অবশেষে: ক্ষণিকের বৃষ্টির পরে। রবিবার রাতে, কৈখালিতে। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
মরসুমের প্রথম কালবৈশাখী দেখল কলকাতা। যা তীব্র গরমের পরে কয়েক ঘণ্টার স্বস্তি আনলেও তা স্থায়ী হবে না বলেই মত আবহাওয়াবিদদের অনেকের। হাওয়া অফিস জানাচ্ছে, রবিবার সন্ধ্যার ওই কালবৈশাখীর সময়ে বাতাসের সর্বাধিক গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪৫ কিলোমিটার।
রেডার চিত্র বিশ্লেষণ করে আলিপুরের আবহবিজ্ঞানীরা দেখেছেন, এ দিন বিকেল থেকেই গাঙ্গেয় বঙ্গের উপরে বজ্রগর্ভ মেঘপুঞ্জ তৈরি হয়েছিল। যা ঝড়বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি করে। আবহবিজ্ঞানীদের ব্যাখ্যা, গত কয়েক দিন ধরেই কলকাতা ও দক্ষিণবঙ্গে প্রবল গরম বাড়ছিল। কিন্তু সে ভাবে জলীয় বাষ্পের জোগান না থাকায় মেঘ তৈরি হচ্ছিল না। শনিবার থেকেই সাগরের জলীয় বাষ্প ঢুকতে শুরু করে এবং তা গরম হয়ে বাতাসের উপরের স্তরে পৌঁছয়। যা দ্রুত ঘনীভূত হয়ে মেঘ তৈরি করে। এক আবহবিদ জানান, মেঘ তৈরি হতে গেলে গরম, জোলো বাতাসকে দ্রুত ঠান্ডা হয়ে ঘনীভূত হতে হয়। সেই কারণে বায়ুমণ্ডলের উপরের ও নীচের স্তরে তাপমাত্রার ফারাক থাকতে হয়। এই ফারাক যত বেশি হবে তত দ্রুত মেঘ ঘনীভূত হবে। এখন সেই মেঘ তৈরির অনুকূল পরিস্থিতি রয়েছে বলেও তিনি জানান। যদিও আগামী কয়েক দিনে ফের বৃষ্টিপাতের নিশ্চয়তা নেই।
তবে কিছু ক্ষণের স্বস্তিও বড় কম নয়। ধর্মতলা মোড়ে দাঁড়িয়ে অফিসফেরত এক ব্যক্তি বলেন, ‘‘সকালে অফিসে আসার সময়ে গরমে জিভ বেরিয়ে যাচ্ছিল। এখন অনেকখানি স্বস্তি হচ্ছে। কিন্তু এইটুকু বৃষ্টিতে কিছু হবে না, চাই এক-দু’দিনের টানা বৃষ্টি।’’ হাতিবাগান বাজারে বৈশাখী কেনাকাটায় আসা এক মহিলাও হাসিমুখে জানালেন, ‘‘খুব গরম ছিল। এ বার একটু স্বস্তিতে বাজার
করতে পারব।’’
এ দিনের কালবৈশাখীর জেরে শহরে গাছ ভেঙে রাস্তা আটকে যাওয়ার তেমন কোনও খবর নেই বলে লালবাজারের ট্র্যাফিক বিভাগের তরফে জানানো হয়েছে।
তা সত্ত্বেও শুধু কয়েক পশলা বৃষ্টির সুযোগে গণপরিবহণে বাড়তি ভাড়া হাঁকার রোগ দেখা যায় বলে অনেকের অভিযোগ। পার্ক স্ট্রিট থেকে বাগুইআটি যাবেন বলে ওইসময়ে অ্যাপ-ক্যাব বুক করা এক ব্যক্তির দাবি, ‘‘যে রাস্তা যেতে প্রতিদিন আড়াইশো থেকে তিনশোর মধ্যে ভাড়া ওঠে, সেটাই ৪৬০ টাকা দেখিয়েছে!’’ অভিযোগ, বৃষ্টি থেমে যাওয়ার কয়েক ঘণ্টা পরেও ভাড়া এমনই ঊর্ধ্বমুখী ছিল। আরও অভিযোগ, শোভাবাজার থেকে উল্টোডাঙা যাওয়ার অটো ভাড়া ১২ টাকার বদলে ৩০ টাকা পর্যন্ত হাঁকা হয়েছে!