প্রতীকী ছবি
করোনা সংক্রমণের ভয়ে ছোঁয়াচ এড়িয়ে গন্তব্যে পৌঁছতে সাইকেলের জনপ্রিয়তা রাতারাতি বেড়ে গিয়েছে কয়েক গুণ। কলকাতা থেকে বেঙ্গালুরু-দিল্লি-চেন্নাই, সব বড় শহরের রাস্তাতেই আনলক পর্বে আরও বেশি করে দেখা মিলেছে সাইকেলআরোহীদের। ইতিমধ্যেই এ শহরের কোন কোন রাস্তা দিয়ে সাইকেল চলতে পারে, তা নিয়ে প্রকল্প গ্রহণ করেছেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। সেই পরিকল্পনা নিয়েই এ বার দেশের অন্য শহরগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় নামতে চলেছে কেএমডিএ। দেশের বিভিন্ন শহরে সাইকেলচালকদের জন্য গ্রহণ করা প্রকল্পগুলির মধ্যে কোনটি বেশি উন্নততর, তা দেখা যাবে কেন্দ্রীয় সরকারের আয়োজিত ওই প্রতিযোগিতায়। যার পোশাকি নাম— ‘সাইকেল ফর চেঞ্জ চ্যালেঞ্জ’।
কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানান, মঙ্গলবারই তাঁরা তাঁদের পরিকল্পনা জমা দিযেছেন। চূড়ান্ত পরিকল্পনা অনলাইনে জমা দেওয়ার তারিখ আগামী ২১ অক্টোবর। সাইকেলআরোহীদের উৎসাহ দিতে এবং সাইকেলকে আরও জনপ্রিয় করতে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রক।
ওই মন্ত্রকের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, গ্রাম এবং শহরতলিতে তো বটেই, করোনা-আবহে বড় বড় শহরগুলিতেও অনেকেই সাইকেলের উপরে নির্ভরশীল। কিন্তু ওই সমস্ত শহরে সাইকেল চালানোর জন্য যে ধরনের পরিকাঠামো থাকা দরকার, তা নেই। ফলে কলকাতা, দিল্লি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরু-সহ দেশের একাধিক শহরকে এই প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার জন্য বেছে নেওয়া হয়েছে, যারা সরাসরি সাইকেল নিয়ে কাজ করছে। প্রতিযোগীদের মধ্যে থেকে ১১টি শহরকে পুরস্কার দেওয়া হবে।
সাইকেল সংক্রান্ত কোন পরিকল্পনা নিয়ে এই প্রতিযোগিতায় নামছে কেএমডিএ? ওই সংস্থার এক আধিকারিক জানাচ্ছেন, কলকাতায় সাইকেল চালানোর জন্য নির্দিষ্ট রাস্তার প্রয়োজন রয়েছে। কারণ, বাস যাওয়ার রাস্তায় সাইকেল চালানো ঝুঁকিপূর্ণ। এ ছাড়া সাইকেল রাখার জন্য শহরের একাধিক জায়গায় আলাদা জায়গারও প্রয়োজন রয়েছে। কোথায় কোথায় সাইকেলের জন্য ফাঁকা জায়গা রয়েছে, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই আলোচনায় বসেছে কলকাতা পুলিশ এবং কলকাতা পুরসভা। প্রাথমিক ভাবে সেই পরিকল্পনার একটি নকশাও তৈরি করা হয়েছে। তবে অক্টোবরের মধ্যে সেই সংক্রান্ত চূড়ান্ত নকশা করে তা প্রতিযোগিতার জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হবে।
সাইকেলের জনপ্রিয়তা বাড়াতে কাজ করা সংগঠন ‘কলকাতা সাইকেল সমাজ’-এর পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই এ নিয়ে আলোচনা হয়েছে কেএমডিএ কর্তৃপক্ষের। শহরে কোন কোন রাস্তা দিয়ে সাইকেল চালানো যেতে পারে, সেই ব্যাপারেও ওই সংগঠন তাদের পরিকল্পনা জমা দিয়েছে। ওই সংগঠনের আহ্বায়ক রঘু জানা বলেন, “করোনা আবহে এ শহরের নাগরিকদের একাংশের কাছে যাতায়াত করার অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠেছে সাইকেল। এ ছাড়া পরিবেশ দূষণ কমাতে এর উপযোগিতা তো রয়েইছে। তাই শহরের বেশ কিছু জায়গায় সাইকেল চালানোর ক্ষেত্রে যে সমস্ত অসুবিধা রয়েছে, তা দূর করার জন্য নতুন পরিকাঠামোর প্রয়োজন।’’