ফাইল ছবি।
কলকাতা পুরভোটে সব বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা ব্যবহার করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। এখন আদালতের ওই নির্দেশ মানতেই নাজেহাল অবস্থা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। আগামী রবিবার ভোট গ্রহণ রয়েছে কলকাতায়। তার আগের দিন শনিবার বিকেল ৫টার মধ্যে সব বুথে সিসিটিভি লাগানোর কাজ সম্পন্ন করতে হবে কমিশনকে। ফলে এই অল্প সময়ের মধ্যে পুরো কাজটি করতে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে তারা।
কলকাতার ভোটে প্রাথমিক ভাবে কমিশন ঠিক করেছিল ২৫ শতাংশ বুথে তারা সিসিটিভি ক্যামেরা লাগাবে। সেই মতো চলছিল প্রস্তুতি। কিন্তু মঙ্গলবার হাই কোর্টের নির্দেশ আসার পরই বদলে গেল পরিকল্পনা। আদালতের নির্দেশ, ১০০ শতাংশ বুথেই লাগাতে হবে সিসিটিভি। ফলে তৎপরতার সঙ্গে কাজ শুরু করে কমিশন। কমিশন সূত্রে খবর, সব বুথে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মিউনিসিপ্যাল রিটার্নিং অফিসার তথা দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসককে। অর্থাৎ বলা ভাল, তিনি এবং তাঁর দফতরই এই কাজটি করার দায়িত্ব পেয়েছেন। কমিশন সূত্রে খবর, কলকাতার ১৪৪টি ওয়ার্ডের প্রতিটিতে একটি করে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হবে। ফলে এখন রিটার্নিং অফিসারকে জোগাড় করতে হবে দেড়শোর বেশি সিসিটিভি। আবার কোথাও তা মিললেও প্রযুক্তিগত দিকটিও ভাবাচ্ছে কমিশনকে। ফলে ভোটের তিন দিনের মাথায় যা এক প্রকার চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে তাদের কাছে।
গত বিধানসভা ভোটেও বুথে সিসিটিভি লাগিয়েছিল কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন। তবে তা ৫০ শতাংশ বুথে ছিল। এবং তার জন্য দীর্ঘ দিনের পরিকল্পনা ছিল কমিশনের। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পরিস্থিতি ভিন্ন। আর তাই-ই মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জেলাশাসকের দফতর সূত্রে খবর, বুথে সিসিটিভি লাগানোর জন্য বাইরের কোনও সংস্থাকে বেছে নেওয়া হয়। তারাই ভোটের আগের দিন বুথে ক্যামেরা বসানোর কাজ করে। কিন্তু এখন সে রকম সংস্থাকে পাওয়া যাচ্ছে না। আবার কাউকে পাওয়া গেলেও তার কাছে অত সংখ্যক সিসিটিভি নেই। এ নিয়ে কমিশনের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘শুধু তো সিসিটিভি বসালেই হবে না। প্রয়োজন অনুযায়ী তা নিয়ন্ত্রণও করতে হবে। ভোটের ফলাফলের পরও যার রেকর্ড রাখা হয়। ফলে তার জন্য দরকার কোনও পেশাদারি সংস্থা, যারা ওই কাজটি করবে। কিন্তু হাতে গোনা এই কয়েক দিনের মধ্যে উপযুক্ত সংস্থা পেতে সমস্যা হচ্ছে।’’ সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এর জন্য রিটার্নিং অফিসার জেলার কয়েকটি সংস্থাকেও কলকাতায় এনে কাজ করাবে। যারা গত বিধানসভা ভোটে বুথে সিসিটিভি বসানোর কাজ করেছিল।
আবার সিসিটিভি মিললেও, তা কাজ করানোর জন্য বিদ্যুৎ দরকার। ফলে সব বুথে সিসিটিভি বসাতে গেলে সব জায়গায় বিদ্যুৎ রয়েছে কি না তা-ও জানা দরকার। কোনও বুথে বিদ্যুৎ না থাকলে, সেখানে পর্যাপ্ত বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে ক্যামেরা বসাতে হবে কমিশনকে। ফলে ১৪৪টি ওয়ার্ডের সব বুথে ওই সব তথ্যও খতিয়ে দেখছে তারা। অন্য দিকে, শুধু বুথ নয়, হাই কোর্টের নির্দেশ মোতাবেক স্ট্রংরুম এবং গণনাকেন্দ্রেও থাকবে সিসিটিভি নজরদারি। ফলে একেবারে শেষ মুহূর্তে এসে এই সব পরিকল্পনাই গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কমিশন।