ফাইল চিত্র।
করোনার ধাক্কা শুরু হওয়ার আগে গত মার্চের গোড়ায় দেশের অভ্যন্তরে যত বিমান উড়ত, এখন উড়ছে তার প্রায় ৭৫ শতাংশ। ফলে কোনও উড়ান সংস্থাই তাদের ১০০ শতাংশ বিমান ব্যবহার করতে পারছে না। সেগুলি দাঁড়িয়ে রয়েছে দেশের বিভিন্ন বিমানবন্দরের পার্কিং বে-তে। কলকাতাও ব্যতিক্রম নয়। এর ফলে বিমানবন্দরে খালি পার্কিং বে-র সংখ্যা কমে গিয়েছে। নতুন করে পার্কিং বে তৈরির যে কাজ এত মাস থমকে ছিল কলকাতায়, এই পরিস্থিতিতে তা আবার চালু করেছেন বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
কলকাতা বিমানবন্দরের অধিকর্তা কৌশিক ভট্টাচার্য শুক্রবার জানিয়েছেন, ১৯টি পার্কিং বে তৈরির কাজ ফের শুরু হয়েছে। আগামী বছরের গোড়ায় তার মধ্যে কয়েকটি প্রস্তুত হয়ে যাবে। বাকিগুলির কাজ শেষ হবে ২০২১ সালের মাঝামাঝি। তিনি বলেন, ‘‘দিল্লি, মুম্বই, কলকাতা-সহ দেশের বড় বিমানবন্দরগুলির অনেক পার্কিং বে এই বিমানগুলি দাঁড়িয়ে থাকার জন্য ব্যবহার করা যাচ্ছে না। কলকাতায় এমন ১২টি পার্কিং বে আটকে আছে। এখানে পার্কিং বে আটকে না রেখে গুয়াহাটি বা ভুবনেশ্বরের মতো তুলনায় ছোট বিমানবন্দরে বিমানগুলিকে নিয়ে গিয়ে রাখতে আমরা উড়ান সংস্থাগুলিকে অনুরোধ করেছিলাম। কিন্তু সেখানে বিমান রক্ষণাবেক্ষণের পরিকাঠামো নেই, এই যুক্তি দেখিয়ে তারা সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দিয়েছে।’’
কলকাতায় আগে থেকেই জেট এয়ারওয়েজ় এবং স্পাইসজেটের দু’টি বোয়িং বিমান পার্কিং বে আটকে রয়েছে। স্পাসইসজেটের বিমানের ইঞ্জিন নিয়ে বিতর্ক ওঠার পরে বিমান পরিবহণের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল এভিয়েশন (ডিজিসিএ) সেগুলি বসিয়ে দেয়। একই সমস্যার কারণে গো এয়ারের দু’টি এয়ারবাসও বসে রয়েছে। নিয়মিত উড়তে না পারার জন্য এয়ার ইন্ডিয়া, ইন্ডিগো এবং স্পাইসজেটের আরও আটটি বিমান পার্কিং বে আটকে দাঁড়িয়ে রয়েছে। বিমানবন্দরের ভিতরে নারায়ণপুরের দিকে, যেখানে নতুন হ্যাঙ্গার (বিমানের গ্যারাজ) তৈরি হয়েছে, তার সামনে থাকা ছ’টি পার্কিং বে-তে এই ১২টি বিমানের মধ্যে ছ’টিকে ইতিমধ্যেই সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই মুহূর্তে কলকাতায় সক্রিয় রয়েছে ৫৩টি পার্কিং বে। তার মধ্যে ছ’টি আটকে রয়েছে এই বিমানগুলির জন্য। অধিকর্তার কথায়, ‘‘এখন উড়ান সংখ্যা তুলনায় কম। কিন্তু ধীরে ধীরে তা বাড়ছে। এই মুহূর্তে কলকাতা থেকে গড়ে ২৫২টি উড়ান ওঠানামা করছে। আগামী দিনে আরও বাড়বে। নতুন পার্কিং বে তৈরির কাজ আগেই শুরু হয়েছিল। কিন্তু লকডাউনের জন্য তা বন্ধ হয়ে যায়। তার পরে চলে আসে বর্ষা। তখন কাজ বন্ধ রাখতে হয়। এখন আবার কাজ শুরু হয়েছে।’’কলকাতা বিমানবন্দরের ভিতরে এখন দমকলের নতুন দফতর হয়েছে। পুরনো যে দফতর ছিল সেটি ভেঙে, পুরনো হ্যাঙ্গার ভেঙে সেখানে পার্কিং বে তৈরি হচ্ছে। এ ছাড়াও ছোট বিমান দাঁড় করানোর জন্য কিছু পার্কিং বে ছিল। বড় করা হচ্ছে সেগুলিও।