অগোছালো: অপরিচ্ছন্ন মিলেনিয়াম পার্ক। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
মিলেনিয়াম পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব কেএমডিএ-র হাত থেকে চলে এল কলকাতা পুরসভার হাতে। গত ৫ ডিসেম্বর পুর ও নগরোন্নয়ন দফতরের বিশেষ সচিব খলিল আহমেদ এই মর্মে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন। গঙ্গা লাগোয়া প্রিন্সেপ ঘাট ও মিলেনিয়াম পার্কের বেহাল দশা দেখে সম্প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পরেই কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম কেএমডিএ এবং পুরসভার আধিকারিকদের নিয়ে গোটা মিলেনিয়াম পার্ক পরিদর্শন করেন। সূত্রের খবর, রক্ষণাবেক্ষণের কাজে গাফিলতির জন্য কেএমডিএ-র আধিকারিকদের ভর্ৎসনা করেন মেয়র। পুর অন্দরের খবর, কেএমডিএ-র ব্যর্থতা দেখার পরেই মিলেনিয়াম পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হল কলকাতা পুরসভাকে। করোনার জেরে প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকায় গোটা মিলেনিয়াম পার্ক আগাছায় ভরে গিয়েছিল। গত কয়েক দিন ধরে সেই আগাছা পরিষ্কারের কাজ চলছে। পুরসভা সূত্রের খবর, গঙ্গার ধারের বিভিন্ন অংশের বেহাল দশা দেখে মুখ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করার পরেই মিলেনিয়াম পার্কের সংস্কার করতে উঠেপড়ে লাগে প্রশাসন। ১৯৯৯ সালে বামফ্রন্ট আমলে মিলেনিয়াম পার্কের উদ্বোধন হয়। পরে ২০১১ সালে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে ওই উদ্যান নতুন করে সাজিয়ে তোলে কেএমডিএ। কিন্তু কোভিডের জেরে প্রায় তিন বছর বন্ধ থাকায় মিলেনিয়াম পার্কের হতশ্রী দশা হয়।
ফিরহাদ একাধারে কেএমডিএ-র চেয়ারম্যান এবং রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী। তাই মিলেনিয়াম পার্ক নতুন করে সাজিয়ে তুলতে উদ্যোগী হয়েছেন তিনি।সম্প্রতি মিলেনিয়াম পার্কে গিয়ে জানা গেল, প্রায় তিন বছর পরে গত ৬ ডিসেম্বর ওই উদ্যান ফের খুলেছে। কিন্তু ভিতরের বিভিন্ন অংশের হতশ্রী দশা। কর্তব্যরত রক্ষীরা জানালেন, তিন বছর বন্ধ থাকায় উদ্যানটি আগাছায় ভরে গিয়েছিল। আমপানে সেখানকার একাধিক গাছ ভেঙে পড়েছিল। দেখা গেল, ভেঙে পড়া গাছগুলির গোড়া কাটা হয়নি এখনও। উদ্যানের একাধিক অংশে হাঁটার রাস্তারও বেহাল দশা। অনেক ছোট ছোট গাছ শুকিয়ে মরে গিয়েছে। মিলেনিয়াম পার্কে শিশুদের বিনোদনেরও একাধিক আয়োজন রয়েছে। কিন্তু তিন বছরে সেই সব সরঞ্জামও অধিকাংশ অকেজো হয়ে পড়েছে। নাগরদোলা থেকে শুরু করে নানা বিনোদনের সরঞ্জামের মেরামতি চলছে।
উদ্যানের ভিতরের অনেক বেড়াই ভেঙে পড়ে রয়েছে। দু’টি বড় ফোয়ারা বিকল হয়ে গিয়েছে। কর্তব্যরত রক্ষীরা জানালেন, ওই উদ্যানের সংস্কারের প্রচুর কাজ এখনও বাকি। পুরসভা সূত্রের খবর, মিলেনিয়াম পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য বর্তমানে প্রায় ৪৫ জন কর্মী রয়েছেন। আগে উদ্যানে ঢুকতে মাথাপিছু ২০ টাকার টিকিট লাগলেও তা এখন তুলে দেওয়া হচ্ছে।
কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (উদ্যান) দেবাশিস কুমার বললেন, ‘‘মিলেনিয়াম পার্কের রক্ষণাবেক্ষণের কাজ এ বার থেকে পুরসভাই করবে। নতুন গাছ রোপণ করা থেকে শুরু করে যাবতীয় রক্ষণাবেক্ষণের কাজ চলছে।’’ পুরসভার সিভিল, আলো, উদ্যান বিভাগের আধিকারিকেরা এখন নিয়মিত মিলেনিয়াম পার্ক পরিদর্শনে যাচ্ছেন। উদ্যান বিভাগের এক পদস্থ আধিকারিকের কথায়, ‘‘দীর্ঘদিন ধরে উদ্যান বন্ধ থাকায় অনেক কাজ বাকি রয়েছে। বড়দিনের আগে মিলেনিয়াম পার্ক জরুরি ভিত্তিতে নতুন করে সংস্কার করা হবে।’’