ফাইল চিত্র।
শহরের বায়ুদূষণ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, জলাশয় সংরক্ষণ, নিকাশি পরিশোধন প্লান্ট-সহ বর্তমানে কলকাতা পুরসভার মোট ১১টি মামলার শুনানি চলছে জাতীয় পরিবেশ আদালতে। সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি নিয়ে নির্দিষ্ট নীতি তৈরি ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য পুর কর্তৃপক্ষকে নানা সময়ে নির্দেশও দিয়েছে আদালত। সেই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতে কী কী কাজ হয়েছে, তার জন্য জঞ্জাল অপসারণ, নিকাশি, পানীয় জল এবং পরিবেশ ও ঐতিহ্য দফতরকে ‘অ্যাকশন টেকেন’ রিপোর্ট তৈরি করতে বলেছেন পুর কর্তৃপক্ষ। তার জন্য সময়ও বেঁধে দেওয়া হয়েছে বলে পুরসভা সূত্রের খবর।
সাম্প্রতিক সময়ে জাতীয় পরিবেশ আদালত শহরের বায়ুদূষণ নিয়ন্ত্রণ, কঠিন বর্জ্য আইন মেনে চলা, ভূগর্ভস্থ জল তোলায় বিধিনিষেধ আরোপ করা-সহ একাধিক বিষয়ে নির্দেশ দিয়েছে পুরসভাকে। পুরকর্তাদের একটা বড় অংশের বক্তব্য, এমনিতেই আগের চেয়ে পরিবেশ আদালতে মামলার সংখ্যা বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। তাই অন্য দফতরের সঙ্গে পুর আইন দফতরের সমন্বয় তৈরি করতে এবং মামলার ভিত্তিতে আইন দফতরের কাছে যাতে ঠিক সময়ে রিপোর্ট পৌঁছয়, সে ব্যাপারে কোনও ফাঁক রাখতে চাইছেন না পুর কর্তৃপক্ষ। এক পদস্থ পুরকর্তা বলেন, ‘‘জাতীয় পরিবেশ আদালতের নির্দেশ কার্যকরের ক্ষেত্রে যে যে দফতর যুক্ত, তাদের প্রত্যেককে চলতি মাস থেকে এপ্রিলের মধ্যে নিজেদের অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট পুর আইন দফতরে জমা দিতে বলা হয়েছে।’’
পুর আইন দফতর সূত্রের খবর, পরিবেশ সংক্রান্ত ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারকে একাধিক বার ভর্ৎসনার পাশাপাশি আর্থিক জরিমানাও করা হয়েছে। কিন্তু কলকাতা পুরসভার ক্ষেত্রে এখনও তেমন পরিস্থিতি তৈরি হয়নি। পুরসভার জরিমানা যাতে না হয়, সে কারণেই আগাম সতর্কতামূলক এই সব পদক্ষেপ করা হয়েছে। এক পদস্থ পুরকর্তার কথায়, ‘‘দফতর থেকে ঠিক সময়ে রিপোর্ট পেলে আমাদেরও মামলার প্রস্তুতিতে সুবিধা হয়। সেই কাজটা যাতে আরও নিখুঁত ভাবে হয়, সে কারণেই পুর কর্তৃপক্ষের এই নির্দেশ। অনেক ক্ষেত্রে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা হচ্ছে।’’ যদিও পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্তের বক্তব্য, ‘‘আদিগঙ্গা, হট মিক্স প্লান্ট-সহ একাধিক বিষয়ে পরিবেশ আদালতের নির্দেশ কার্যকর করতে অনেক দেরি করছে কলকাতা পুরসভা। অনেক ক্ষেত্রে আবার কাজই শুরু হয়নি। শুধুই নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে।’’
রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের আধিকারিকদের একাংশ অবশ্য জানাচ্ছেন, গত কয়েক মাসে যে ভাবে পুরসভা-সহ বিভিন্ন দফতরের সঙ্গে সমন্বয় রেখে কাজ করা হয়েছে, তাতে শহরে দূষণের মাত্রা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। পর্ষদের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘বায়ুদূষণই হোক বা শব্দদূষণ, তা নিয়ন্ত্রণ এক দিনের বিষয় নয়। গত কয়েক মাসে এ সব ক্ষেত্রে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ এসেছে। ধারাবাহিক ভাবে এই কাজ চলতে থাকলে দূষণের মাত্রা আরও কমানো যাবে বলে আশা করছি।’’