রবীন্দ্র সরোবর। নিজস্ব চিত্র
রবীন্দ্র সরোবরের দূষণ নিয়ে যত আলোচনাই হোক না কেন, সরোবরের জল ও বাতাসের গুণমান ঠিক আছে। জাতীয় পরিবেশ আদালতে হলফনামা দিয়ে জল ও বাতাসের মান ‘সন্তোষজনক’ জানাল কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। সংস্থা জানিয়েছে, গত বছরের ছটপুজোর পর থেকে প্রতি মাসে সরোবরের জলের মান পরীক্ষা করা হয়েছে। সঙ্গে বাতাসের দূষণের মাত্রা সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। উভয় ক্ষেত্রেই মান ‘সন্তোষজনক’ এসেছে।
শুক্রবারই রবীন্দ্র সরোবর নিয়ে পরিবেশ আদালতে মামলা ছিল। সরোবরে চলতি বছরে ছটপুজো হলে কেএমডিএ-র বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েওছে আদালত। পরিবেশকর্মীদের একাংশের বক্তব্য, শুধু ছটপুজো বন্ধ নয়, সরোবরের সার্বিক দূষণ নিয়ন্ত্রণে নজর দেওয়া প্রয়োজন। কারণ, সরোবরের দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে ইতিমধ্যেই একাধিক নির্দেশ দিয়েছে পরিবেশ আদালত। সেগুলিতে গুরুত্ব না দিলে আদালত অবমাননা করা হবে। সরোবরে ছটপুজো বন্ধ করা নিয়ে মামলা করেছিলেন পরিবেশকর্মী সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘সরোবরে হকারদের প্রবেশ নিয়ন্ত্রিত করতে বলেছিল আদালত। কারণ, তাঁরাই সরোবর এলাকা বেশি নোংরা করেন। স্টোভ জ্বালান, প্লাস্টিক ফেলেন তাঁরাই। সেখানে নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে কোথায়?’’ রবীন্দ্র সরোবরের দূষণ নিয়ে অন্য একটি মামলা দায়ের করেছেন পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত। এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘‘দূষণ নিয়ন্ত্রণ সারা বছরের ব্যাপার। কোনও নির্দিষ্ট এক বা দু’দিনের বিষয় নয়। কিন্তু রবীন্দ্র সরোবরে সেটাই হচ্ছে না!’’
যদিও সরোবরের দূষণ নিয়ন্ত্রণে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা পরিবেশ আদালতকে জানিয়েছে কেএমডিএ। সংস্থা সূত্রের খবর, প্লাস্টিকের বোতলের ব্যবহার এড়াতে সেখানে সাতটি পানীয় জলের কিয়স্ক হয়েছে। চত্বরে ৫০০টি গাছের চারাও রোপণ করা হয়েছে। শুধু তাই নয়, গত মাসেই লেক ক্লাবে ‘ইকো হাইড্রোলজি অব কলকাতা উইথ স্পেশ্যাল রেফারেন্স টু রবীন্দ্র সরোবর’ শীর্ষক একটি আলোচনাসভার আয়োজন করেছিল সংস্থা। সরোবর নিয়ে সচেতনতা প্রচারের জন্য আয়োজিত ওই সভায় শিক্ষক-পড়ুয়ারা উপস্থিত ছিলেন। স্থানীয় পুর প্রতিনিধি, পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গেও যে বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছিল, তা সংশ্লিষ্ট হলফনামায় জানিয়েছে কেএমডিএ। সংস্থার আইনজীবী পৌষালী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘সরোবর নিয়ে সচেতনতা প্রচারের জন্য লিফলেট বিলি করা হচ্ছে। পরিবেশ আদালতের নির্দেশ মতো দূষণ নিয়ন্ত্রণের সমস্ত পদক্ষেপই করা হচ্ছে।’’