ভবঘুরেদের আধার কার্ড তৈরি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলবেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। — ফাইল চিত্র।
ভবঘুরেদের আধার কার্ড তৈরি নিয়ে প্রশ্ন উঠল কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে। শনিবার কলকাতা পুরসভার অধিবেশনে এই সংক্রান্ত বিষয়ে প্রশ্ন তোলেন ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রবীর মুখোপাধ্যায়।
সেই প্রশ্ন তোলার পরেই নতুন আলোচনা শুরু হয়েছে পুরসভার অন্দরমহলে। ভবঘুরেরা যেখানে থাকেন, সেটিকেই তাঁদের ঠিকানা হিসাবে আধার বা ভোটার কার্ড দেওয়া যায় কি না, সেই প্রশ্নটিই উস্কে দিয়েছেন প্রবীর। নয়ের দশকে কালীঘাটের আদিগঙ্গার তীরে কলকাতা পুরসভার উদ্যোগে একটি বহুতল তৈরি হয়। ২৪২ নম্বর কালীঘাট রোডের সেই বাড়িতে এখন গৃহহীনদের জন্য বাসস্থান তৈরি হয়েছে। সেখানে যাঁরা থাকেন, তাঁদের কয়েক জন আধার কার্ডের জন্য পুরসভার বাড়ির ঠিকানায় শংসাপত্র চেয়ে আবেদন করেছেন। প্রবীর বলেন, ‘‘এই ধরনের গৃহহীনদের কি আবাসস্থল হিসেবে নির্দিষ্ট করে শংসাপত্র দেওয়ার অধিকার আমাদের আছে?’’
এই প্রশ্নের জবাবে মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘‘যেহেতু ভবঘুরে, অনেক সময়ই দেখা যায় আবেদন করার পরে তাঁরা ছবি তোলার কাজটা করেন না। এটা নিয়ে আমরা ভাবনাচিন্তা করছি। আমাদের বিভিন্ন শেল্টারে যাঁরা রয়েছেন, তাঁদের জন্য নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে কথা বলব। বিশেষ শিবিরের আয়োজন করে কাজগুলো করা যায় কিনা দেখতে হবে।’’
মেয়রের এমন মন্তব্যের পরে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন ওঠে, স্বীকৃতি পরিচয়পত্র পেতে যে প্রাথমিক শর্তগুলি থাকে, তাতে স্থায়ী ঠিকানা থাকা আবশ্যিক। তাই ভবঘুরেদের জন্য নতুন করে উদ্যোগ নেওয়া কি সম্ভব? জবাবে মেয়র বলেন, ‘‘নির্বাচন কমিশন এ বার নিয়ম করেছে, যদি কারও কোনও ঠিকানা না থাকে, তাহলেও তিনি দেশের নাগরিক বলে গণ্য হবেন এবং ভোট দিতে পারবেন।’’
মেয়র জানিয়েছেন, ‘‘এই নিয়মেই ভবঘুরেদের আধার কিংবা ভোটার কার্ড করার ক্ষেত্রে পুরসভার শেল্টারের ঠিকানা দেওয়া হবে। কেউ ফুটপাথে থাকলে, কাছাকাছি কোনও বাড়ির নম্বর উল্লেখ করে দেওয়া হবে।’’ তবে এ ক্ষেত্রে যে হেতু কলকাতা পুরসভার তৈরি বাড়িতেই ওই ভবঘুরেদের বাস, তাই প্রশ্ন উঠছে, সরকারি কিংবা পুরসভার কোনও সম্পত্তিতে কি ভবঘুরেদের ঠিকানার শংসাপত্র দেওয়া যায়?