East West Metro

প্লাস্টিকমুক্ত স্টেশন, কাল থেকে যাত্রীদের জন্য খুলছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো

বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠানিক ভাবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবা চালু করবেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল।

Advertisement

সোমনাথ মণ্ডল

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২০ ১২:৩০
Share:

যাত্রীদের জন্য খুলছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো। ছবি: এএফপি।

বাধা কাটিয়ে অবশেষে পথ চলা শুরু হচ্ছে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর। প্রথম পর্যায়ে আপাতত সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়ামের মধ্যে মেট্রো চলবে। তার পর ফুলবাগান, শিয়ালদহ এবং সব শেষে হুগলি নদীর তলা দিয়ে মেট্রো ছুটবে হাওড়া ময়দানের উদ্দেশ্যে। কলকাতা মেট্রো চালু হওয়ার পর, আবারও এক নতুন যুগের সাক্ষী হতে চলেছে শহরবাসী।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টায় অনুষ্ঠানিক ভাবে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো পরিষেবা চালু করবেন কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। কাল, শুক্রবার থেকে যাত্রীদের জন্যে পরিষেবা চালু হবে। সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে সল্টলেক স্টেডিয়ামের (৫.৫৪ কিমি) মেট্রো চলবে সকাল ৮টা থেকে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত পর্যন্ত। ভাড়া ধার্য করা হয়েছে ৫ থেকে ১০ টাকা।

জমি-জট, যাত্রাপথ বদল, কখনও হেরিটেজ আইনের গেরোয় বারবার প্রকল্পের তারিখ পিছিয়েছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর প্রথম পর্যায়ের পরিষেবা চালু নিয়েও একাধিকবার দিনক্ষণ বদলেছে। অবশেষে শুক্রবার থেকে ট্রেনে চড়তে পারবেন যাত্রীরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: ভয়ে লুকিয়ে ছিলেন, অভিযোগ আসুরার, সিঁথি তদন্তে নাটকীয় মোড়​

মেট্রো রেল সূত্রে খবর, আপাতত প্রথম পর্যায়ে সল্টলেক স্টেডিয়াম, করুনাময়ী, সেন্ট্রাল পার্ক, সিটি সেন্টার, বেঙ্গল কেমিক্যাল, সল্টলেক স্টেডিয়াম-এর মেট্রো চলবে। নিরাপত্তা থেকে শুরু করে পরিবেশের কথাও মাথায় রাখা হচ্ছে। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো স্টেশনগুলি একেবারে প্লাস্টিকমুক্ত হতে চলেছে। যা দেশের মধ্যে নজিরবিহীন। এর পরেও যদি কেউ স্টেশন চত্বরে প্লাস্টিক ব্যবহার করেন, তাঁদের জরিমানা করা হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিকমুক্ত সমাজ গড়া ডাক দিয়েছেন। সে কথা মাথায় রেখেই ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পথ চলা শুরু হচ্ছে। এক মেট্রো কর্তা বলেন, ‘‘উদ্বোধনের দিন থেকেই স্টেশনগুলিকে একবার ব্যহারযোগ্য প্লাস্টিক মুক্ত করার প্রয়াস শুরু হচ্ছে। এদিন অনুষ্ঠানে কোনও কিছুতেই প্লাস্টিক ব্যবহার হবে না। মেট্রোকর্মীদেরও প্লাস্টিক ব্যবহার থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। যাত্রীদেরও প্রথমে সচেতন করা হবে, যাতে তাঁরা একবার ব্যবহার যোগ্য প্লাস্টিকের ক্যারিব্যাগ বা জলের বোতল ব্যবহার না করেন।’’

সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত ২০ মিনিট অন্তর মেট্রো চলবে। যাত্রীর সংখ্যা বাড়লে ধাপে ধাপে মেট্রোর সংখ্যা বাড়ানো হবে। তখন সময়ের ব্যবধানও কমে যাবে।

ইস্ট–ওয়েস্টের ট্রেন চালানোর জন্য চালকদের বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে গত কয়েক মাস ধরে। সব ট্রেনই বাতানুকূল। প্ল্যাটফর্মে দুর্ঘটনা এড়াতে বিশেষ স্ক্রিন ডোরের ব্যবস্থা থাকছে। প্রতিটি প্রতি কামরায় ডিসপ্লে বোর্ডের সঙ্গে থাকছে সিসি ক্যামেরা। স্টেশনে থাকবে স্বয়ংক্রিয় টিকিট ভেন্ডিং মেশিন। সেক্টর ফাইভ স্টেশনে পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে। হঠাৎ কোনও বিপদ ঘটলে অথবা আপৎকালীন পরিস্থিতিতে চালকের সঙ্গে কথা বলার জন্য মাইক্রোফোনও থাকছে। কলকাতা মেট্রোর স্মার্ট কার্ডও ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় যাতায়াতের সময় ব্যবহার করা যাবে।

আরও পড়ুন: চ্যালেঞ্জের মুখে অমিত শাহের ‘চাণক্য’ তকমা​

২০০৮ সালে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে হুগলি নদীর তলা দিয়ে হাওড়া ময়দান পর্যন্ত ইস্ট-ওয়েস্ট প্রকল্পটি রুপায়নের কাজ শুরু হয়। তখন প্রকল্পের দৈঘ্য ছিল ১৩.৭৬ কিলোমিটার। পরে রুট পরিবর্তনের কারণে দৈর্ঘ্য বেড়ে হয় ১৪.৬৭ কিলোমিটার। তার মধ্যে মাটির তলা দিয়ে সুড়ঙ্গের দৈর্ঘ্য (ফুলবাগান থেকে হাওড়া ময়দান) ১০.৫৩ কিলোমিটার। বৌবাজার এবং দত্তাবাদে জমিজটে মেট্রোর রুটের পরিবর্তন হয়। এর পর মেট্রোর যাত্রাপথ নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা শুরু হয় ২০১৫ সালে। নতুন রুটে সম্মত্তি জানায় রেলবোর্ড এবং বিনিয়োগকারী সংস্থা জাইকা। ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর জন্যে কোচ নির্মাণের বরাত দেওয়া হয় বেঙ্গালুরুর সংস্থা ভারত আর্থ মুভার্স লিমিটেডকে।

আজ কড়া নিরাপত্তার মধ্যে উদ্বোধন অনুষ্ঠান হতে চলেছে। রেলমন্ত্রীর পাশাপাশি উদ্বোধনে থাকার কথা কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়, রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু সহ বিশিষ্টজনেরা। নিরাপত্তার জন্যে অনুষ্ঠানের জায়গা এবং স্টেশনে ক্লোজড সার্কিট ক্যামেরায় (‌সিসি ক্যামেরা)‌ নজরদারি থাকবে। বিধাননগর পুলিশ ছাড়াও, নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকছে আরপিএফের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement