উল্টোডাঙার শুঁড়িরবাগান বস্তিতে বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে তার। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
বিপজ্জনক ভাবে ঝুলে রয়েছে বিদ্যুতের তার। তা এতটাই নিচু দিয়ে গিয়েছে যে, বিপদ ঘটতে পারে যে কোনও সময়ে। ওজনের ভারে ছিঁড়েও পড়তে পারে সেই তার। এমন আশঙ্কা মাথায় নিয়েই বসবাস করছেন শহরের বেশির ভাগ বস্তিবাসী।
কলকাতা পুরসভা সূত্রের খবর, শহরে তিন হাজার বস্তির মধ্যে বেশির ভাগেই বিদ্যুতের তার বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে। বিপদ এড়াতে তাই তার ঠিক পদ্ধতিতে নিয়ে যেতে সমীক্ষা করবে পুরসভা। মেয়র পারিষদ (বস্তি) স্বপন সমাদ্দার বলেন, ‘‘অধিকাংশ বস্তিতে বিদ্যুতের তার থেকে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। কোন কোন বস্তির বিদ্যুতের তারের কী অবস্থা, তা জানতে প্রথমে পুরসভা, দমকল ও সিইএসসি একযোগে সমীক্ষা করবে। কী ভাবে তার নিয়ে গেলে বিপদ কাটবে, তা দমকল, পুর আলো বিভাগ ও সিইএসসি বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেবে।’’
উল্টোডাঙার শুঁড়িরবাগান, গুরুদাস দত্ত গার্ডেন লেনের মতো একাধিক বস্তির বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, সেখানে বিদ্যুতের তার বিপজ্জনক ভাবে ঝুলছে বছরের পর বছর। ২ নম্বর গুরুদাস দত্ত গার্ডেন লেনের বস্তিতে গিয়ে দেখা গেল, প্রতিটি বাড়ির উপরে ঝুলছে মোটা তারের কুণ্ডলী। স্থানীয় কাউন্সিলর তথা বরো চেয়ারম্যান অনিন্দ্যকিশোর রাউতের কথায়, ‘‘এই সমস্যার কথা পুরসভাকে একাধিক বার জানানো হয়েছে। সমীক্ষার কাজ শেষ হয়ে দ্রুত কাজ শুরু হলে বস্তিবাসীরা উপকৃত হবেন।’’ তবে শহরের বেশির ভাগ বস্তিতে ঢুঁ মারলেই বিদ্যুতের তারের এই বিপজ্জনক ছবি চোখে পড়বে বলে অভিযোগ। দমকল সূত্রের খবর, অতীতে ওই তার থেকে শর্ট সার্কিট হয়ে বস্তি এলাকায় আগুন লেগেছে। দমকলের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘বস্তি এলাকার ঝুলে থাকা ওই বিদ্যুতের তার থেকে গরমের সময়ে বিপদের আশঙ্কা আরও বাড়ে। তারগুলি উঁচু দিয়ে, নির্দিষ্ট পাত্রের মধ্যে দিয়ে নিয়ে গেলে ঝুঁকি কমে।’’
মেয়র পারিষদ (আলো) সন্দীপরঞ্জন বক্সীর কথায়, ‘‘বস্তির বিদ্যুতের তারগুলি বিপন্মুক্ত করার ভাবনা চলছে। প্রথমে পুরসভার বস্তি এবং আলো বিভাগ ছাড়াও দমকল বস্তি ধরে ধরে সমীক্ষা করবে। পরে তারগুলি নির্দিষ্ট ট্রে-র মধ্যে ঢুকিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। বিদ্যুতের তার থেকে যাতে বিপদ না হয়, তার উপরে জোর দেওয়া হচ্ছে।’’ তিনি জানান, প্রতিটি ওয়ার্ডের কাউন্সিলরদের কাছেও এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়েছে। কোন ওয়ার্ডে বস্তির বিদ্যুতের তারের জটের অবস্থা কেমন, তা নিয়ে কাউন্সিলরেরাও রিপোর্ট দেবেন।