SFI

দুই কন্যাকে মাথায় এনে এসএফআইয়ের কলকাতা জেলা সম্মেলনে ‘ইতিহাস’, ভাঙন ‘কট্টরপন্থী’ শিবিরে

এসএফআইয়ের ইতিহাসে বাংলায় কখনও কোনও জেলায় একসঙ্গে দুই শীর্ষপদে মহিলা মুখ দায়িত্ব পায়নি। দেশেও কোনও জেলায় এমন নজির রয়েছে কি না অনেকেই মনে করে বলতে পারছেন না।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০২৪ ১২:৩৩
Share:

(বাঁ দিকে) দিধীতি রায়। বর্ণনা মুখোপাধ্যায় (ডান দিকে)। ছবি: সংগৃহীত।

সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের কলকাতা জেলার সম্মেলনে বেনজির ঘটনা ঘটল শনিবার রাতে। সংগঠনের জেলা সম্পাদক ও সভাপতি দুই শীর্ষপদেই নির্বাচিত হয়েছেন দুই তরুণী। দিধীতি রায় এবং বর্ণনা মুখোপাধ্যায়। এসএফআইয়ের ইতিহাসে বাংলায় কখনও কোনও জেলায় একসঙ্গে দুই শীর্ষপদে মহিলা মুখ দায়িত্ব পায়নি। দেশেও কোনও জেলায় এমন নজির রয়েছে কি না অনেকেই মনে করে বলতে পারছেন না। এই ঘটনাকে ‘ঐতিহাসিক’ আখ্যা দিচ্ছেন সিপিএমের ছাত্রনেতারা। কিন্তু আবার এই ‘ঐতিহাসিক’ সম্মেলনকে কেন্দ্র করেই কলকাতা জেলা সিপিএমের মধ্যেকার দ্বন্দ্ব সামনে চলে এসেছে। আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, এর প্রভাব ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সম্মেলনে পড়বে কি না তা নিয়ে।

Advertisement

কলকাতা সিপিএমে ‘কট্টরপন্থী’দেরই পাল্লাভারী। কয়েক বছর আগে সিপিএমের কলকাতা জেলা সম্মেলনে মধ্যরাত পর্যন্ত ভোটাভুটি দলের মধ্যে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিল। সেই সময়ে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট চেয়েছিল অধুনা প্রয়াত রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী মানব মুখোপাধ্যায়কে জেলা সম্পাদক করতে। কিন্তু পাল্টা নাম এনে কল্লোল মজুমদারকে বিপুল ভোটে জিতিয়ে জেলা সম্পাদক করা হয়েছিল। সেই থেকে তাঁরাই জেলা কমিটি ও সম্পাদকমণ্ডলীতে সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু এ বারের ছাত্র সম্মেলনকে কেন্দ্র করে সেই শিবিরেই ভাঙন ধরেছে বলে খবর।

সূত্রের খবর, সভাপতি কে হবেন তা নিয়ে সিপিএমে মতভেদ ছিল দলে। সেই প্রেক্ষাপটে কট্টরপন্থী শিবিরের চার জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য শিবির বদলে উল্টো দিকে ঝোঁকেন। সেই তালিকায় রয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন এক মন্ত্রীও। সিপিএমের কারও কারও মতে, আসলে মহিলা সমিতির জেলা সম্মেলনে নেতৃত্ব নির্বাচনের ‘ঋণ শোধ’ করা হল ছাত্র সম্মেলনে। সেই সময়ে কিছু নরমপন্থী নেতা কট্টরপন্থী অংশের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। এ বার সেই ঋণই শোধ করা হল। তবে দলের মধ্যে যে খানিক অবিশ্বাসের বাতাবরণও তৈরি হয়েছে তা ঘরোয়া আলোচনায় মানছেন অনেকেই।

Advertisement

ভিতরের দ্বন্দ্ব যা-ই থাক, দুই কন্যাকে নেতৃত্বে আনাকেই প্রকাশ্য প্রচারে রাখতে চাইছে সিপিএম। প্রসঙ্গত, দিধীতি এবং বর্ণনা দু’জনেই উত্তর ২৪ পরগনার মেয়ে। প্রথম জনের বাড়ি রাজারহাটের নারায়ণপুরে, দ্বিতীয় জন থাকেন সোদপুরে। পড়াশোনার সুবাদে তাঁরা কলকাতায় এসএফআই করেন। অতীতে কলকাতায় কনিনীকা ঘোষ সম্পাদক হয়েছিলেন। তার বেশ কয়েক বছর পর জেলা সভাপতি হয়েছিলেন মধুজা সেন রায়। মধুজা দু’মেয়াদ রাজ্য সভাপতিও ছিলেন। কিন্তু এক সঙ্গে জেলা সম্পাদক ও সভাপতি পদে দুই তরুণীকে দায়িত্ব দেওয়া কখনও হয়নি।

সম্প্রতি বামেদের মধ্যে যুবনেত্রী মিনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে ঘিরে উৎসাহ তৈরি হয়েছে। তাঁকে ঘিরে ব্রিগেডের মহাসভাও উদ্বেল হয়েছিল। হতে পারে সে কারণেই আরও বেশি করে মেয়েদের দায়িত্ব দিতে চাইছে সিপিএম।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement