Kolkata Karcha

Kolkata Karcha: পায়ে পায়ে কত কথা

উনিশ শতকের মাঝামাঝি কোলসওয়ার্দি গ্রান্ট তাঁর স্মৃতিকথায় বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে বা সাবেক কসাইটোলার চিনা দোকানের জুতোর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন।

Advertisement
শেষ আপডেট: ২৮ মে ২০২২ ০৫:৫৭
Share:

নবদ্বীপের পণ্ডিত রঘুনন্দন তাঁর জ্যোতিস্তত্ত্ব গ্রন্থে পাদুকা ব্যবহারের উপকারের কথা বলেছেন ষোড়শ শতকেই। তার পরেও বহু কাল জুতো ব্যবহার করতেন শুধু সমাজের বিশিষ্টরা। ইংরেজ রাজত্ব শুরুর পরেও জুতোর মধ্যে ছিল দু’টি স্পষ্ট ভাগ: খড়ম, চটি বা নাগরা জাতীয় জুতো, অন্য দিকে বুট ও নানা রকম ‘শু’। কলকাতায় জাঁকিয়ে ব্যবসা করত কাথবার্টসন হার্পার বা মরিসন অ্যান্ড কট্ল এর মতো চামড়ার দ্রব্য প্রস্তুতকারী সাহেবি সংস্থাগুলি। তাদের প্রয়োজনে ‘ফাইন লেদার’ থেকে শুরু করে সুচ-সুতোও আসত ইউরোপ থেকে। সেই বাছাই জিনিসে তৈরি হত লাটসাহেব থেকে দেশীয় রাজা-মহারাজাদের চর্মসামগ্রী।

Advertisement

শহরের জুতো ব্যবসার উল্লেখযোগ্য অংশ ছিল চিনেপাড়ার। উনিশ শতকের মাঝামাঝি কোলসওয়ার্দি গ্রান্ট তাঁর স্মৃতিকথায় বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটে বা সাবেক কসাইটোলার চিনা দোকানের জুতোর ভূয়সী প্রশংসা করেছেন। পূর্ব কলকাতার ট্যাংরা অঞ্চলে অভিবাসী চিনাদের প্রায় সাড়ে তিনশো ট্যানারি এই উদ্যোগকে করে তুলেছিল পশ্চিমবঙ্গের অন্যতম প্রধান শিল্প। সাহেব বা চিনা কারিগরদের পাশাপাশি এক বাঙালিও নাম করেছিলেন এই ব্যবসায়। কলকাতার মুচিবাজার অঞ্চলের ইতিবৃত্তে আজও বেঁচে দীননাথ দাসের স্মৃতি, জুতো ও চামড়ার ব্যবসাতেই ধনবান হয়েছিলেন তিনি। মূলত বংশানুক্রমিক ভাবেই জুতো তৈরির কাজে আসতেন বাঙালিরা। ছবিটা বদলাতে শুরু করে বিশ শতকের প্রথমার্ধে। বেঙ্গল ট্যানিং ইনস্টিটিউট-এ প্রশিক্ষণ নিতে শুরু করেন বাঙালি যুবারা। অন্যান্য প্রযুক্তিনির্ভর পেশার মতো স্বীকৃতি পায় চামড়ার কাজও। তবে বিপুল সংখ্যক অসংগঠিত বাঙালি কারিগরদের কাজে তার প্রভাব তেমন পড়েনি। এর অন্যতম কারণ, সর্বাধুনিক প্রযুক্তির খবর তাঁদের জানানোর মতো বাংলা বইপত্রের অভাব। ফল: পিছিয়ে পড়া, এবং এ রাজ্যে চর্মশিল্পের প্রসারে ছেদ।

সেই অভাব কিছুটা মেটাতেই সহজ জুতোর পাঠ (প্রকাশক: রিম্পা এন্টারপ্রাইজ়, বারুইপুর) বই লিখেছেন সোমনাথ গঙ্গোপাধ্যায়। কলকাতার ‘কলেজ অব লেদার টেকনলজি’-র প্রাক্তনী ও প্রাক্তন শিক্ষক সোমনাথবাবুর উচ্চশিক্ষা এই শিল্পের পীঠস্থান ব্রিটেন ও ইটালিতে; কাজ করেছেন কেন্দ্রীয় সংস্থায়, ছিলেন আগরার সেন্ট্রাল ফুটওয়্যার ট্রেনিং ইনস্টিটিউট-এর প্রধান, ব্রিটেনের টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট-এরও ‘ফেলো’ তিনি। সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকে, সহজ ভাষায় আধুনিক জুতো তৈরির পুরো প্রক্রিয়াটি— জুতোর আবিষ্কার ও বিবর্তন-ইতিহাস, মানুষের পায়ের অনন্যতা, জুতোর জন্য চামড়া কাটা, জুতোর ফিটিং, উপাদান, নকশা, সেলাই ও জোড় লাগানো-সহ জুতো তৈরির নানা খুঁটিনাটি— বুঝিয়েছেন সাড়ে তিনশোরও বেশি ছবির সঙ্গতে। বহু কাল বাংলার বাইরে থাকা মানুষটির চেনা শিকড়ে ফেরার চেষ্টাও এ বই। ছবিতে বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের দোকানে জুতোর পসরা।

Advertisement

ভারতবন্ধু

বছর পঁচিশের অস্ট্রিয়ান মেয়েটি বলল ভারতীয় মন্দির নিয়ে, অক্সফোর্ডে ১৯২০-র সেই সভায় উপস্থিত রবীন্দ্রনাথ। ভারতবিদ্যার সাগর-সেঁচা মুক্তোর দ্যুতি দেখেছিলেন তিনি স্টেলা ক্রামরিশ-এর (ছবিতে) বক্তব্যে, ব্যক্তিত্বেও। শান্তিনিকেতনের আমন্ত্রণ ফেরাতে পারেননি, সুপণ্ডিত মানুষটি পরে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়িয়েছেন ছাব্বিশ বছর! লিখেছেন ইন্ডিয়ান স্কাল্পচার, দ্য হিন্দু টেম্পল, আননোন ইন্ডিয়া: রিচুয়াল আর্ট ইন ট্রাইব অ্যান্ড ভিলেজ-এর মতো বই। বাংলার নকশি কাঁথা, টেরাকোটা, অলঙ্কার, লোকাচার ছিল সাধনবস্তু। পদ্মভূষণ, দেশিকোত্তম-ধন্য এই ভারতবন্ধুর জন্মদিন ২৯ মে, ২০২১-এ অতিক্রান্ত তাঁর জন্মের ১২৫ বছর। এ বার আন্তর্জাল-অনুষ্ঠানে তাঁকে স্মরণ করল ‘অশোকনগর আনন্দধারা’, তাদের ইউটিউব চ্যানেলে স্টেলাকে নিয়ে বলেছেন ইন্দ্রজিৎ চৌধুরী শুভাশিস চক্রবর্তী পৌলমী ঘোষ।

যৌথ পাঠে

অতিমারির গৃহবন্দি দশায় মানুষ যখন ক্রমশ বিচ্ছিন্ন, তখনই এক সঙ্গে পড়াশোনার কথা ভেবেছিলেন তাঁরা। কার্ল মার্ক্সকে জানার সেই যৌথ পাঠের মধ্য দিয়েই ‘সহপাঠ’ গোষ্ঠীর জন্ম। দেড় বছর পার করে তার প্রথম ফল একটি গ্রন্থ: প্যারিসের কমিউন কমিউনের দুনিয়া (প্রকাশক: আর বি এন্টারপ্রাইজ়েস)। ক্ষণজীবী যে কমিউনকে নিয়ে দেড়শো বছর পরেও পৃথিবীতে এত আলোচনা, মার্ক্স-পাঠে তার গুরুত্বই খুঁজে দেখতে চেয়েছেন সহপাঠ-এর সদস্যরা। এক আলোচনাসভার মধ্য দিয়েই উদ্বোধন হবে বইটির, আগামী ৩০ মে, বিকাল ৪টায়, ইনস্টিটিউট অব ডেভলপমেন্ট স্টাডিজ় কলকাতা-য় (আইডিএসকে)। আলোচনা করবেন কয়েকজনতরুণ গবেষক।

পঁচিশ বছরে

“অপেক্ষাকৃত তরুণতররা কলকাতার থিয়েটারের ইতিহাসটাকে সচল রাখছে এটা সত্যি সত্যিই একটা সুলক্ষণ বলে মনে হচ্ছে,” লিখেছিলেন সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। ২০২১-এ ‘শ্যামবাজার মুখোমুখি’-র পঁচিশে পদার্পণ উপলক্ষে নাট্যোৎসব আয়োজিত হোক, ইচ্ছা ছিল তাঁর। নাট্যগোষ্ঠীর কর্ণধার বিলু দত্ত ও নির্দেশক পৌলমী চট্টোপাধ্যায়ের পরিকল্পনা সত্ত্বেও, সৌমিত্রবাবুর আকস্মিক প্রয়াণ ও অতিমারির কারণে তা স্থগিত হয়ে যায়। এ বছর মুখোমুখি-র পঁচিশ পূর্তির লগ্নে হচ্ছে সে উৎসব, সৌমিত্র-স্মরণে নামকরণ ‘আছ তুমি হৃদয় জুড়ে’। ৩১ মে থেকে ৭ জুন রবীন্দ্রসদন ও অ্যাকাডেমি মঞ্চে ১৪টি নাটক— অনীক, পূর্ব পশ্চিম, নান্দীকার, চাকদহ নাট্যজন, সায়ক, স্বপ্নসন্ধানী, নয়ে নাটুয়া, নান্দীপট, থিয়েটার ফর্মেশন কলকাতা, সংসৃতি ও মুখোমুখি-র। ‘মুখোমুখি সম্মান’ পাচ্ছেন পরাণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও ‘মনু দত্ত সম্মান’ পাবেন বাপি বসু।

কথায়, গানে

গত এক বছর ধরে ‘রামমোহন রায় পুনর্মূল্যায়ন সমিতি’র উদ্যোগে চলছে রাজা রামমোহন রায়ের জন্মের সার্ধদ্বিশতবর্ষ উদ্‌যাপন— আন্তর্জাল আলোচনা, সভা, পুস্তক প্রকাশ-সহ নানা আয়োজনে। এ বার তারই সমাপ্তি অনুষ্ঠানেও একাধিক নিবেদন— ২৭-২৮ মে আলোচনাসভা ‘দ্য মেনি ওয়র্ল্ডস অব রামমোহন’ নিয়ে, ১০ লেক টেরেসের যদুনাথ ভবন মিউজ়িয়ম অ্যান্ড রিসোর্স সেন্টার-এ। থাকবেন গৌতম ভদ্র, পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং আমেরিকা, ব্রিটেন ও বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশিষ্ট অধ্যাপকেরা। আগামী ৩০ মে, সোমবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সায়েন্স সিটির মিনি অডিটোরিয়ামে সঙ্গীতানুষ্ঠান রামমোহনের গানের ভুবন ঘিরে। তানসেন অদারঙ্গ সদারঙ্গ রামনিধি গুপ্ত কালিদাস চট্টোপাধ্যায় রঘুনাথ রায় প্রমুখ যে সঙ্গীতজ্ঞদের গান পুষ্ট করেছিল রামমোহনের সঙ্গীতমনন, শোনা যাবে তাঁদের গান। সেই সঙ্গে অবশ্যই রামমোহন রচিত গান, এবং তাঁর প্রভাবে রচিত পরবর্তী সময়ের রচয়িতাদের ব্রহ্মসঙ্গীতও।

শিল্পী স্মরণে

গল্পদাদু হিসাবে, না কি কর্ণ কুন্তী সংবাদ-এর কর্ণ রূপে, কোন ভূমিকায় পার্থ ঘোষ বেশি জনপ্রিয়, সে নিয়ে বাঙালির আলোচনা অনেক দিনের। আড়ালে রয়ে গিয়েছে কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বর্ণ-সম্মানে ভূষিত, বিরল পুতুল আর প্রাচীন রেকর্ডের সংগ্রাহক পার্থ ঘোষ নামটি। স্ত্রী গৌরী ঘোষের চলে যাওয়ার নয় মাসের মাথায় সম্প্রতি চলে গেলেন মানুষটি, দুই বাংলাতেই তাঁর গুণমুগ্ধ শ্রোতা ও অজস্র ছাত্রছাত্রীকে ছেড়ে। চন্দ্রমৌলি বন্দ্যোপাধ্যায় কথা সাজিয়ে শ্রোতা মজাতেন মঞ্চে, অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ও সাজঘরেও ছিলেন ত্রাতা— সম্প্রতি প্রয়াত তিনিও। ‘বাচিক শিল্পী সংস্থা’ দু’জনকেই স্মরণ করবে ‘চিরসখা’ অনুষ্ঠানে, আজ গিরিশ মঞ্চে বিকাল সাড়ে ৫টায়। একত্র হবেন শহরের আবৃত্তিকার ও সঙ্গীতশিল্পীরা, দেখানো হবে তথ্যচিত্র শব্দের জাদুকর।

দেখা

২৫ মে পেরিয়ে গেল, রামকিঙ্কর বেইজের জন্মদিন। সোমনাথ হোর তাঁর এক রচনায় প্রস্তাব করেছিলেন, শান্তিনিকেতন নন্দন মেলার সঙ্গে যুক্ত হোক রামকিঙ্কর ও বিনোদবিহারীর নাম। তা হয়নি, কিন্তু ফার্ন রোডের দেবভাষা বই ও শিল্পের আবাসে প্রতি বছর ২৫ মে শুরু হওয়া প্রদর্শনীর শিরোনাম হয়ে উঠেছে ‘রামকিঙ্কর উৎসব’। চলছে এ বছরও, দেবভাষার পথ চলার এক দশক পূর্তিতে এ বার একক প্রদর্শনী— শিল্পী অতুল বসুর চিত্রকৃতি নিয়ে। প্রতিকৃতি চিত্রণে অনন্য তিনি, স্বতন্ত্র নিসর্গচিত্রে, দুর্ভিক্ষ ও মন্বন্তর নিয়ে ইতিহাস গড়েছেন বাংলার যে চিত্রশিল্পীরা, অতুল বসু তাঁদেরও অগ্রপথিক। প্রতিকৃতি, নিসর্গ বা দুর্ভিক্ষ-মন্বন্তরকে নিজের শিল্পকর্মশালায় কী ভাবে দেখেছিলেন, জীবনজোড়া সেই ‘স্টাডি’ই (নীচের ছবিতে একটি) বিষয় এই প্রদর্শনীর। শিরোনামও। কোনও কোনও চিত্রকৃতি পেরিয়েছে শতবর্ষও। জীবনশিল্পী শুধু দেখে চলেন, সেই ‘দেখা’তেই নিবেদিত এই আয়োজন। প্রদর্শনী চলবে ১২ জুন পর্যন্ত, মঙ্গলবার বাদে।

লন্ডনে কালী

লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজ়িয়মে অধিষ্ঠান কুমোরটুলির কালীর! ফি-বছর এ শহর থেকে বিলেতে ও বিদেশে দুর্গাঠাকুর যায় সে জানা কথা, কিন্তু এই উদ্যোগ খানিক আলাদা— নারীশক্তির ক্ষমতায়ন বিষয়ক এক প্রদর্শনী। তারই প্রতীক হিসাবে তিন দেবী— গ্রিসের আথেনা, মিশরের সেখমেতের সঙ্গে কলকাতার কালীর উদ্বোধন হল গত ১৭ মে। আজানুলম্বিত মুণ্ডমালা, পদতলে শিব, পিছনে সোনালি চালচিত্র (ছবিতে)। এই কালীপ্রতিমা তৈরি করেছেন কুমোরটুলির কৌশিক ঘোষ। গত প্রায় ছয় দশক ধরে ক্যামডেন শহরে দুর্গাপুজো হয়ে আসছে, ‘ইউরোপের প্রথম’, দাবি উদ্যোক্তাদের। ব্রিটিশ মিউজ়িয়মের এই প্রদর্শনী-ভাবনাসূত্রেই তাদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন ক্যামডেন দুর্গাপুজো কমিটির প্রধান আনন্দ গুপ্ত, প্রদর্শনী আরও প্রাণময় হয়েছে তাঁর নির্দেশনায় রবীন্দ্র-নৃত্যনাট্য চিত্রাঙ্গদা-র পরিবেশনায়।

ঐতিহ্যের চর্চা

১৮২২-এর গ্রীষ্মে কলকাতাতেই প্রকাশিত হয় উপমহাদেশের প্রথম উর্দু সংবাদপত্র জাম-ই-জাহান নুমা— সম্পাদক লালা সদাশুখলাল, প্রকাশক হরিহর দত্ত— যাঁর পিতা তারাচাঁদ দত্ত ছিলেন রামমোহন রায়ের সম্বাদ কৌমুদী-র গোড়ার দিকের প্রকাশক। আরবি ও ফারসি শিক্ষার শতাব্দীপ্রাচীন ধারাতেই উর্দু পৌঁছেছিল বাঙালির দরবারে। ক্রমে আগ্রহ কমেছে, তবে গোটা কুড়ি উর্দু সংবাদপত্র এখনও টিকে। ১৯৭৮-এ রাজ্য সরকারের সহযোগিতায়, সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায়ের উদ্যোগে ও শান্তিরঞ্জন ভট্টাচার্যের তত্ত্বাবধানে প্রতিষ্ঠিত হয় উর্দু অ্যাকাডেমি, গত ২৪-২৬ মে তাদেরই আয়োজনে শহরে পালিত হল জাম-ই-জাহান নুমা’র দুশো বছর। দেশের স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের বিকাশে উর্দু কাগজের ভূমিকা, উর্দু ভাষা-সাহিত্যের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে বললেন ভাষাপ্রেমী বিশিষ্টজন।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement