বেলেঘাটার এই বাড়িতে ডাকাতি হয়।
বছর দু’য়েক আগে আইনজীবী স্বামীর বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার মামলা করেছিলেন আইনজীবী স্ত্রী। বর্তমানে আদালতে তাঁদের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। সেই স্বামীই স্ত্রীর বাড়িতে গুন্ডা পাঠিয়ে লক্ষাধিক টাকা ডাকাতির অভিযোগে গ্রেফতার হলেন শুক্রবার। অভিযোগকারিণী কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী কোয়েল মুখোপাধ্যায় জানান, তিনি ভাবতেও পারেননি এমন কিছুও করতে পারেন তাঁর স্বামী। ঘটনায় তাজ্জব তদন্তকারীরাও।
ঘটনার সূত্রপাত গত ২২ জানুয়ারি রাতে। বেলেঘাটার সুরাহ ইস্ট রোডে কোয়েলের বাড়িতে ভয়াবহ ডাকাতি হয়। তাঁকে বন্দুক ঠেকিয়ে নগদ লাখ খানেক টাকা এবং সোনা ও রুপোর গয়না লুঠ করে নিয়ে যান কয়েকজন দুষ্কৃতী। অভিযোগের ভিত্তিতে এর আগে ছয় অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। যাঁদের মধ্যে রয়েছেন বিহারের বাসিন্দাও।
শুক্রবার শুভাশিস দাশগুপ্ত নামে সল্টলেকের এক বাসিন্দাকে চেতলা সেন্ট্রাল রোড থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তিনিই এই ডাকাতির ঘটনার মূলচক্রী বলে অনুমান পুলিশের।
পুলিশ সূত্রে খবর, লক্ষাধিক টাকা দিয়ে ভিন রাজ্যের গুন্ডা ভাড়া করে তিনি কোয়েলের বাড়িতে ডাকাতির ছক কষেন। মাসখানেক ধরে এর পরিকল্পনা করেন তিনি।
কোয়েলের দাবি, শুক্রবার ধৃত ওই ব্যক্তি আসলে তাঁর স্বামী। যিনি নিজেও কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবী বলে সূত্রের খবর। কোয়েল-শুভাশিসের বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। বেশ কিছু দিন ধরে তাঁদের বনিবনা হচ্ছিল না। তাই আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু প্রতিহিংসাবশত তিনি যে এমন কোনও কাজ করতে পারেন তা কল্পনাও করতেও পারেনি। কোয়েলের কথায়, ‘‘আমার লজ্জা লাগছে। বিয়ের আগে থেকেই আমাদের পরিচয়। ওঁকে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করেছি। পুরো ঘটনায় আমি স্তম্ভিত।’’ কোয়েল যোগ করেন, ‘‘আমরাই অনেকের হয়ে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা লড়েছি। তাঁদের কেউও তো এমন ক্ষতি করার চেষ্টা করছে বলে জানা নেই। আমার লজ্জা লাগছে যে, আমার স্বামী এমন করলেন।’’
পুলিশ সূত্রে খবর, লক্ষাধিক টাকা দিয়ে যে দুষ্কৃতীদের ভাড়া করেন শুভাশিস, তাঁদের বলা হয়, কয়েক কোটি টাকা মূল্যের জিনিস রয়েছে বেলেঘাটার ওই বাড়িতে। কিন্তু তাঁরা ডাকাতি করতে গিয়ে এমন কিছু পাননি। এর মধ্যে শুভাশিসের সঙ্গে তাঁদের ঝামেলা শুরু হয়। এই ঘটনায় সঙ্গে আরও কারও যোগ থাকতে পারে। তাঁদের সন্ধান করছে পুলিশ।