ফাইল ছবি
দীর্ঘদিন পরে মেট্রোয় যাত্রীর খরা কাটার আশা দেখছেন আধিকারিকেরা। দৈনিক যাত্রী সংখ্যার নিরিখে চলতি বছরের জুন মাসে এক বার পাঁচ লক্ষের গণ্ডি পেরিয়েছিল মেট্রো। তার আগের কয়েক মাসে যাত্রী সংখ্যা ঘোরাফেরা করেছে সাড়ে চার থেকে পাঁচ লক্ষের মধ্যে। অবশেষে অতিমারি এবং গরমের ভীতি কাটিয়ে স্কুল খোলার পরে মেট্রোর যাত্রী সংখ্যা বাড়তে শুরু করে। দৈনিক যাত্রী সংখ্যার নিরিখে জুনে এক বার পাঁচ লক্ষের গণ্ডি কোনওমতে পার হলেও চলতি মাসে সেই প্রবণতা ক্রমেই ঊর্ধ্বমুখী। গত ৬ জুলাই উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোয় সফর করেছেন ৫ লক্ষ ৭০ হাজার যাত্রী। তার পরের দিন ওই সংখ্যা ছিল পাঁচ লক্ষ চার হাজার। ২১ জুলাই তৃণমূলের সমাবেশের দিনে মেট্রোয় যাত্রী সংখ্যা ছিল ৫ লক্ষ ২ হাজার। পরের দিন তা এক লাফে পৌঁছয় ৫ লক্ষ ৩১ হাজারের কোঠায়।
মেট্রো সূত্রের খবর, প্রাক্-অতিমারি পর্বের তুলনায় এখনও গড়ে এক লক্ষ ১০ হাজার যাত্রী কম সফর করছেন। তবে পুজো এগিয়ে আসায় দীর্ঘ দিনের খরা কাটার সম্ভাবনা দেখা দিচ্ছে। ব্যবসায়িক প্রয়োজন-সহ আরও নানা কাজে মানুষের কলকাতা আসার প্রবণতা বাড়ছে। নিয়মিত যাত্রীদের পাশাপাশি বাড়তে শুরু করেছে টোকেন ব্যবহার করে সফর করেন, এমন যাত্রীদের সংখ্যাও। রেল সূত্রের খবর, মেট্রোর মতোই শিয়ালদহ এবং হাওড়া শাখায় প্রাক্-অতিমারির তুলনায় এখনও এক লক্ষের মতো কম যাত্রী যাতায়াত করছেন।
রেল এবং মেট্রো আধিকারিকদের মতে, অতিমারির প্রভাবে যাত্রীদের একাংশ এখনও আগের যাতায়াতের মাধ্যমে ফিরে আসেননি। অনেকে মনে করছেন, অতিমারি-পর্বে কাজ হারানো এর অন্যতম কারণ। বেশ কিছু যাত্রী বাইক, স্কুটার ব্যবহার করায় মেট্রোয় তাঁদেরও আনাগোনা অনিয়মিত। তবে পুজো এগিয়ে আসায় অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিসর বৃদ্ধি পাওয়াকে যাত্রী সংখ্যা ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার অন্যতম কারণ বলে মনে করছেন মেট্রোর আধিকারিকেরা।
তুলনায় ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় আশাতীত সাফল্য চোখে পড়ছে আধিকারিকদের। শিয়ালদহ স্টেশন পর্যন্ত পরিষেবা সম্প্রসারিত হওয়ার পরে দৈনিক ৩৫ হাজার যাত্রী মিলবে বলে আশা করেছিলেন সংস্থার কর্তারা। গত ১৪ জুলাই পরিষেবা শুরু হওয়ার পরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় যাত্রী সংখ্যা গড়ে ৩০-৩৬ হাজারের মধ্যে থাকছে। তবে ২০ জুলাই ওই মেট্রোয় ৪৩ হাজার যাত্রী সফর করেছেন। মেট্রো সূত্রের খবর, সেক্টর ফাইভ যাওয়ার জন্য যাত্রীদের বড় অংশ বিধাননগর রোড স্টেশনে নেমে অটো বা বাস বেছে নেওয়ার বদলে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোকে প্রাধান্য দিচ্ছেন। পাশাপাশি, রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত পরিষেবা চালু থাকায় সেক্টর ফাইভ থেকে ফিরতি পথেও যাত্রী বাড়ছে। মেট্রোকর্তাদের আশা, ইস্ট-ওয়েস্টের হাত ধরেই ভবিষ্যতে যাত্রী সংখ্যার লেখচিত্র ঊর্ধ্বমুখী হবে।