ফাইল চিত্র।
এত দিনে বেআইনি ভাবে যত সরকারি আবাসন (কোয়ার্টার) দখল হয়ে আছে তার হিসেব পেলেও উচ্ছেদ করতে আবার দশক পেরিয়ে যাবে না তো! রাজ্যকে প্রশ্ন কলকাতা হাই কোর্টের। ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি রাজেশ বিন্দলের ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার জানতে চেয়েছে, এখনও কত টাকা ভাড়া বাবদ তুলতে পেরেছে রাজ্য?
রাজ্য বিষয়টি নিয়ে সদুত্তর না দিতে পারায় আদালতের মন্তব্য, ‘‘রাজ্যের দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসাররা কি ঘুমিয়ে থাকেন? কেন তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। রাজ্যের কৌঁসুলির দাবি, তাঁরা সবাই দক্ষ অফিসার। জবাবে হাই কোর্টের কটাক্ষ, ‘‘এই দক্ষ শব্দটা ব্যবহার করবেন না। এই কাজটা তাঁদের কর্তব্যের মধ্যে পড়ে।’’
এর আগে রিপোর্ট দিতে না পারায় হাই কোর্ট ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেছিল রাজ্যকে। তার পর বুধবার কত সরকারি কোয়ার্টার দখল হয়ে আছে সে বিষয়ে রিপোর্ট জমা দেয় রাজ্য। একই সঙ্গে রাজ্য জানায় এখনও পর্যন্ত ১৯১টি দখল উচ্ছেদ করা হয়েছে। বাকিদের ব্যাপারে প্রক্রিয়া চলছে।
এ রাজ্যে সরকারি কোয়ার্টার অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের একাংশকে আজীবনের জন্য দেওয়া হয় শুনে আদালতের বিস্মিত প্রশ্ন, ‘এটা কি স্টেট স্পন্সরর্ড সিস্টেম? রাজ্য লাইসেন্স দিচ্ছে, যে যেখানে পারো দখল করো! অথচ যাঁরা এখনও চাকরি করছেন, তাঁরা কোয়ার্টার পাচ্ছেন না!’’
প্রসঙ্গত, এই মামলার আবেদনকারী চন্দ্রাবতী দেবী এক মৃত পুলিশকর্মীর স্ত্রী। পেনশন কম পাওয়ার কারণে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। তাঁর স্বামী মফিল তেওয়ারি ১৯৯২ সালের পুলিশে চাকরি থেকে অবসর গ্রহণ করেন। কিন্তু তাঁরা সরকারি আবাসনেই থাকতেন। স্বামীর পেনশনের পুরো টাকা না-পাওয়ার বিষয়ে রাজ্য সরকারের যুক্তি— স্বামীর মৃত্যুর পরও সরকারি আবাসন ছাড়েননি চন্দ্রবতী। এখনও ওই আবাসনই রয়েছেন তিনি। সে কারণেই তাঁকে কম পেনশন দেওয়া হচ্ছে।