—ফাইল চিত্র।
আমপানের পরে এখনও পুরোপুরি পরিষ্কার করা যায়নি রবীন্দ্র সরোবর চত্বর। নিজস্ব পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও সরোবর চত্বরের আগাছা তো বটেই, এমনকি জলাশয় কেন পরিষ্কার করা হয়নি, তা নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠেছে। আপাতত সেই সমস্যা মেটাতে পরিবেশকর্মীদের সহযোগিতায় কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ সরোবর পরিষ্কারের সিদ্ধান্ত নিলেন।
আজ, বৃহস্পতিবার এবং আগামী কাল, শুক্রবার পরিবেশকর্মীরা রবীন্দ্র সরোবরে জলাশয় পরিষ্কার ছাড়াও চত্বর সাফাই করবেন। তবে প্রশ্ন উঠেছে, আমপানের পরেও সরোবর পরিষ্কার করা হয়নি কেন? বিক্ষিপ্ত ভাবে চত্বরের মধ্যে যে প্লাস্টিক বা প্লাস্টিকের জিনিস পড়ে থাকে সেগুলিও অনেক সময়েই পরিষ্কার করা হয় না বলে অভিযোগ উঠেছে।
কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ জানান, পরিবেশ-বিধি মেনে জলাশয় পরিষ্কার করার কথা বলেছিল বিশেষজ্ঞ কমিটি। সেই কারণেই কেএমডিএ কর্তৃপক্ষ তাঁদের একাংশকে সঙ্গে নিয়ে এই অভিযানে নামতে চান। কর্তৃপক্ষের আরও বক্তব্য, আমপানের পরে অর্থ সংক্রান্ত কারণেই চত্বর পরিষ্কার করতে দেরি হয়েছে। তবে বর্তমানে চত্বরের বেশির ভাগ অংশই পরিষ্কার করা হয়েছে। জলাশয়ের জলের নমুনাও ঠিক রয়েছে বলে কর্তৃপক্ষের দাবি।
সরোবরের জলের ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়?
পরিবেশকর্মীরা জানিয়েছেন, শীতের সময়ে সরোবরের জলের উপরিভাগে পাতলা তৈলাক্ত আস্তরণ তৈরি হয়েছে। কোনও কোনও অংশে ওই আস্তরণের রং হাল্কা সবুজ। ওই আস্তরণ
পরিষ্কার করা ছাড়াও ভাসমান প্লাস্টিকের জলের বোতল বা অন্যান্য বর্জ্যও সরিয়ে ফেলা হবে। পরিবেশকর্মী সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, “জলাশয় পরিষ্কার তো করাই হয় না। তার উপরে পুরো সরোবর চত্বর জুড়েই ছড়িয়ে রয়েছে প্লাস্টিক-সহ বিভিন্ন বর্জ্য। এগুলি শুধু সরিয়ে দিলেই হবে না, ভবিষ্যতে প্লাস্টিকজাত দ্রব্য যাতে কোনও ভাবে সরোবর চত্বরে প্রবেশ না করে, তার জন্য নজরদারির প্রয়োজন। বারবার বলা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ কোনও ব্যবস্থা নেননি। সরোবরে বেশি মানুষ প্রবেশ করলে চত্বর অপরিষ্কার হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে।’’
পরিবেশ বিজ্ঞানী এবং রবীন্দ্র সরোবরে পরিবেশ সংরক্ষণের বিশেষজ্ঞ কমিটির অন্যতম সদস্য অনির্বাণ রায় বলেন, “জলের উপরে বিভিন্ন রকমের স্তর পড়ে। জলে কচুরিপানা থাকলে তৈলাক্ত সাদা স্তর বেশি হয়। শেওলা থাকার ফলে কোথাও এই চাদরের রং সবুজ হয়। ভাসমান বর্জ্য থাকলেও সেগুলি সরানো দরকার। জলাশয় পরিষ্কার রাখতে এগুলি মেনে চলা প্রয়োজন।’’
অন্য দিকে, চলতি সপ্তাহ থেকে দুপুরেও রবীন্দ্র সরোবর এবং সুভাষ সরোবর খোলা থাকবে বলে জানিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। এত দিন সকাল এবং বিকেলের নির্দিষ্ট সময়ে সরোবর দু’টি খোলা থাকছিল।