শহরের ফুটপাতে জবরদখল ঠেকাতে আন্তঃদফতর সমন্বয়ে গুরুত্ব দিল কলকাতা পুর প্রশাসন। ফাইল ছবি।
শহরের ফুটপাতে জবরদখল ঠেকাতে আন্তঃদফতর সমন্বয়ে গুরুত্ব দিল কলকাতা পুর প্রশাসন। ফুটপাতের জবরদখল সরাতে পুর ইঞ্জিনিয়ারিং (সিভিল), জঞ্জাল অপসারণ ও বিল্ডিং দফতরের মধ্যে দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়া হয়েছে। নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, ফুটপাত থেকে জবরদখল তোলার ক্ষেত্রে এই তিনটি দফতর নিজেদের মধ্যে প্রতিনিয়ত যোগাযোগ রক্ষা করে চলবে। কোনও দফতরের তরফে খামতি থাকা চলবে না।
ফুটপাতে জবরদখল সরানো নিয়ে পুর প্রশাসনের তরফে প্রথম বার কড়া নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল বছর চারেক আগে। সেই নির্দেশিকায় বলা হয়েছিল,ফুটপাতে জবরদখল দেখলেই সংশ্লিষ্ট বরো ইঞ্জিনিয়ারকে (সিভিল)পুলিশে অভিযোগ দায়ের করতে হবে। ঘটনাটি মেয়র, বরো চেয়ারপার্সন-সহ উচ্চ পর্যায়ে জানাতে হবে। জানাতে হবে, পুর জঞ্জাল অপসারণ দফতরকেও। কারণ, উচ্ছেদের কাজ তারা করবে। কোনও বরো এলাকার ফুটপাত জবরদখল হয়ে রয়েছে, অথচ সেই সম্পর্কে পুলিশে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি, এমনটা হলে সংশ্লিষ্ট বরো ইঞ্জিনিয়ারের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপ করা হবে।
কিন্তু পুর প্রশাসনের একাংশের বক্তব্য, ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী, উচ্ছেদ-অভিযান সুষ্ঠু ভাবে পালনে ফাঁক থেকে যাচ্ছিল। অভিযোগ দায়ের করলেও অনেক ক্ষেত্রেই উচ্ছেদ অভিযানে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকছেন না ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের প্রতিনিধি। যাবতীয় ঝামেলা-ঝঞ্ঝাট পোহাতে হয় জঞ্জাল অপসারণ দফতরের কর্মীদের। এমনকি, কর্মীদের উপরে শারীরিক ভাবে চড়াওয়ের ঘটনাও ঘটেছে। আর একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উল্লেখ করছেন পুরকর্তাদের একাংশ। তা হল, ফুটপাত জবরদখলকারী সংক্রান্ত অভিযোগ দায়েরের নোডাল দফতর ইঞ্জিনিয়ারিং দফতর। কিন্তু ঘটনাস্থলে তাদের প্রতিনিধি অনুপস্থিত থাকলে ভুল কোনও ঠিকানার নির্মাণ ভাঙা পড়ার আশঙ্কা তৈরি হচ্ছে। কারণ, যারা উচ্ছেদ করতে যাচ্ছে, তারা অন্য দফতর। ঠিক ঠিকানায় উচ্ছেদ-অভিযান চালাচ্ছে কি না, তা তদারকির লোক দরকার।
এই সমস্ত ফাঁক পূরণেই সাম্প্রতিক নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, এলাকা-ভিত্তিক ফুটপাত জবরদখলের বিস্তারিত তথ্য দিয়ে পুলিশে অভিযোগ দায়েরের পাশাপাশি উচ্ছেদ-অভিযানে উপস্থিত থাকতে হবে সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং দফতরের প্রতিনিধিকে। প্রতিনিয়ত সমন্বয় রাখতে হবে জঞ্জাল অপসারণ দফতরের সঙ্গে। যাতে জবরদখল হওয়া ফুটপাতের ভৌগোলিক অবস্থান নিয়ে বিভ্রান্তি না থাকে।
এ ক্ষেত্রে পুর বিল্ডিং দফতরকেও নির্দিষ্ট দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।তাদের বলা হয়েছে, বেআইনি বাড়ি ভাঙার ঠিকাদার সংস্থার তালিকাঅন্য দফতরের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হবে। কারণ, উচ্ছেদের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক যন্ত্রই জঞ্জাল দফতরের নেই। তাই উচ্ছেদের সময়ে সেই যন্ত্রপাতির প্রয়োজন পড়লে তা নিয়ে যাতে সমস্যা না হয় এবং সেই যন্ত্র চালানোর দক্ষ কর্মীও মেলে, তাই এই নির্দেশ।