শুক্রবার ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের জন্য পুর বাজেট পেশ করবেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ফাইল ছবি।
আগামী কাল, শুক্রবার ২০২৩-’২৪ অর্থবর্ষের জন্য পুর বাজেট পেশ করবেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম। করোনাকাল কাটিয়ে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরেছেজনজীবন। সেই সঙ্গে ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে বিভিন্ন বিভাগের কর আদায় বাবদ ভাল টাকা এসেছে পুরসভার ভাঁড়ারে। কিন্তু, তার পরেও পুর কর্তৃপক্ষের মাথাব্যথা বাড়াচ্ছে আয়ের চেয়ে বেশি হওয়া ব্যয়ের বহর। এই অবস্থায় নতুন বছরের বাজেটে বিভিন্ন বিভাগের আয় বাড়াতে কৌশলী পন্থা নিতে চলেছে পুর প্রশাসন।সূত্রের খবর, পুরসভার আয়ের মূল উৎস হল সম্পত্তিকর। তবে, সেটি ছাড়াও আরও একাধিক বিভাগ থেকে কর আদায় হয়। সেই সব বিভাগ থেকে কী ভাবে আয় বাড়ানো যায়, বাজেটে সেই বিষয়েই গুরুত্ব দিতে চাইছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছর ধরেই ঘাটতি বাজেট পেশ হয়েছে। এ বারও ঘাটতি বাজেট পেশহওয়ার জোরালো আশঙ্কা রয়েছে। সেই ঘাটতি পূরণে বিভিন্ন বিভাগ থেকে কর আদায় বাড়াতে দিশা দেখাতে চায় পুরসভা। পুরসভা সূত্রের খবর, বিভিন্ন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে জঞ্জাল অপসারণের ফি, পুরসভার আওতাধীন বাজারের দোকান-ভাড়া থেকে শুরু করে পার্কিং ফি,কমিউনিটি হলের ভাড়া বাড়ানোর প্রস্তাব দেওয়া হবে এ বারের পুর বাজেটে। গত দশ বছরের তুলনায় ২০২২-’২৩ অর্থবর্ষে বিভিন্ন বিভাগ থেকে কর আদায় ভালই বেড়েছে। সব মিলিয়ে সেই আদায় ছাড়িয়েছে দু’হাজার কোটি টাকা।
পুরসভার এক কর্তার কথায়, ‘‘আদায় বাড়লেও খরচের মাত্রা লাগামছাড়া হওয়ায় সমস্যাথেকেই যাচ্ছে। তার জন্য আগামী দিনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আদায় আরও বাড়াতে পন্থা অবলম্বন করতে হচ্ছে।’’ পুরসভার ভাঁড়ারে সবচেয়ে বেশি টাকা আসে সম্পত্তিকর থেকে। কিন্তু, বছরের পর বছর ওই বিভাগে মোটা টাকা অনাদায়ী থেকে যাচ্ছে। যার জন্য নতুন অর্থবর্ষের শুরু থেকেই সম্পত্তিকর আদায়ে আরও কঠোর হতে চান পুরকর্তৃপক্ষ। পুরসভা সূত্রের খবর, কর রাজস্ব বিভাগের কর্মী ও আধিকারিকেরা যাতে প্রতিটি ওয়ার্ডের বাড়ি ও আবাসন ঘুরে মূল্যায়ন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেন, প্রাধান্য দেওয়া হবে সে দিকে।
কর রাজস্ব বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘আয় বাড়ানোর লক্ষ্যে সব আধিকারিক ও কর্মীকে শুরু থেকেই কাজেকঠোর হতে বলেছেন মেয়র। গাফিলতির প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্ট কর্মী বা আধিকারিকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে।পাশাপাশি, ভাল কাজ করলে থাকছে পুরস্কারও।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, সম্পত্তিকর বাবদ আদায় বাড়লেও বিজ্ঞাপন বিভাগে কর আদায় মুখ থুবড়ে পড়েছে। গত কয়েক বছরের তুলনায় ২০২২-‘২৩ অর্থবর্ষে ওই বিভাগে আদায় কমেছে যথেষ্ট। বিজ্ঞাপন-সহ লাইসেন্স, বিনোদন, গাড়ি পার্কিং ইত্যাদি বিভাগ থেকে কী ভাবে আয় বাড়ানো যায়, সে বিষয়ে দিশা খুঁজতে তৎপর হয়েছেন পুর কর্তপক্ষ। পুরসভার এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘পুরসভার আর্থিক অবস্থা মোটেই ভাল নয়। অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ থেকে কী ভাবে আয় বাড়ানো যেতে পারে, সে দিকেই নজর দিতে চাই আমরা।’’