প্রতীকী চিত্র।
করোনার ঊর্ধ্বমুখী প্রকোপ ঠেকাতে কলকাতা পুরসভা ইতিমধ্যে সেফ হোম চালু করলেও সেখানে রোগী ভর্তি হচ্ছেন কম। সূত্রের খবর, অতিমারির প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে যে হারে সংক্রমিতেরা সেফ হোমে ভর্তি হচ্ছিলেন, তৃতীয় ঢেউয়ের ক্ষেত্রে এখনও পর্যন্ত সেই ছবিটা না-থাকায় কিছুটা হলেও স্বস্তিতে পুর প্রশাসন।
উল্লেখ্য, কলকাতা পুরসভা ইতিমধ্যেই ইএম বাইপাস, গীতাঞ্জলি স্টেডিয়াম এবং উত্তর কলকাতার হরেকৃষ্ণ শেঠ লেনে একটি করে সেফ হোম চালু করেছে। শুক্রবার পাওয়া পুরসভার তথ্য অনুযায়ী, ইএম বাইপাসের সেফ হোমে ২০০টি শয্যার মধ্যে ৮০টি শয্যায় রোগী ভর্তি আছেন। গীতাঞ্জলি স্টেডিয়ামের সেফ হোমে ভর্তি রয়েছেন মাত্র ১৬ জন। হরেকৃষ্ণ শেঠ লেনের সেফ হোমটি এখনও পর্যন্ত ফাঁকা রয়েছে।
মেয়র ফিরহাদ হাকিম এ দিন বলেন, ‘‘তিনটি সেফ হোম চালু করলেও তৃতীয় ঢেউয়ে রোগী ভর্তির সংখ্যা অনেক কম। যার জন্য এই মুর্হূতে নতুন করে সেফ হোম চালু করার পরিকল্পনা আমাদের নেই। তবে আপৎকালীন ভিত্তিতে আমরা সব সেফ হোমের পরিকাঠামো প্রস্তুত রেখেছি।’’
বক্ষরোগ চিকিৎসক ধীমান গঙ্গোপাধ্যায়ের পর্যবেক্ষণ, ‘‘এ বার করোনার কামড় যে কম হবে, তা প্রত্যাশিতই ছিল। কারণ, বেশির ভাগ মানুষ প্রতিষেধক নিয়েছেন। যার জন্য তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তদের শারীরিক অবস্থার বাড়াবাড়ি হচ্ছে না। তবে সাধারণ মানুষকে করোনা নিয়েই এখন বাঁচতে হবে। তার জন্য মাস্ক পরে বেরোতে হবে, এড়িয়ে চলতে হবে ভিড়।’’ আর এক বক্ষরোগ চিকিৎসক অনির্বাণ নিয়োগী বলেন, ‘‘তৃতীয় ঢেউয়ে আক্রান্তের সংখ্যা লাফিয়ে বাড়লেও এখনও পর্যন্ত আতঙ্কিত হওয়ার কারণ ঘটেনি। গবেষণায় দেখা যাচ্ছে, আক্রান্তদের অধিকাংশই ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টের শিকার। সেটির সংক্রমণ-ক্ষমতা দ্রুত হলেও মারণক্ষমতা তত নয়। যার জন্য তৃতীয় ঢেউয়ে সংক্রমিতদের অক্সিজেন দেওয়ার প্রয়োজন প্রায় হচ্ছেই না। একমাত্র যাঁদের অন্য গুরুতর অসুখ (কোমর্বিডিটি) রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হচ্ছে।’’
পুরসভা সূত্রের খবর, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে সেফ হোমগুলির শয্যা পূর্ণ ছিল। পুর স্বাস্থ্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘দ্বিতীয় ঢেউয়ে সেফ হোমগুলি ভর্তি তো ছিলই, অনেককে অক্সিজেনও দিতে হয়েছিল। এ বার সেফ হোমে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যা অনেক কম। আরও আশার কথা, তাঁদের বেশির ভাগই সুস্থ রয়েছেন।’’
অতিমারির দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ে কলকাতা পুরসভার প্রায় দশটি সেফ হোম চালু ছিল। এ ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি সংস্থার তরফে সেফ হোম চালু হয়েছিল। সংক্রমিতদের আইসোলেশনে রাখার জন্য একাধিক কাউন্সিলর এবং বিধায়কও নিজ উদ্যোগে সেফ হোম চালু করেছিলেন।
কলকাতা পুরসভার এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘তৃতীয় ঢেউয়ে এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে না গেলেও আমরা সমস্ত সেফ হোমগুলিতে পরিকাঠামো তৈরি রেখেছি।’’