Kolkata Tram

কলকাতা কড়চা: পথে, না কি মিউজ়িয়মে

১৮৮৮-তে এক ইংরেজি সংবাদপত্রে জনৈক পত্রলেখক জানাচ্ছেন, যাত্রার গতি বাড়াতে ও ঘোড়ার কষ্ট কমাতে এ ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার।

Advertisement
শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ০৯:০০
Share:

কন্ডাকটর অতিরিক্ত যাত্রী তোলায় বিডন স্ট্রিট থেকে ট্রামে উঠে পুলিশ কোর্ট পর্যন্ত পুরো রাস্তা বাবু আহুরলাল সেনকে দাঁড়িয়ে যেতে হয়েছে। নামার সময় তাই তিনি ভাড়া দিতে অস্বীকার করলেন। সেই নিয়ে বাগবিতণ্ডা। গ্রেফতার করে তাঁকে আদালতে চালান করা হল। মামলা উঠল প্রেসিডেন্সি ম্যাজিস্ট্রেটের এজলাসে। বিচারপতি রায় দিলেন, ভাড়া না দিয়ে যাত্রী কোনও অন্যায় করেননি! যাত্রীস্বাচ্ছন্দ্যের খেয়াল রাখা ট্রাম কর্তৃপক্ষের কর্তব্য। মামলা ডিসমিস।

Advertisement

১৮৮০ সালের এই বিবরণ আজ পড়ে আশ্চর্য লাগলেও এ কথা সত্যি, কলকাতার গড়ে ওঠা ও প্রসারের সঙ্গে গত দেড়শো বছর ধরে জড়িয়ে আছে ট্রামের প্রসার। ১৮৭৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রথম ঘোড়ায়-টানা ট্রাম চালু হলেও সেই পরিষেবা বেশি দিন চলেনি। ১৮৮০-র ১ নভেম্বর লর্ড রিপনের হাতে নতুন করে পরিষেবার উদ্বোধন হল, তখন নিজেদের ইচ্ছেমতো যেখানে-সেখানে যাত্রীরা উঠতেন ও নামতেন। ১৮৮৮-তে এক ইংরেজি সংবাদপত্রে জনৈক পত্রলেখক জানাচ্ছেন, যাত্রার গতি বাড়াতে ও ঘোড়ার কষ্ট কমাতে এ ব্যবস্থার পরিবর্তন দরকার। ফলে কিছু নির্দিষ্ট জায়গায় চালু হল দীর্ঘ বিরতি, যেমন ঘোড়া বদলের জন্য। কিছু জায়গায় যাত্রীদের অনুরোধে বা প্রয়োজনে অল্প সময়ের জন্য থামতে শুরু করল ট্রাম। তেমন নির্দেশ-সহ সাইনবোর্ডও বসল, যার কয়েকটি আজও দেখা যায় এ শহরে কোথাও কোথাও। এ ভাবেই চালু হল গণপরিবহণের ‘স্টপেজ’ ব্যবস্থা। এ ভাবেই ট্রামের হাত ধরে শহরে এসেছে মেয়েদের জন্য আসন সংরক্ষণ, অথবা দুর্গাপূজার সময় দর্শনার্থীদের সুবিধোর্থে মাঝরাত পেরিয়ে বিশেষ যাত্রী পরিষেবার মতো ব্যবস্থা, আজ আমরা খুব স্বাভাবিক বলে ধরে নিই যাদের।

অথচ দেড়শো বছর পরে কলকাতায় ট্রামের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশা জাগছে না। ট্রাম পরিষেবা তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত প্রায় পাকা, ভাবখানা যেন এমনই। শহরের বিভিন্ন রাস্তায় এখনও যে ট্রামের লাইন দেখা যায়, তা ঢেকে ফেলার কাজ নাকি শুরু হবে অচিরেই। এই মুহূর্তে চলছে মাত্র দু’টি রুটে— পরে চলবে সব মিলিয়ে গোটা চারেক রুটে; কলকাতার প্রথম বিদ্যুৎচালিত পরিষেবা শুরু হওয়া রুট— ধর্মতলা-খিদিরপুর হেরিটেজ রুটটি তালিকায় রয়েছে। অথচ শুধু সাধারণ মানুষের ব্যবহারের জন্য সুলভ পরিবহণ বলেই নয়, কলকাতার পরিবেশ, জনস্বাস্থ্য, নগর পরিকল্পনা, ইতিহাস ও ঐতিহ্য— সব দৃষ্টিকোণ থেকেই ট্রামের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা বিরাট। পরিবেশবান্ধব ও ঐতিহ্যশালী পরিবহণ হিসেবে ট্রামের গুরুত্ব সম্পর্কে এ শহর যে সচেতন, বোঝা যায় ‘কলকাতা ট্রাম ইউজ়ার্স অ্যাসোসিয়েশন’ বা ‘ট্রামযাত্রা’র মতো নাগরিকগোষ্ঠীর নানা উদ্যোগে। অথচ দেড়শো বছরে ধন্দ জাগছে, ট্রামকে চিরতরে মিউজ়িয়মে পাঠানোই প্রশাসনের ইচ্ছা কি না। ছবিতে সেকালের কলকাতায় যাত্রীদের ট্রামোন্মাদনা, উইকিমিডিয়া কমনস থেকে।

Advertisement

এসরাজ নিয়ে

এসরাজ-রসিকমাত্রেই জানেন রামপ্রসন্ন বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা (ছবি)। বিষ্ণুপুর ঘরানার এই শিল্পীর লেখা এস্‌রার্‌-তরঙ্গ বইটি বেরিয়েছিল বৌবাজার স্ট্রিটের কুন্তলীন প্রেস থেকে, ১৩৩০ বঙ্গাব্দের বৈশাখে। একশো বছর ছোঁয়া বইটির ফ্যাক্সিমিলি সংস্করণ প্রকাশ করেছে কলকাতার যে পত্রিকাটি, সেও একেবারে নতুন, নাম জাদুপট (সম্পা: ঋত্বিক মল্লিক, অরুন্ধতী দাস)। প্রথম বর্ষের প্রথম সংখ্যাটিই নিবেদিত এসরাজের ঐতিহ্য নিয়ে, বিষয়-বিন্যাসে নজরকাড়া। রয়েছে অশেষ বন্দ্যোপাধ্যায় গৌরহরি কবিরাজ রমেশচন্দ্র চন্দ্র রণধীর রায় সুকেশ জানা কিংবা সত্যেন্দ্রনাথ বসু, সদ্্‌গুরু জগজিৎ সিংহের মতো এসরাজ-শিল্পীদের সুরজীবন নিয়ে নিবন্ধ, স্মৃতিগদ্য, উত্তরসূরিদের কথালাপ; অমিতা সেন কণিকা বন্দ্যোপাধ্যায় মোহন সিংহ খাঙ্গুরা সুভাষ চৌধুরী সুভাষ ভট্টাচার্য প্রমুখের গুরুত্বপূর্ণ লেখার পুনর্মুদ্রণও।

লেখার পুনর্মুদ্রণও।

পথদ্রষ্টা

উনিশ শতকে বাঙালির সংস্কৃতিকে সমাজবিজ্ঞানের আধুনিকতম দৃষ্টিতে দেখেছেন যাঁরা, আমেরিকার টাফ্‌টস বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়োলজির অধ্যাপক ব্রায়ান হ্যাচার তাঁদের মধ্যে ব্যতিক্রমী। বহুবিবাহ প্রথার বিরুদ্ধে বিদ্যাসাগরের কর্মকাণ্ড নিয়ে গত বছর বলেছিলেন তিনি, কলকাতার ইনস্টিটিউট অব ল্যাঙ্গুয়েজ স্টাডিজ় অ্যান্ড রিসার্চ (আইএলএসআর)-এ। হরপ্রসাদ শাস্ত্রীর নামাঙ্কিত সেই বক্তৃতাই পুস্তিকাকারে প্রকাশ পেল সদ্যসমাপ্ত আন্তর্জাতিক কলকাতা পুস্তকমেলায়, প্রকাশ করলেন ব্রাত্য বসু। ১৮৭১-এ প্রকাশিত, বহুবিবাহ রহিত হওয়া উচিত কি না এতদ্বিষয়ক বিচার-এর প্রথমাংশে বাংলার কুলীন সমাজের বহুবিবাহ প্রথার ক্ষতিকর প্রভাব তুলে ধরেছিলেন বিদ্যাসাগর, তথাকথিত ধর্মীয় বাদানুবাদের বাইরে, যুক্তির আলোয়। সমাজগবেষক বিদ্যাসাগরের নবমূল্যায়ন করেছেন ব্রায়ান, আ লেস ফ্যামিলিয়ার বিদ্যাসাগর: পায়োনিয়ার অব সোশাল রিসার্চ নামের রচনায়।

শতবর্ষের পথে

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশুতোষ হলে ১৯২৬-এর ২৯-৩০ অগস্ট শিক্ষকদের সম্মেলন হল আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়ের সভাপতিত্বে, গঠিত হল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন, উত্তরকালে যা ‘পশ্চিমবঙ্গ কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি’ তথা ‘ওয়েবকুটা’। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে শিক্ষকদের ব্রত ও কর্তব্য নির্ধারণের পাশাপাশি কর্মক্ষেত্রে তাঁদের দাবিদাওয়া, অধিকার রক্ষার বিষয়টি গুরুত্ব পেয়েছিল শুরু থেকেই, সাড়ে নয় দশক পেরিয়ে আজও সচেষ্ট সেই প্রয়াস। গত ১১-১২ ফেব্রুয়ারি রামকৃষ্ণ মিশন ইনস্টিটিউট অব কালচার, গোলপার্কে হয়ে গেল সমিতির ৯৪তম বার্ষিক সাধারণ সভা, শিক্ষক সম্মেলন, প্রকাশ পেল বই— শতবর্ষের পথে অধ্যাপক সমিতি।

মনীষীদের বাড়ি

দক্ষিণ কলকাতার নানা পাড়ায় ফুটপাতের ধারে চোখে পড়ে বোর্ড, শিল্পী লেখক বিজ্ঞানী খেলোয়াড়... নানা গুণিজনের ছবি দিয়ে বার্তা: কলকাতা এঁদের শহর, আপনারও, এ শহরকে সুস্থ সুন্দর পরিষ্কার রাখুন। ভাল উদ্যোগ, তবে গুণিজনদের স্মৃতিধন্য বাড়িগুলি যথাযথ রক্ষণ ও লালন করে, শহরবাসীকে সে সম্পর্কে বেশি করে জানালে বরং ভাল হত। এই চর্চায় কাজে দিতে পারে পল্লব মিত্রের বই কলকাতায় মনীষীদের ভবন (প্রকা: কথা ও কাহিনী)। রামমোহন বিদ্যাসাগর বঙ্কিমচন্দ্র চিত্তরঞ্জন দাশ গিরিশ ঘোষ দ্বিজেন্দ্রলাল রায় রানি রাসমণি ভগিনী নিবেদিতা থেকে মাদার টেরিজার স্মৃতিধন্য বাড়িগুলির তথ্য, ছবি ও ইতিহাস, সঙ্গে তাদের স্থাপত্যশৈলীর বিস্তৃত পরিচয়— মনীষা রক্ষিতের আলোচনায়।

খেলার ছলে

গবেষণাসূত্রে সাবেক সোভিয়েট ইউনিয়নের শিশুসাহিত্যের আর্কাইভিং শুরু করেন আফরা শাফিক। ভারতের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকা, নানা ভাষার অনুবাদগুলি একত্র করার সময় এই কর্মকাণ্ডের পশ্চাৎসূত্রগুলি টেনেছিল তাঁকে; বোঝার চেষ্টা করেন কী ভাবে শিশুবোধ্য গল্পে নানা মানবিক গুণ তুলে ধরা হত, সোভিয়েট সংস্কৃতিকে ছবির ভাষায় পৌঁছে দেওয়া হত ভারতীয় শিশুদের কাছে। এই এষণার ফল একটি ইন্টারঅ্যাক্টিভ কম্পিউটার গেম, পুরনো সোভিয়েট বইয়ের ছবিতে সাজানো। মূল গল্পের সূত্র ধরে এই গেম ভারতীয় ভাষায় অনূদিত সোভিয়েট শিশুসাহিত্যকে চেনাবে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি যদুনাথ ভবন মিউজ়িয়ম অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টারে ‘হরি বাসুদেবন স্মৃতি বক্তৃতামালা’র অংশ হিসাবে এক অনুষ্ঠানে এই প্রকল্পটি নিয়ে বললেন আফরা, প্রাক্‌কথন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির গবেষক জেসিকা বাকম্যান-এর।

মৃণাল-ভুবন

কলকাতার রাস্তায় মৃণাল সেন— কুমোরটুলিতে, গঙ্গার ধারে পায়রাদের মুখোমুখি, মহাকরণের সামনে, বা ছাদ থেকে দেখছেন এ শহর (ছবিতে); বেলতলা রোডের বাড়িতে স্ত্রী গীতার সঙ্গে, নাসিরুদ্দিন শাহের সঙ্গে কথোপকথনে। প্রায় না-দেখা মুহূর্তগুলি তুলে ধরেছে ‘কথাচিত্র’ প্রকাশিত টেবিল ক্যালেন্ডার ‘হানড্রেড ইয়ার্স অব আ লেজেন্ড’। ছবিগুলি তোলার স্মৃতিতে ফিরছিলেন বিশিষ্ট আলোকচিত্রী সাত্যকি ঘোষ: “আশির দশকের দ্বিতীয় পর্বে তোলা ছবি, বাবার (নিমাই ঘোষ) কাছে আমাকে চেয়ে পাঠিয়েছিলেন ওঁর একটা প্রজেক্টের কাজে, তখনই।” আশির দশকের কলকাতা আর পরিচালকের ‘দেখা’ একাকার শিল্পীর ক্যামেরায়। অন্য দিকে, কলকাতার দক্ষিণ প্রান্তের এক আবাসন থেকে প্রকাশিত পত্রিকা অন্বেষা (সম্পা: শ্রীপর্ণা মিত্র) ধরিয়ে দিল মৃণাল সেনের জন্মশতবর্ষের সূচনাসুরটি, ‘মৃণাল সেনের অন্য ভুবন’ সংখ্যায়। রয়েছে কুণাল সেন ও অঞ্জন দত্তের সাক্ষাৎকার, গৌতম ঘোষ পবিত্র সরকার সঞ্জয় মুখোপাধ্যায় প্রমুখের লেখা, অরিন্দম সাহা সরদারের কলমে জীবনস্মৃতি আর্কাইভ-এর উদ্যোগে ‘মৃণাল-মঞ্জুষা’ সংগ্রহশালার কথা।

১২৫ বছরে

চ্যাপলিন, গ্রিফিথ ও সের্গেই আইজ়েনস্টাইনকে ‘মাস্টার্স’ মানতেন সত্যজিৎ। এঁদের নিয়ে লিখেছেন বহু বার, মুগ্ধ ছিলেন আইজ়েনস্টাইন-এ, তিনি কী ভাবে ২৮ মিমি ওয়াইড অ্যাঙ্গল লেন্সে ইভান দ্য টেরিবল-এর ইমেজে ‘মনুমেন্টাল স্টাইলাইজ়েশন’ তৈরি করেছিলেন, লিখেছেন তা নিয়ে। সেই আইজ়েনস্টাইনের ১২৫ বছর পূর্ণ হল এই জানুয়ারিতে, উদ্‌যাপন করছে আইজ়েনস্টাইন সিনে ক্লাব, গোর্কি সদনে— ১৫ থেকে ২২ ফেব্রুয়ারি। কিংবদন্তি চলচ্চিত্রকারের ছবি দেখানো, এবং তাঁকে নিয়ে গুণিজনের আলোচনার পাশাপাশি থাকছে প্রদর্শনীও, তাতে আইজ়েনস্টাইনের স্কেচ ড্রইং ফোটোগ্রাফ জার্নাল পোস্টার বই... বিবিধের সমাহার। সহযোগিতায় রুশ বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি কেন্দ্র, ফ্রেন্ডস অব ল্যাটিন আমেরিকা, সিনে সেন্ট্রাল, নর্থ ক্যালকাটা ফিল্ম সোসাইটি ও তপন সিংহ ফাউন্ডেশন। ছবিতে আইজ়েনস্টাইনের স্কেচে মহাত্মা গান্ধী।

মাস্টারমশাই

ফেকো, গন্ডার, ব্ল্যাক প্যান্থার, ঢুলুঢুলু... ফেলে-আসা স্কুলজীবনের মাস্টারমশাইদের ডাকনাম, ছেলেদের দেওয়া! কারও ক্লাসের শুরুতে এক মিনিটের ধ্যান ছিল বাধ্যতামূলক, রাগলে কেউ বলতেন “ইয়োর ফিউচার ইজ় ব্ল্যাক!” কড়া চিমটিতে কেউ আদায় করতেন স্কুল পালিয়ে নিশিপদ্ম দেখতে যাওয়ার স্বীকারোক্তি। জাতীয় পুরস্কার পাওয়া প্রধান শিক্ষক উপেন্দ্রনাথ দত্ত, স্বনামধন্য জ্যোতিভূষণ চাকী, ছবি আঁকার মাস্টারমশাই শিল্পী শ্যামল দত্ত রায়... আরও অনেক মাস্টারমশাই ও দিদিমণিদের নিয়ে লিখেছেন বালিগঞ্জ জগদ্বন্ধু ইনস্টিটিউশনের ১৯৭৪ হায়ার সেকেন্ডারির ছেলের দল ‘চুয়াত্তুরে’। শৈলী প্রকাশনীর ছোট্ট বইটির নাম মাস্টারমশাই। স্মৃতি, সতত মধুর!

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement