—প্রতীকী ছবি।
ইঁদুরের কামড়ের আতঙ্কে বেশির ভাগ সময়ে চেয়ারে পা তুলে বসতে হচ্ছে। এ ভাবে বসতে বসতে এ বার শুরু হয়েছে পায়ের অসুখ। এমনই অবস্থা কলকাতা পুরসভার ট্রেজারি বিভাগের কর্মীদের। সম্প্রতি ওই বিভাগের ম্যানেজার সুস্মিতা কুণ্ডুর ঘর থেকে একটি সাপ বেরোনোর পরে আতঙ্ক আরও বেড়েছে তাঁর এবং বিভাগের অন্য কর্মীদের। কর্মীরা জানাচ্ছেন, দিনভর ধেড়ে ইঁদুরের দল অবাধে ঘুরে বেড়ায়। ফলে, তাঁরা চেয়ারে পা তুলে বসে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন।
সম্প্রতি ট্রেজারি বিভাগে ছ’ফুট একটি দাঁড়াশ সাপ বেরোনোর পর থেকেই কর্মীদের মুখে আলোচনার বিষয় সাপআর ইঁদুর। বিভাগের এক কর্মী তো বলেই দিলেন, ‘‘ইঁদুর থাকলে সাপ তো থাকবেই।আর এত বড় সাপটার হয়তো ছানাপোনাও রয়েছে!’’ আর এক মহিলা কর্মীর কথায়, ‘‘ইঁদুরের ভয়ে চেয়ারে পা তুলে বসে থাকি। পায়ে ব্যথা শুরু হয়েছে। ডাক্তার পা তুলে বসতে বারণ করেছেন। কিন্তু আমরা নিরুপায়।’’ মাসকয়েক আগেই মেয়র ফিরহাদ হাকিম জানিয়েছিলেন, সুরাত শহরে একটা সময়ে ইঁদুরের দৌরাত্ম্যে প্লেগ ছড়িয়েছিল। এখন থেকে সতর্ক না হলে ভবিষ্যতে মহামারি হতে পারে কলকাতাতেও।
সম্প্রতি পুরসভার যুগ্ম কমিশনার (শিক্ষা) জ্যোতির্ময় তাঁতির অফিসঘরের ফল্স সিলিং থেকে একটি ভামের পচাগলা দেহ মেলে। পুরভবনের তেতলায় মেয়রের অফিসের উপরে যুগ্ম কমিশনারের ঘরের আশপাশে দুর্গন্ধ পেয়ে সবাই ভেবেছিলেন, ইঁদুর মরেছে। কিন্তু কয়েক দিন পরে ফল্স সিলিং ভেঙে ভামের দেহ মেলে! সাপ, ইঁদুর, ভাম। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পুরসভায় প্রাণীকুলের আবির্ভাব দেখে এক শীর্ষ কর্তা মজা করে বলছিলেন, ‘‘এখানে আবার ভূত নেই তো!’’
পুরভবনে ইঁদুরের তাণ্ডব দীর্ঘদিনের। এ বার সাপ মেলায় পুর সচিবালয় দফতর থেকে প্রতিটি অফিসঘর ভাল করেসাফাইয়ের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ দিকে, পুর স্বাস্থ্য দফতরকে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জানিয়েছে, ইঁদুর মারা চলবে না। ইঁদুর না মেরে তাকে জব্দ করতে মাস চারেক আগেপুরসভার আলো বিভাগ আপাতত চার জায়গায় বিশেষ যন্ত্র বসিয়েছে। মেয়রের ঘর, কনফারেন্স রুম, নিউ মার্কেটে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা দফতরের চারতলায় তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের প্রতিটি জায়গায় কন্ট্রোল ইউনিট এবং একাধিকঅ্যান্টেনা রাখা আছে। কন্ট্রোল ইউনিট থেকে শব্দতরঙ্গ পাঠিয়ে ইঁদুর তাড়ানো হচ্ছে।