প্রতীকী ছবি।
নিকাশি নালার জল ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে পরিশোধন করে টালি নালায় ফেলা হবে বলে অনেক দিন আগেই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। ওই প্রকল্পের জন্য জমিও বরাদ্দ করেছিলেন কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ। কিন্তু টালিনালার ধারে জবরদখল উচ্ছেদ নিয়ে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের মতান্তরের জেরে আটকে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় বরাদ্দ। সম্প্রতি ‘নমামি গঙ্গে’ প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় ৩০৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে। এ বার সেই টাকায় টালিনালার ওই প্রকল্প তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর জন্য ডাকা হয়েছে দরপত্র। শুধু ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরিই নয়, টালিনালার ‘ড্রেজিং’ করতেও কেন্দ্রীয় অর্থ খরচ করা হবে বলে জানিয়েছেন কলকাতা পুরসভা কর্তৃপক্ষ।
রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন দফতর সূত্রের খবর, টালিনালার ধারে তিনটি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরির জন্য কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ বছর তিনেক আগে দু’টি জমি বরাদ্দ করেন। এ ছাড়া, কলকাতা পুলিশের একটি জমিও পাওয়া গিয়েছে। ওই তিন জায়গায় ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরি করার কথা কলকাতা পুরসভার। হুগলি নদীর ধার বরাবর নিকাশির বেশ কিছু প্রকল্প কেএমডিএ নিয়ন্ত্রণ করলেও টালিনালার সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব আপাতত পুরসভার উপরেই ন্যস্ত।
তা হলে সমস্যা কোথায়?
পুরসভার এক আধিকারিক জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের শর্ত অনুযায়ী, টালিনালার সংস্কার এবং ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরির জন্য টালিনালার পাড় থেকে জবরদখলকারীদের সরাতে হবে। তা না করলে ওই প্রকল্পে কোনও অর্থ বরাদ্দ করা হবে না বলে জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। এর পরেই ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরির পরিকল্পনা আটকে যায়। টালিনালার দায়িত্বপ্রাপ্ত মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরি এবং নিকাশির সংস্কারের সঙ্গে ঝুপড়ি উচ্ছেদের কোনও সম্পর্ক নেই। কেন্দ্র নিকাশি সংস্কারের খাতেই অর্থ বরাদ্দ করার কথা জানিয়েছিল।’’ তিনি জানান, পরবর্তীকালে পুরসভা ও কেন্দ্রীয় সরকারের মধ্যে আলোচনায় বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়। প্লান্টের পূর্ণাঙ্গ প্রকল্প রিপোর্ট কেন্দ্রকে ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে। সেই সংক্রান্ত অনুমোদনও এসে গিয়েছে। পুরসভা দ্রুত কাজ শুরু করতে দরপত্রও ডেকেছে।
কেন্দ্রীয় সরকারের এক আধিকারিক জানান, নয়া নিকাশি পথ এবং প্লান্ট তৈরির আগে ঝুপড়ি না সরালে ফের জল দূষণের সমস্যা হতে পারে। সেই কারণেই পুর কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। পুর কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, পরবর্তী পর্যায়ে অন্য প্রকল্পের ক্ষেত্রে বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।
পুরসভা সূত্রের খবর, টালিগঞ্জ ফাঁড়ি থেকে গড়িয়া পর্যন্ত টালিনালার যে অংশ রয়েছে, তার পাশেই পাটুলির বৃজি এলাকা, টালিগঞ্জের চণ্ডী ঘোষ রোড এবং গল্ফ গার্ডেনে ওই তিনটি ট্রিটমেন্ট প্লান্ট তৈরি হবে। আশপাশের নিকাশির নোংরা জল সরাসরি টালিনালায় না ফেলে ট্রিটমেন্ট প্লান্টের মাধ্যমে পরিস্রুত করে ফেলা হবে। হেস্টিংস থেকে টালিনালা সংলগ্ন বাকি অংশের নিকাশির জল টালিনালার পরিবর্তে হাজরা, রাসবিহারী এবং এ জে সি বসু রোডের মূল নিকাশি নালায়
ফেলা হবে।