুল কমিটির প্রতিনিধিরাও। সেই বৈঠকেই বিপজ্জনক অবস্থায় থাকা স্কুলটি ভেঙে ফেলার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
মুদিয়ালি হাই স্কুলে সকালে প্রাথমিক বিভাগে ১৫০ জন ছাত্রছাত্রী রয়েছে, দ্বিপ্রাহরিক বিভাগে ছাত্রের সংখ্যা ১৩০০-র বেশি। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য জানিয়েছেন, এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে স্কুলটি ভেঙে নতুন করে তৈরি করা হবে। এই সময়ে স্কুলের ছাত্রদের অন্য স্কুলে পঠনপাঠনের ব্যবস্থা করে দেওয়া হবে। প্রাথমিক স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য নিয়ে যাওয়া হবে কাছের বিনোদবিহারী স্কুলে। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ছাত্রদের নিয়ে যাওয়া হবে মুদিয়ালি গার্লস স্কুলে। সেখান মেয়েদের স্কুলটি সকালে করা হবে। মুদিয়ালি হাই স্কুলের পঠনপাঠন হবে দুপুরের বিভাগে। ২ বৈশাখ স্কুল স্থানান্তরের কাজ শুরু হবে বলেও জানিয়েছেন ব্রাত্য। স্কুল ভাঙা থেকে শুরু করে নতুন ভবন নির্মাণের জন্য যে অর্থ খরচ হবে, তার খরচ বহন করবে শিক্ষা দফতর ও কলকাতা পুরসভা। কলকাতা বন্দরের বিধায়ক ফিরহাদ তাঁর বিধায়ক তহবিল থেকে অর্থ দেবেন বলে জানানো হয়েছে।
মূলত স্পিকার বিমানের উদ্যোগেই এই প্রয়াস সফল হল বলে জানিয়েছেন স্কুল কমিটির সদস্যরা। সম্প্রতি গার্ডেনরিচে বেআইনি বহুতল ভেঙে পড়ায় বেজায় চাপে পড়েছে কলকাতা পুরসভা। ১৩৪ নম্বর ওয়ার্ডের ওই ঘটনায় পুর ইঞ্জিনিয়ারদের শোকজের পাশাপাশি একটি তদন্ত কমিটি গড়ে ঘটনার কারণ জানতে উদ্যোগী হয়েছে কলকাতা পুরসভা। সেই ঘটনাটি ঘটেছে মেয়রের বিধানসভা কেন্দ্র কলকাতা বন্দরে। স্পিকার বিমান গার্ডেনরিচের এই ভগ্নস্বাস্থ্য স্কুল ভবনের কথা কলকাতা পুরসভার গোচরে আনতেই তড়িঘড়ি ছাত্রদের সরিয়ে স্কুল ভেঙে তা নতুন করে তৈরিতে উদ্যোগী হল পুরসভা।