প্রতীকী ছবি।
ফাঁকা জায়গায় জঞ্জাল জমা করে তা পোড়ানো হলে ৫ থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। জঞ্জাল পোড়াতে শহরের যত্রতত্র আগুন জ্বালানোর ঘটনা আকছার ঘটে। হামেশাই কলকাতার বিভিন্ন স্থানে সেই দৃশ্য নজরে পড়ে। বর্তমানে যে হারে শহরে পরিবেশ দূষণ বাড়ছে তাতে চিন্তিত পুর প্রশাসন। উদ্বিগ্ন পরিবেশ আদালতও। ওই ধরনের আগুন জ্বালানোর ঘটনা বন্ধ করতে কলকাতা পুরসভাকেও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, কোনও ব্যক্তি, সংস্থা, নির্মাণকাজে যুক্ত সংস্থা, স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, ছাত্রাবাস, হোটেল— কেউ কোথাও জমিতে জঞ্জাল পোড়াতে পারবেন না। এর পরেও কেউ তা করলে সেই ব্যক্তি বা সংস্থার বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। পরিবেশ আদালতের ভাষায় বলা হচ্ছে ‘এনভায়রনমেন্টাল কমপেনসেশন’।
জাতীয় পরিবেশ আদালতের ওই নির্দেশ পাওয়ার পরে গত ২৪ জুলাই পুরসভার মেয়র পরিষদের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে প্রস্তাব তোলা হয়। পুরসভা সূত্রের খবর, জাতীয় পরিবেশ আদালত পুরসভাকে যে বিষয়ে সতর্ক করেছে, তা নিয়ে আগে থেকেই পুরসভার আইন ছিল। কিন্তু তা কার্যকর করা হয়নি। এ বার পরিবেশ আদালতের চাপে তৎপরতা বেড়েছে পুর প্রশাসনের। এ বিষয়ে শনিবার কলকাতা পুরসভার কঠিন বর্জ্য অপসারণ দফতরের মেয়র পারিষদ দেবব্রত মজুমদার বলেন, ‘‘জঞ্জাল পোড়ানো হলে জরিমানা করার ব্যবস্থার কথা কলকাতা পুর আইনে বলা রয়েছে। এ বার পরিবেশ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী সেই ব্যবস্থা নেওয়ার কাজ শুরু করা হবে।’’ আইন থাকলেও তা বলবৎ না করা যে তাঁদের ভুল হয়েছে, তা স্বীকার করেছেন পুরসভার এক কর্তা। তিনি বলেন, ‘‘মানবিক কারণ দেখিয়ে অনেক কিছুই করা যায় না। যদিও এই ঘটনার সঙ্গে কোনও মানবিক কারণ নেই।’’
পুরসভার বৈঠকে তোলা ওই প্রস্তাবে বলা হয়েছে, মাঠে, জমিতে, রাস্তায় বা যে কোনও জায়গায় কম পরিমাণ জঞ্জাল পোড়ানোর চেষ্টা হলে ৫ হাজার টাকা জরিমানা দিতে হবে। আর তার পরিমাণ আরও বেশি হলে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করা হবে। ওই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত সংস্থা বা ব্যক্তিকে নোটিস পাঠাবে পুরসভা। সেখানেই জরিমানা দেওয়ার কথা বলা হবে। পুরসভার কঠিন বর্জ্য অপসারণ দফতরের সহকারী অধিকর্তা, সুপারভাইজার এবং ওভারসিয়ারেরা ওই ধরনের ঘটনা রোখার দায়িত্বে থাকবেন। তাঁরাই জরিমানা করার অধিকারী হবেন। সেই জরিমানার টাকা পুরসভার কোষাগারে জমা পড়বে। বৈঠকে প্রস্তাবটি গৃহীত হওয়ার পরে দ্রুত কাজ শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে।