মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ফাইল ছবি
মহালয়ার আর তিন সপ্তাহও বাকি নেই। অথচ, পুজোর আগে কলকাতা বা লাগোয়া এলাকার রাস্তাগুলির কী হাল, তা পরিষ্কার নয় সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে! পুজোর আগে সমস্ত বিভাগের প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার বিকেলে পুরসভা, সিইএসসি, কেএমডিএ, পূর্ত এবং সেচ দফতরকে নিয়ে বৈঠক বসেছিল। সেখানেই বিষয়টি সামনে আসতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (কেএমডিএ) সড়ক বিভাগের চিফ ইঞ্জিনিয়ার তখন বাইপাস সংলগ্ন বিভিন্ন রাস্তা ও কয়েকটি সেতুর কথা বলছিলেন। সেখানে কাজ শুরু হয়েছে এবং পুজোর আগে শেষ হয়ে যাবে বলেও আশ্বাস দিচ্ছিলেন। তখনই ক্ষুব্ধ মেয়র তাঁর হাত থেকে মাইক কার্যত কেড়ে নিয়ে বলেন, ‘‘ওই ভাবে ভাসা ভাসা কথা বলবেন না। এটা মন্ত্রী-মেয়রের বৈঠক করছেন। নির্দিষ্ট ভাবে কোন রাস্তার কী হাল, সেটা জানান।’’ কলকাতার পুজোর সঙ্গে জড়িত পরিকাঠামোগত বিষয়টি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা বোঝাতে মেয়র বলেন, ‘‘কেএমডিএ খেলার জায়গা হতে পারে, কিন্তু কলকাতা পুরসভা তা নয়।’’
তখনই মেয়রের কথার সূত্র ধরে ১২ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান তথা ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুশান্ত ঘোষ বলেন, ‘‘বাইপাসের ধারে আনন্দপুর রোড, নোনাডাঙা রোড, সার্ভিস রোড সারাতে ছ’মাস ধরে কেএমডিএ-কে বলে আসছি। একাধিক বার চিঠি দিলেও কোনও কাজ হয়নি।’’ তাতে কেএমডিএ-র চিফ ইঞ্জিনিয়ার তাঁকে আশ্বস্ত করেন। কলকাতা পুরসভার নিকাশি দফতরের ডিজি অভিযোগ করেন, সন্তোষপুর মেন রোড সারাতে গিয়ে পূর্ত দফতর পুরসভার সব ম্যানহোল বন্ধ করে দিয়েছে।
বন্দর এলাকায় বেহাল রাস্তার জন্য দুর্ঘটনায় কাউন্সিলর রামপিয়ারি রামের ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যুর কথাও বৈঠকে ওঠে। ন’নম্বর বরোর চেয়ারম্যান দেবলীনা বিশ্বাস বন্দরের পাঁচ-ছ’টি রাস্তার খারাপ অবস্থার কথা জানান। মেয়রও জানান, ওই চত্বরে নিকাশিতে জোর দিতে হবে, না-হলে বর্ষায় রাস্তার দ্রুত অবনতি হচ্ছে। কলকাতা বন্দরের আধিকারিকেরাও দ্রুত রাস্তা মেরামতির আশ্বাস দেন।
বৈঠকে মেয়র সেচ দফতরকেও বছরভর খাল সংস্কারের কাজ করতে বলেছেন। বিভিন্ন কাউন্সিলরেরা এ দিন তাঁদের এলাকায় খাল সংস্কারে ত্রুটির কথা তুলে ধরেন। কয়েকটি দফতরের চিফ ইঞ্জিনিয়ারেরা এ দিন বৈঠকে না-থাকাতেও মেয়র উষ্মা প্রকাশ করেছেন।