ছবি: সংগৃহীত।
৩০ বছরের মেয়াদি চুক্তি শেষের মুখে। এ বার তাই নিউ মার্কেটের (নিউ কমপ্লেক্স) ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তির নবীকরণ করতে চলেছে কলকাতা পুরসভা।
নতুন চুক্তিতে নতুন হারে ভাড়া ধার্য করার প্রস্তাবও গৃহীত হয়েছে। সেই সঙ্গে যাঁরা এখনও পুরসভার সঙ্গে চুক্তি করেননি, অথচ সেখানে ব্যবসা করছেন, তাঁদেরও চুক্তির আওতায় আনা হবে বলে পুরসভা সূত্রের খবর। নিউ মার্কেট নিয়ে এই সক্রিয়তার পিছনে অনেকগুলি কারণ রয়েছে বলে জানাচ্ছেন পুরকর্তারা। ৪৭টি পুর বাজার রক্ষণাবেক্ষণ করতে পুরসভার প্রতি বছর প্রায় সাড়ে ১০ কোটি টাকা খরচ হয়।
অথচ সেই খাত থেকে পুরসভার আয় হয় নামমাত্র। কারণ, সব বাজারের ব্যবসায়ীরাই পুরনো হারে ভাড়া দিয়ে ব্যবসা করেন। যেমন নিউ মার্কেটের ক্ষেত্রেই বর্তমান ভাড়ার হার বর্গফুট পিছু সাড়ে ৩-৪ টাকা। নিউ মার্কেটের (নতুন কমপ্লেক্স) দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলের মোট ৫২৫ জন ব্যবসায়ীর থেকে বর্গফুট পিছু গড়ে ওই টাকাই ভাড়া পায় পুরসভা।
ওই ব্যবসায়ীদের অনেকেই পুরসভার সঙ্গে কোনও চুক্তি না করায় পরিস্থিতি জটিল হয়েছে। তবুও তাঁরা সেখানে ব্যবসা করে যাচ্ছেন। পুরসভার তরফে বহু বার বলা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা তা কানে তোলেননি। এই ‘অনিয়ম’ রুখতে নতুন চুক্তিতে পুরসভা শর্ত আরোপ করছে যে, ব্যবসায়ীদের চুক্তির আওতায় আসতেই হবে। বাজার দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘১৯৯০ সাল নাগাদ নিউ মার্কেটের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে চুক্তি করেছিল পুরসভা। এখন তা শেষের মুখে। সে কারণেই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নতুন ভাবে চুক্তি করা হবে।’’
প্রসঙ্গত, ১৯৮৫ সালে এক অগ্নিকাণ্ডে স্যার স্টুয়ার্ট হগ মার্কেটের (বর্তমানে যা নিউ মার্কেট) একাংশ ভস্মীভূত হয়ে গিয়েছিল। সেটিকে নতুন ভাবে তৈরি করার জন্য এক বেসরকারি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল পুরসভার। ওই সংস্থাই ব্যবসায়ীদের দোকান বিতরণের ক্ষেত্রে সে সময়ে মুখ্য ভূমিকা নিয়েছিল। কিন্তু ‘মডেল লিজ চুক্তি’ নিয়ে আপত্তি থাকায় অনেক ব্যবসায়ীই তখন পুরসভার সঙ্গে সমঝোতায় আসতে চাননি। ২০০৫ সালে এক বার ব্যবসায়ীদের চুক্তির আওতায় আনার চেষ্টা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি।
এ বার আপস করতে নারাজ পুরসভা। এক পুরকর্তার কথায়, ‘‘বাজার রক্ষণাবেক্ষণ করতে গিয়ে পুর ভাঁড়ারে চাপ পড়ছে। ক্ষতি হচ্ছে পুরসভার। ব্যবসায়ীদের সঙ্গে নতুন চুক্তির সময়ে যাতে সেই ক্ষতি কিছুটা পূরণ করা যায়, সেই চেষ্টাই হচ্ছে।’’