ফাইল চিত্র।
সাড়ে ছ’বছর আগে, কলকাতায় গত পুরভোটের দিন দুষ্কৃতীদের গুলিতে জখম হন গিরিশ পার্ক থানার অফিসার জগন্নাথ মণ্ডল। অভিযোগ ছিল, পুলিশি গড়িমসির সুযোগেই একটি রাজনৈতিক দলের আশ্রিত ওই দুষ্কৃতীরা গুলি চালায়।
ফের সামনে পুরভোট। এর মধ্যে গত সপ্তাহে রিজেন্ট পার্কে দুই দুষ্কৃতী দলের গুলির লড়াইয়ে জখম হয়েছেন দু’জন। তার পরে বন্দুকের বাট দিয়ে মেরে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের হয়েছে দক্ষিণ বন্দর থানায়। ভোটের আগে শহরে দুষ্কৃতীদের এই দৌরাত্ম্যে স্বস্তিতে নেই লালবাজার। তাই এ বার ভোটের আগে দুষ্কৃতীদের খোঁজখবর নেওয়ার সঙ্গে অস্ত্রের জোগান বন্ধের দিকে নজর দিতেও গোয়েন্দাদের নির্দেশ দিয়েছে লালবাজার।
দক্ষিণ শহরতলির একটি থানার আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, প্রচারে গোলমালের চেয়েও দুষ্কৃতীদের হাতে অস্ত্রের জোগান বেশি থাকাটা চিন্তায় রেখেছে তাঁদের। পুলিশের একাংশের মতে, পুজোর আগে শহরে তিনটি গুলি চালানোর ঘটনা ঘটে। পরে পুলিশ সতর্ক হলেও ফের একই ঘটনা ঘটেছে। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, এলাকার দখলদারি ও সিন্ডিকেট-রাজ ছাড়াও এর পিছনে রয়েছে রাজনৈতিক দলের মদত। তাই ভোটের দিন গিরিশ পার্কের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে সচেষ্ট পুলিশ।
পুলিশ সূত্রের খবর, গত সপ্তাহে পুরভোট নিয়ে থানার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে কলকাতার পুলিশ কমিশনার সৌমেন মিত্র দাগি অপরাধীদের ধরতে বাহিনীকে সক্রিয় হতে বলেছেন। পুরভোটের আগে ওই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে থাকা গ্রেফতারি পরোয়ানা দ্রুত কার্যকর করতে বলেছেন তিনি। তাদের গ্রেফতার এবং নজরবন্দি করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এক পুলিশকর্তার কথায়, ‘‘শহরের বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে ওই দাগি দুষ্কৃতীরাই জড়িয়ে থাকে। তাই তাদের বিরুদ্ধে আগে থেকে ব্যবস্থা নিলেই শান্তিতে ভোট হতে পারবে।’’
যদিও পুলিশের একাংশের মতে, বর্তমানে সব দুষ্কৃতীই রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থাকায় রাজনৈতিক দাদারা পুলিশের সঙ্গে এ ব্যাপারে কতটা সহযোগিতা করবেন, তা নিয়ে প্রশ্ন থাকছেই। নির্বাচন কমিশন সূত্রের খবর, এ বারের পুরভোটে থাকবেন কলকাতা পুলিশের ২৩ হাজার ও রাজ্য পুলিশের পাঁচ হাজার সদস্য। ভোটগ্রহণ কেন্দ্রে মোতায়েন থাকবেন অন্তত দু’জন সশস্ত্র পুলিশ। ভোটের জন্য ২৮৬টি সেক্টরে থাকছে সশস্ত্র পুলিশ, ৭২টি আরটি মোবাইল। এ ছাড়া, বাহিনীর ৩৫টি রেডিয়ো ফ্লাইং স্কোয়াড এবং ৭৮টি কুইক রেসপন্স টিমও থাকছে।