সহায়: চাঁদনি চকের বাসিন্দা এক প্রতিবন্ধী ভোটারকে পুরভবনে ভোট দিতে নিয়ে এসেছেন তাঁর মেয়ে। রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
খাতায়-কলমে ছুটির দিন হলেও ছুটি ছিল না ওঁদের। রবিবার পুরভোট উপলক্ষে কর্মব্যস্ততার মধ্যেই কাটালেন পুরসভার কর্মীদের একাংশ।
কলকাতা পুরসভার সদর দফতরে পাম্প চালানোর কাজ করেন চাঁদনি চক এলাকার বাসিন্দা সঞ্জীব ভক্ত। রবিবার তাঁর ছুটির দিন হলেও এ দিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ডিউটিতে ছিলেন তিনি। সঞ্জীবের মতোই ব্যস্ততায় কেটেছে পুরসভার কেয়ারটেকার ও তাঁর দলবলের। এ দিন পুরভোট উপলক্ষে নিরাপত্তার কথা ভেবে পুরভবনে কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি পুরসভার নিজস্ব নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যাও বাড়ানো হয়েছিল। সারা শহরের বিভিন্ন বুথে কোভিড-বিধি লঙ্ঘন সংক্রান্ত অভিযোগ শোনার জন্য পুর স্বাস্থ্য দফতরে খোলা হয়েছিল কন্ট্রোল রুম।
৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের ন’টি বুথ খোলা হয়েছিল কলকাতা পুরসভার সদর দফতরে। ভোটার, পুলিশকর্মী ও ভোটকর্মীদের জন্য যাবতীয় ব্যবস্থা তো ছিলই। পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ অনুসারে ১৪৪টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন বুথে স্বাস্থ্যবিধি পালন সম্পর্কিত অভিযোগ শুনতে
পুরভবনে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিকের অফিসে দিনভর চালু ছিল কন্ট্রোল রুম। পুর স্বাস্থ্য বিভাগের এক আধিকারিকের কথায়, ‘‘ছোটখাটো দু’-একটি অভিযোগ ছাড়া কন্ট্রোল রুমে বড়সড় অভিযোগ বিশেষ আসেনি।’’ এ দিন পুরসভার মূল ফটক বন্ধ থাকলেও ভোটদানের জন্য অন্য দু’টি গেট খোলা ছিল।
পুরভবনে আসা ভোটারেরা যাতে কোভিড-বিধি মেনে চলেন, তা নিশ্চিত করতে আইসিডিএস কর্মীরা সচেষ্ট ছিলেন সকাল থেকেই। মাস্ক না পরা কাউকেই ভিতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। জনাকয়েক মাস্কহীন ভোটারের হাতে মাস্ক তুলে দেন তাঁরা। ভোট দেওয়ার আগে প্রত্যেকের
হাতে দেওয়া হয় জীবাণুনাশক ও প্লাস্টিকের গ্লাভস। পুরসভা সূত্রের খবর, এ দিন ভোটদানের শুরুতেই ইভিএম গন্ডগোল করায় পুরভবনের ১২ নম্বর বুথে প্রায় ৪৫ মিনিট এবং ১৩ নম্বর বুথে প্রায় ১৫ মিনিট ভোটগ্রহণ বন্ধ ছিল।
এই ধরনের কিছু সমস্যা বাদ দিলে মোটামুটি নির্বিঘ্নেই কেটেছে পুরভবনের ভোটগ্রহণ। এ দিন ওই এলাকায় ভোটের জন্য নিউ মার্কেট বন্ধ থাকায় ক্রেতাদের অনেককেই হতাশ হয়ে ফিরে যেতে হয়। বন্ধুকে নিয়ে নিউ মার্কেটে কেনাকাটা
করতে এসেছিলেন ডানকুনির বাসিন্দা প্রলয় সমাদ্দার। বাজার বন্ধ দেখে ফিরে যান তিনি। হকারদের অনেককে আবার দেখা যায় ক্রেতার অপেক্ষায় বসে থাকতে।
তালতলার বাসিন্দা, পেশায় হকার মহম্মদ আমির নিউ মার্কেটের ফুটপাতে ব্যাগের পসরা সাজিয়ে বসে ছিলেন। আমিরের কথায়, ‘‘বছর শেষের একটি দিন বিক্রি বন্ধ থাকা মানে আমাদের বড় ক্ষতি। ছুটির
দিনে নিউ মার্কেটে প্রচুর মানুষ ভিড় করেন। ভোটের জন্য কিছুটা লোকসান তো হলই।’’