কলকাতা পুরসভা। ফাইল ছবি।
কলকাতা পুরসভার কোষাগারের দৈন্যদশা কাটাতে পার্কিং ফি ও লাইসেন্স ফি বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছিল। কিন্তু, চাপে পড়ে সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছেন পুর কর্তৃপক্ষ। অগত্যা ভাঁড়ারের হাল ফেরাতে ভরসা সেই সম্পত্তিকর। আপাতত সে দিকেই মনোনিবেশ করেছেন তাঁরা।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে মোটা অঙ্কের করখেলাপির সংখ্যা প্রচুর। এখনও ওই সমস্ত করখেলাপিদের থেকে প্রায় চার হাজার কোটি টাকা সম্পত্তিকরবাবদ পাওনা রয়েছে পুরসভার। এই বকেয়া করের টাকা আদায়ে জোর দিতে চাইছে তারা। তার জন্য সংশ্লিষ্ট করখেলাপিদের ডেকে আলোচনার পথে সমাধান চাইছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
পুরসভা সূত্রের খবর, এক কোটি বা তার বেশি অঙ্কের বকেয়া কর আদায়ে গুরুত্ব দিতে মেয়র ফিরহাদ হাকিম একটি কমিটি গঠন করেছিলেন। যার নেতৃত্বে ছিলেন পুর কমিশনার বিনোদ কুমার। ওই কমিটিই বড় অঙ্কের বকেয়া করদাতাদের সঙ্গে কথা বলছে। পুরসভার মূল্যায়ন (অ্যাসেসমেন্ট) দফতর জানাচ্ছে, কর আদায়ে কঠোর অবস্থান নিতে গেলেই করখেলাপিরা আদালতের দ্বারস্থ হন। মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘যেখানে বড় অঙ্কের সম্পত্তিকর বকেয়া রয়েছে, সেখানে আমরা মালিকদের ডেকে আলোচনায় বসব। আদালতে বছরের পর বছর মামলা পড়ে রয়েছে। মামলাকারীদের সঙ্গে কথা বলে যতটা সম্ভব আইনের পথে নিষ্পত্তি করা যায়, সে বিষয়ে কমিশনারকে বলেছি।’’ মেয়রের দাবি, ইতিমধ্যেই বকেয়া করদাতাদের সঙ্গে কথা বলে ৪৩ কোটি টাকা আদায় হতে চলেছে।
করোনার পর থেকেই পুরসভার বিভিন্ন বিভাগে রাজস্ব আদায়ের গতি থমকে গিয়েছে। গত অর্থবর্ষে (২০২২-’২৩) সম্পত্তিকর বিভাগ কর আদায়ে দিশা দেখালেও পার্কিং, বিজ্ঞাপন, লাইসেন্সের মতো বিভাগ মুখ থুবড়ে পড়েছে। পার্কিং ওলাইসেন্স ফি বাড়িয়ে পুরসভার কোষাগারের হাল ফেরাতে মেয়র উদ্যোগী হলেও পরিস্থিতির চাপে পিছু হটেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। পুরসভার আয়ের বেশির ভাগটাই আসে সম্পত্তিকর থেকে। তাই এই পরিস্থিতিতে মোটা টাকার বকেয়া কর কী ভাবে আদায় করা যায়, সে বিষয়ে গুরুত্ব দিচ্ছেন পুর কর্তৃপক্ষ।
পুরসভার মূল্যায়ন দফতর সূত্রের খবর, এক কোটি বা তার বেশি অঙ্কের করখেলাপিদের নিয়ে আলাদা করে বসা হবে। তাঁদের মতামত শুনে পুরসভা আয়ের রাস্তা সুগম করতে চায়। পুরসভার একটি সূত্রের মতে, এই মুহূর্তে আয় বাড়ানো জরুরি। এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘গত মে মাসের পরে অবসর নেওয়া পুরকর্মীরা অবসরকালীন টাকা পাননি। পুরসভার বিভিন্ন দফতরে বকেয়া পড়ে রয়েছে ঠিকাদারদের টাকা। কোষাগারের হাল মজবুত না হলে সামনে বিপদ।’’